অনলাইন
লন্ডনে সরকারের নজরদারিতে বাঙালি মেয়র
আরিফ মাহফুজ , লন্ডন
(৬ মাস আগে) ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, রবিবার, ৬:০৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:২২ অপরাহ্ন
লন্ডনের অন্যতম টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র ব্রিটিশ সরকারের নজরদারির আওতায় এসেছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র লুৎফুর রহমান কিভাবে কাউন্সিল পরিচালনা করছেন তা নিয়ে তদন্ত করতে সরকারের দফতর থেকে পরিদর্শক টিম পাঠানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি নিউজ।
সরকারি তদন্তকারী টিম কাউন্সিলের অর্থ কীভাবে ব্যয় করা হয় ও সিনিয়র পদবীগুলোতে চাকুরীর নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। উক্ত তদন্ত পরিদর্শনের দায়িত্ব লন্ডন বারার প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কিম ব্রমলি-ডেরিকে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারের জন্য প্রত্যাশিত মানগুলি কার্যকর এবং সুবিধাজনক ক্ষেত্রে সমুন্নত হচ্ছে কিনা সে জন্য পরিদর্শকদের মে মাসের শেষের দিকে রিপোর্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের জন্য সম্পদের ব্যবহার এবং রিটার্নিং অফিসারের স্বাধীনতা রক্ষণাবেক্ষণ এবং টাওয়ার হ্যামলেটস হোমস এবং বাড়িতে অবসর পরিষেবার মতো পরিষেবাগুলি পরিদর্শনের আওতায় আনার জন্য পরিদর্শকদের বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মেয়র লুৎফুর বলেছেন, তদন্তে তিনি হতাশ হলেও সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।পাশাপাশি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল তাদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। সরকারের ডিপার্টমেন্ট ফর লেভেলিং আপ, হাউজিং এন্ড কমিউনিটিজ এর পক্ষ থেকে বেস্ট ভেল্যু ইন্সপেকশন এর উদ্যোগ নেয়ার প্রেক্ষিতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমাদের বর্তমান প্রশাসনের অধীনে কাউন্সিল হিসাবে আমরা যে অগ্রগতি করেছি তা দেখানোর জন্য আমরা অংশীদারিত্বে কাজ করতে অপেক্ষায় আছি।
এই সিদ্ধান্তে আমরা যদিও বিস্মিত হয়েছি তবে এটি অবশ্যই সরকারের বিশেষাধিকার এবং আমরা আমাদের কাজে আত্মবিশ্বাসী এবং সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব।
লোকাল গভর্নমেন্ট এসোসিয়শন (এলজিএ) পিয়ার রিভিউ এবং ইনভেস্টরস ইন পিপল দ্বারা সাম্প্রতিক স্বাধীন পর্যালোচনায় আমাদের কাজগুলো প্রশংসিত হয়েছে। যদিও উভয় পর্যালোচনা ইতিবাচক ছিল, তদুপরি আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের কাউন্সিলের মধ্যকার পরিচালনা পদ্ধতির আরও উন্নতি নিশ্চিত করতে তাদের সুপারিশগুলি বাস্তবায়নে কাজ করছি।
“সাম্প্রতিক মাসগুলিতে, কাউন্সিল ২০১৬ সাল থেকে বছরের অনিষ্পন্ন থাকা অডিট (নিরীক্ষা), এসিওরেন্স (নিশ্চয়তা) এবং গভর্ন্যন্স (শাসন) এর ঐতিহাসিক আর্থিক সমস্যাগুলি সমাধানের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
আর্থিক বছর ২০১৬/১৭, ১৭/১৮, ১৮/১৯ এবং ১৯/২০ এর সকল হিসাব স্বাধীন নিরীক্ষক দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ অবশিষ্ট খসড়া অ্যাকাউন্টগুলির জন্য পাবলিক ইন্সপেকশনের একটি সময়কাল এখন চলছে এবং ২০২০/২১, ২১/ ২২ এবং ২২/২৩ অর্থবছরের হিসাবগুলো মার্চ মাসে অডিট কমিটির কাছে যাওয়ার কথা রয়েছে।
“আমরা গর্বিত যে গত ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত এলজিএ পিয়ার রিভিউ রিপোর্টে কাউন্সিলের প্রশংসা করা হয়েছে। বলা হয়েছে আমাদের ‘ভাল আর্থিক ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘সংগঠনের ভবিষ্যত স্থায়িত্ব সুরক্ষিত করার জন্য শক্তিশালী ভিত্তি’ রয়েছে।
“পিয়ার রিভিউ কাউন্সিলকে ‘বাসিন্দাদের এবং কমিউনিটির চাহিদা সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা রাখে—এমন একটি সংস্থা’ হিসাবেও প্রশংসা করেছে, এবং একই সাথে এটাও বিবেচনায় নিয়েছে যে কাউন্সিল গত আঠারো মাসে, একজন নতুন মেয়র এবং নতুন প্রধান নির্বাহীর সাথে ও নতুন কাউন্সিল অফিসে স্থানান্তরিত হওয়ার পরিক্রমায় ‘এখনও পরিবর্তন এবং চ্যালেঞ্জগুলির সাথে সমন্বয়’ করে চলেছে।
“এই সব এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন টাওয়ার হ্যামলেটস আরও বেশি সংখ্যক মানুষের জীবন উন্নত করার জন্য উদ্ভাবনী ব্যবস্থা প্রদান করেছে, যেমন সারা দেশের মধ্যে প্রথম ও একমাত্র কাউন্সিল কতৃপক্ষ হিসাবে বারার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য বিনামূল্যে স্কুলের খাবার সরবরাহ। আমাদের এই উদ্যোগ মাত্র গত মাসেই একটি ক্রস পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ দ্বারা বেস্ট ফুড এওয়ার্ড পেয়ে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
উল্লেখ্য ২০১৫ সালে লুৎফুর রহমান নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র পদ থেকে অপসারিত হন ও পরবর্তীতে আদালতে তার উপর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সর্বশেষ দুই বছর আগে কাউন্সিল নির্বাচনে তিনি আবারো মেয়র নির্বাচিত হয়ে বর্তমানে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
No matter what; his root is in Bangladesh.