দেশ বিদেশ
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় বাড়িঘরে ফাটল প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে পুনরায় তদন্ত কমিটি গঠন
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড এলাকায় অতিরিক্ত কাঁপুনিতে বাড়িঘরে ফাটলের ঘটনায় অনুসন্ধান ও করণীয় নির্ধারণে পুনরায় ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রোববার বিকালে বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড এলাকা পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। পরে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে পুনরায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এর আগে গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি এ ভূমিকম্পন প্রাকৃতিক ভূমিকম্প বলে রিপোর্ট প্রদান করে। নতুন তদন্ত কমিটিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন)কে আহ্বায়ক ও সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উন্নয়ন-৩ অধিশাখার যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদমর্যাদার প্রতিনিধি, বাপেক্স ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের (ভূতত্ত্ব) পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল কামাল, শেভরন বাংলাদেশ লিমিটেডের একজন প্রতিনিধি। নতুন এ কমিটি গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করাসহ সরজমিন রিপোর্ট আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব বরাবরে জমা দিবে বলে জানা গেছে।
গত ১-৩ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড এলাকার দিঘলবাগ ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে শক্তিশালী ভূকম্পন হয়। আতঙ্কে দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন গ্রামবাসী। এতে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রােেমর ৫ শতাধিক ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। ঘটনার পর রাত ১০টার দিকে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র অবরোধ করেন স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের লোকজন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে সংসদ সদ্য পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়। পরে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত (৮ই ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এতে ‘বিবিয়ানা এলাকায় যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা প্রাকৃতিক ভূমিকম্প, ভূমিকম্পর বিষয়ে গ্যাসফিল্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদন দেয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে তারা দাবি করেন, নতুন কূপ খননকালে ভুল প্রক্রিয়ায় খনন করায় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এতে বাড়িঘর ফেটে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতিপূরণ এড়াতে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণ না পেলে তারা কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।