প্রথম পাতা
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় হাইকোর্টে বাতিল
স্টাফ রিপোর্টার
১ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীকে মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের ওই রায় বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে গ্রামীণ কল্যাণকে সাবেক ১০৬ কর্মীদের কোনো লাভের টাকা দিতে হবে না। গতকাল হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, আবদুল্লাহ আল মামুন ও খাজা তানভীর আহমেদ। অন্যদিকে ১০৬ কর্মীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও আইনজীবী গোলাম রাব্বানী শরীফ। রায়ে হাইকোর্ট বলেন, শ্রম আইনে গ্রামীণ কল্যাণের শ্রমিকরা লাভের অংশ পাবে কিনা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার এখতিয়ার কোনো শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের নেই।
পরে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই রায়ের পর গ্রামীণ কল্যাণকে তার সাবেক ১০৬ কর্মীদের কোনো লাভের টাকা দিতে হবে না। শ্রম আইনের ২৩১ ধারা অনুসারে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে বা মতপার্থক্য হলে ব্যাখ্যার জন্য সরাসরি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ আছে। যেহেতু এ ক্ষেত্রে মালিক ও কর্মীর মধ্যে কোনো চুক্তি হয়নি, এ বিষয়ে সই হয়নি, তাই আপিল ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপিল ট্রাইব্যুনাল এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে রায় দিয়েছেন। তাই আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, ১০৬ জন সাবেক শ্রমিকের দাবি বেআইনি, কারণ গ্রামীণ কল্যাণ নিছক একটি স্বাস্থ্যসেবামূলক দাতব্য সংস্থা। এটি কোনো শিল্প কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার কথা জানিয়েছেন গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীর আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ১০ই জুলাই গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীকে মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় অবৈধ ঘোষণা প্রশ্নে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এই সময়ে ১০৬ শ্রমিককে মুনাফা দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থিতাবস্থা স্থগিতই থাকবে বলে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন।
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১০৬ কর্মী চাকরিতে ছিলেন। ২০১৩ সালের সংশোধিত শ্রম আইনে সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে মুনাফা দেয়ার বিধান রাখা হলেও এর ভূতাপেক্ষ (২০১৩ সালের আগে) কার্যকারিতা দেয়া হয়নি। যে কারণে ২০০৬ ও ২০১৩ সালের আইন অনুসারে তারা মুনাফা পাওয়ার অধিকারী নন। অথচ, ২০০৬ সাল থেকে ওই কর্মীরা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিলের মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছেন। যে কারণে রিটটি করা হয়।