দেশ বিদেশ
ত্রাণের জন্য বানভাসি মানুষের দিনভর অপেক্ষা
একেএম মহিম, সুনামগঞ্জ থেকে
২২ জুন ২০২২, বুধবার
বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল পর্যন্ত দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে নৌকায় বাস করছে রোজিনা বেগম। সঙ্গে ছিল তার শ্বশুর-শাশুড়ি। কিন্তু পানি বাড়ায় তাদের কোনো খোঁজ নেই। স্বামী ঢাকায় থাকায় রোজিনার সঙ্গে নেই কোনো যোগাযোগ। এই চিত্র সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের। ত্রাণের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বানভাসি মানুষ অপেক্ষায় থাকেন। কিছু মানুষ ত্রাণ পেলেও বেশির ভাগই এখনো রয়েছেন ত্রাণ বঞ্চিত। গতকাল দুপুরে বন্যাদুর্গত সদর উপজেলার লালপুর, রসুলপুর, মনিপুরিহাটিসহ বিভিন্ন গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, ত্রাণবাহী নৌকা দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন বানভাসি মানুষ। ত্রাণের আশায় বৃদ্ধ থেকে শিশু সবাই জড়ো হন। পর্যাপ্ত ত্রাণ না থাকায় অনেকেই খালি হাতে ফিরছেন।
সূত্র জানায়, পাঁচ দিন পর সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সীমিত পরিসরে শুরু হয়েছে যান চলাচল। তবে জেলার অভ্যন্তরীণ অনেক সড়ক এখনো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সেগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। গত সোমবার রাতে সুনামগঞ্জে পৌরশহরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ চালু হয়েছে। তবে জেলা শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। গতকাল সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অনেক আবাসিক এলাকায় পানি রয়েছে। জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য ৬৭০ টন চাল ও নগদ ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া দুর্গতদের মাঝে ১২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, জেলায় ছয় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে প্রশাসন। এ ছাড়াও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র্যাব, কোস্ট গার্ড, বিআইডাব্লিউটি, ব্যক্তি উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এদিকে, বন্যাকবলিত এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোয়া। মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, মোমবাতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, চিড়া ১৫০ টাকা, ডিম প্রতি হালি ৬৫ টাকা এবং সয়াবিন তেল প্রতি লিটার আড়াই শত টাকায় বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
পাঠকের মতামত
ফাইজলামি করার সময় এখন নয়, আল্লাহ হেদায়াত দিন এবং বিপদে আর অসহায় মানুষ গুলোর সহায় হউন " আমীন
None should be against padma Bridge ( if they loves their homeland) ,And all resources must be used for the helping and well-being of flood affected peoples, save people save country.