দেশ বিদেশ
চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দির মৃত্যু
ওসি-জেল সুপারের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তের নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
৪ মার্চ ২০২৪, সোমবারচট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রুবেল নামে এক বন্দির ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর অভিযোগে কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন এবং বোয়ালখালী থানার ওসি আছহাব উদ্দিনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার দরখাস্তের ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছা পিবিআইকে এ নির্দেশ দেন। কারাগারে মৃত রুবেল দে’র বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামে। গ্রেপ্তারের পর রুবেলকে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ এনে তার স্ত্রী পূরবী পালিত গত ২০শে ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলার আবেদন দাখিল করেছিলেন। এতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, বোয়ালখালী থানার ওসিসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। দায়রা জজ আদালতের কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত জানান, পিবিআইকে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে নির্যাতনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা তদন্তপূর্বক নিরূপণের আদেশ দিয়েছেন। মামলার আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর গতকাল অভিযোগকারীর উপস্থিতিতে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। আগামী ২৭শে মার্চ প্রিলিমিনারি এনকোয়ারি রিপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে দাখিলের জন্য পিবিআইকে আদেশ দিয়েছেন। এ প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট আব্দুর রশীদ বলেন, পুলিশ ও কারাগারে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে মামলার দরখাস্তটির ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আবেদনে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন, বোয়ালখালী থানার ওসি মো. আছহাব উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, এসআই এসএম আবু মুছা, এএসআই মাঈনুদ্দিন, এএসআই সাইফুল ইসলাম, কনস্টেবল কামাল ও আসাদুল্লাহ, এসআই রিযাউল জব্বার, থানার ডিউটি অফিসার, জেলার এমরান হোসেন মিয়া, ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া, আখেরুল ইসলাম, সুমাইয়া খাতুন ও ইব্রাহীম এবং ওয়ার্ড মাস্টারকে সেখানে আসামি করা হয়। মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ২৭শে জানুয়ারি বিকালে নিজ বাড়ি থেকে রুবেল দেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মদ উদ্ধারের ‘ভুয়া মামলা সাজিয়ে’ পুলিশ দুই লাখ টাকা ‘ঘুষ’ দাবি করে। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। সে সময় তাকে ‘অসুস্থ অবস্থায়’ প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২রা ফেব্রুয়ারি তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা কারাগারে দেখা করতে গেলে তাকে ‘মুমূর্ষু’ অবস্থায় হুইল চেয়ারে করে নিয়ে আসা হয়। তার ডান চোখের ভ্রু’র ওপর কাটা জখম দেখা গিয়েছিল বলে বাদীর ভাষ্য। পরে ৫ই ফেব্রুয়ারি কারাগারে রুবেলের মৃত্যুর খবর জানানো হয় তার স্ত্রীকে।