বিশ্বজমিন
ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সংহতি প্রকাশ করলেন বিশ্বনেতারা
মানবজমিন ডেস্ক
(১১ মাস আগে) ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ৭:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:১২ অপরাহ্ন

ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে সংহতি প্রকাশ করতে রাজধানী কিয়েভে উপস্থিত হয়েছেন বিশ্ব নেতারা। তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বক্তব্যে তার দেশকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, ইউক্রেনের স্বপ্নকে ধ্বংস করতে পারবে না রাশিয়া। কঠিন এক সময়ে এ কথা বললেন তিনি। বিশ্বনেতারা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হোস্তোমেল বিমানবন্দরে। এর মধ্যে ছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্দার ডি ক্রু প্রমুখ। জর্জিও মেলোনি হোস্তোমেল বিমানবন্দরকে মস্কোর ব্যর্থতার প্রতীক বলে উল্লেখ করেন। বলেন এটা হলো ইউক্রেনের জনতার গর্ব। অল্প কিছু সাহসী বীরের জন্য ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। দুই বছর আগে ২৪ শে ফেব্রুয়ারি তাদের কেউ কেউ এখানে ছিলেন।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিশ্চিত ছিলেন যে তিনি খুব সহজেই কৌশলগত টার্গেট, এই বিমানবন্দরের মতো জায়গা দখল করে নিতে পারবেন। রাশিয়ার সেনারা হোস্তোমেল বিমানবন্দর দ্রুত তাদের দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখানে দাঁড়িয়ে আপনি দেখতে পাবেন পুতিন ভুল ছিলেন। ইউক্রেনের সেনাদের প্রশংসা করেন উরসুলা ভন ডার লিয়েন। বলেন, কিয়েভ শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছে। আপনাদের সাহস পুতিনের পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে। আপনারা পালিয়ে যাননি। ইউক্রেনের অল্প কিছু বীরের কন্টিনজেন্ট আগ্রাসীদের ফিরিয়ে দিয়েছে। তাদের শেষ বুলেট এবং নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত লড়াই করেছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে আপনারা বন্ধ করেছেন। আপনারা আপনাদের দেশকে রক্ষা করেছেন। পুরো ইউরোপকে রক্ষা করেছেন আপনারা। গত দুই বছরে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, যে পরিমাণ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, যে পরিমাণ মানুষ মানসিক ক্ষতে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বিষয়ে স্বীকৃতি দেন আলোকজান্দার ডি ক্রু।
ইউক্রেনের যেসব ভূখণ্ড রাশিয়া দখলে নিয়েছে তা উদ্ধারে ব্যর্থ আক্রমণ চালিয়েছে তারা গত বছর। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় আভদিভকা শহর থেকে ইউক্রেন সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছে। গত বছর বাখমুত পতনের পর এটাই রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় বিজয়। অন্যদিকে পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো থেকে যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আর্থিক ও সামরিক সমর্থন নিশ্চিতে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন জেলেনস্কি। এই যুদ্ধে ইউক্রেনের জনগণের দৃঢ়তা ও শক্তির প্রশংসা করেছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। এ বিষয়ে বাকিংহাম রাজপ্রাসাদ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৫০০ নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা দিয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে ইউক্রেনে আগ্রাসন ও বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুতে। নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো রাশিয়ার প্রধান কার্ড পেমেন্ট সিস্টেম, আর্থিক ও সামরিক প্রতিষ্ঠান, নাভালনিকে জেলে রাখার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। রাশিয়া সামরিক প্রযুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। আর্কটিক সার্কেল জেলে আকস্মিকভাবে নাভালনি মারা যাওয়ার ফলে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। তার মৃত্যুর পর সান ফ্রান্সিসকোতে বৃহস্পতিবার তার স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, নাভালনির মৃত্যুর জন্য দায়ী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরসেনিই ইয়াতসেনিউক বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিজয় হবে পুরো পশ্চিমা সভ্যতাকে রক্ষা করা। বিশ্বকে মুক্ত করা।