ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

বড়লেখায় ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৭ জুন ২০২২, সোমবার
mzamin

হাকালুকি হাওর পাড়ের পশ্চিম গগড়া গ্রামের বাসিন্দা অপর্ণা রানী দাসের বাড়ির আঙিনায় আর রান্নাঘরে বন্যার পানি উঠেছে। পানি মাড়িয়ে তিনি বাড়ির কাজকর্ম করেছেন। এখন তার পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে ঘা হতে শুরু করেছে। একই গ্রামের ভ্যানচালক অনন্ত দাসের ঘরে ও বাড়ির আশপাশে বন্যার পানি উঠেছে। বন্যার পানি মাড়িয়ে তিনি চলাচল করছেন। তার পায়ে গুটি বসন্তের মতো রোগ হয়েছে। এই দাগ কীভাবে হলো তার কারণ জানতে চাইলে অনন্ত বলেন, বন্যার পানিতে সবকিছু ডুবে গেছে। পানিতে পচা দুর্গন্ধ। পানি মাড়িয়ে চলতে হয়। শরীরে পানি লাগলে চুলকায়।

বিজ্ঞাপন
আর বসন্তের মতোও দাগ পানি লাগায় হয়েছে। সরকারিভাবে কোনো ওষুধ এখনো পাইনি।  শুধু অর্পণা রানী বা অনন্ত দাস নয়, তাদের মতো মৌলভীবাজারের বড়লেখার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকার অনেক মানুষ এখন পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যার পানি থেকে পচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তবে এলাকার মানুষ কোনো চিকিৎসা সেবা না পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেডিকেল টিম বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।    জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাকালুকি হাওরে আকস্মিকভাবে বন্যা দেখা দেয়। এতে বড়লেখা উপজেলার ২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘরে টিকতে না পেরে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে গেছেন। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। অনেকে বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে বন্যার পানিতে গোসল করছেন, পান করছেন। ফলে তারা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ও কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যার পর থেকে তাদের কারও জ্বর উঠেছে। কারও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হয়েছে। কারও আবার পায়ে গুটি বসন্তের মতো রোগ হয়েছে।   তালিমপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য গগড়া গ্রামের বাসিন্দা সুজিত দাস বলেন, বন্যায় তাদের এলাকা তলিয়ে গেছে। তাদের ঘরে পানি উঠেছে। তারা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন। পানি পায়ে লেগে তার পায়ে বসন্তের মতো দাগ হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু যে আমার এই রোগ হয়েছে তা নয়, এলাকার অনেকে আছেন। কেউ কেউ ডায়রিয়া রোগে ভুগছেন। বড়লেখা উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রেসহ ১৫টি নলকূপের প্ল্যাটফরম উঁচুকরণ করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ২০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রয়েছে। যেখানে দরকার সেখানেই বিতরণ করা হচ্ছে। বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। পানিবাহিত রোগের ওষুধের জন্য বরাদ্দ চেয়েছি। বরাদ্দ আসলে মানুষের মাঝে ওষুধ বিতরণ করবো।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

সিন্ডিকেট চক্রের ঈদ বাণিজ্য/ ট্রেনের ১০৫৩ টাকার এসি চেয়ার ২৫০০

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status