বিশ্বজমিন
তীব্র সমালোচনার পর বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লাভিত্তিক ২ বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়ন করবে না জাপান
মানবজমিন ডেস্ক
(৬ দিন আগে) ২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২১ পূর্বাহ্ন

দূষণকারী জ্বালানি সরবরাহ দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনার পর বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ায় দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রে অর্থায়ন করবে না জাপান। বুধবার জাপান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দেয়, এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে তারা আর ঋণ দেবে না। গত জুনে জি সেভেন-এর বৈঠকে সরকারগুলো ২০২১ সালের শেষ নাগাদ কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে নতুন করে সমর্থন দেয়া বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ‘চলমান প্রক্রিয়া’র কথা বলে বাংলাদেশের মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে এবং ইন্দোনেশিয়ার ইন্দ্রামায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রে সহায়তা অব্যাহত রাখে তারা।
কয়লাকে অপ্রতিরোধ্য মনে করা হয়, যখন এ থেকে কার্বন নিঃসরণকে ধারণ করার প্রযুক্তি ছাড়াই পুড়িয়ে বিদ্যুৎ বা তাপ উৎপাদন করা হয়। বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ শক্তির জন্য এই প্রক্রিয়াটি এখন আর ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় না। ফলে কয়লার বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান বিরোধিতার জবাবে জাপান তার নীতি পরিবর্তন করেছে। কারণ, কয়লা হলো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমণকারী পদার্থের অন্যতম। এর ব্যবহার বন্ধ দেখার জন্য পরিবেশবাদী কর্মী ও বিনিয়োগকারীরা উদগ্রীব।
জাপান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের প্রেস সেক্রেটারি হিকারিকো উনো সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনা ও বাংলাদেশের সঙ্গে পরামর্শের প্রেক্ষাপটে মাতারবাড়ি প্রকল্পে আমরা আর অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইন্দোনেশিয়ার ইন্দ্রামায়ু প্রকল্প নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারও মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে বলে মিডিয়াকে বুধবার জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেছেন, এটা পুরনো খবর। আমরা এরই মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরে এসেছি। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা বাতিল করেছি।
পাঠকের মতামত
আমার মতেসুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ করা উচিৎ
বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দেশের শতভাগ এলাকা এখন বিদ্যুৎ নেটওয়ার্কের আওতায় এবং চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাও অনেক বেশি। এ দাবি সত্ত্বেও সম্প্রতি পাঁচটি বেসরকারি ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ আরো দু'বছর বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি অনুসারে এবছরের শেষের দিকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করতে যাচ্ছে। আবার সরকার একদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য রাত আটটার পর শপিংমল ও দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে, অন্যদিকে বেশ কিছু বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অলস বসিয়ে রেখেই প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে, যার আনুষ্ঠানিক নাম ক্যাপাসিটি চার্জ। এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে গত ২০২০-২১ অর্থবছরেই ৩৭টি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে বছরের অধিকাংশ সময় অলস বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ১৩ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বা পিডিবিকে। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসেব অনুযায়ী দেশে এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫২টি। সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে চলতি বছরের ১৬ই এপ্রিলে- ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। আর এ মুহূর্তে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে ১১৬০ মেগাওয়াট। কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামসুল আলম বলছেন সরকার যেসব চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলার ক্যাপাসিটি কিনেছে, গলদটা সেখানেই। "দু'তিন গুণ বেশি দামে কেনা হয়েছে বলে ক্যাপাসিটি চার্জে এখন বিপুল অর্থ যাচ্ছে। একদিকে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকছে অথচ ভাড়ায় চালিত কেন্দ্রগুলোর সাথে চুক্তি বাড়ানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে নানাজনের স্বার্থ আছে বলেই এসব হচ্ছে।
পরিবেশ দূষণ রোধে কয়লা ভিত্তিক সব ধরণের প্রকল্প বাতিল করা উচিৎ।
Right decision. No more coal fired power plants.
Right decision. Japan should not a part in destruction of Bangladesh.