অনলাইন
ওসমানীনগরে খাদ্য সামগ্রীর কৃত্রিম সংকট
ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি
(৩ বছর আগে) ২২ জুন ২০২২, বুধবার, ২:০১ অপরাহ্ন

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলার এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্য সামগ্রীর কৃত্রিম সংকট িৈতর করছেন। বন্যাক্রান্ত মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিগুণ মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। ফলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যার কারণের অসহায় মানুষের কাজ নেই। নেই কোন উপার্জন। এমন অবস্থায় খাদ্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি যেন মড়ার ওপর খাঁরার ঘা হয়ে দাঁড়িছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজার ও আশপাশ কয়েকটি বাজারের কিছু ব্যবাসায়ী বন্যাকে পূঁজি করে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। বন্যায় প্রয়োজনীয় মোমবাতি, ম্যাচ, কেরোসিন, শুকনো খাবারের মূল্য দুই থেকে তিন গুণ বেশি রাখা হচ্ছে। এতে করে বন্যাক্রাত মানুষের মধ্যে ব্যক্তি বা সামাজিক সংগঠন ত্রাণ সতায়তায় এগিয়ে আসতে পারছে না। ফলে ওসমানীনগরে বানবাসী মানুষের দুর্ভোগ যেন আরো বেড়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
আজ বুধবার উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২৫ টাকা দামের মোমবাতি ৮০ থেকে ১শ’ টাকা প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে, চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি ধরে, মুড়ি ১শ-১১০ টাকা, কেরোসিন ১শ থেকে ১৩০ টাকা, দিয়াশলাই ডজন ৩০ টাকা, এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার গত শুক্রবার বিক্রি হয়েছিলো ১৩শ টাকা গতকাল বুধবার তা বিক্রি হয় ১৫শ’ টাকা, আলু পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে কেজিতে ১০ টাকা। এছাড়া চালের দাম বৃদ্ধি হয়েছে মোটা চাল কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা। একই দোকানে গিয়ে এক সাথে কয়েক পদের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ঘুরে ঘুরে কয়েকটি খুচরা দোকান থেকে পণ্য ক্রয় করতে হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এসব পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে বেশি মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
সিরাজ মিয়া নামের একজন ক্রেতা জানিয়েছেন, শুক্রবারে গোয়ালাবাজার থেকে ১ কেজি চিড়া ৬০ টাকায় নিলেও মঙ্গলবার কিনছেন ৮০ টাকা দিয়ে। বুধবার চিড়া বা মুড়ি পাওয়া যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সিলেট শহর থেকে পণ্য আমদানি করতে না পারায় আর চাহিদা থাকায় একটু দাম নিচ্ছেন।
পণ্য সংকট দেখিয়ে মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলিমা রায়হানা। পরে বুধবার বিকালে উপজেলার কয়েকেটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার খবর পাওয়া গেছে। অভিযান চালিয়ে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে জরিমানা করা হয়।
আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নীলিমা রায়হানা। এসময় দুর্যোগ ব্যবস্থা আইনে একটি প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার টাকা ও ভোক্তা অধিকার আইনে এক প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।