বিশ্বজমিন
বিকৃত গড়নের ৫ ভাই-বোন, মানুষ বলে এলিয়েন
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ৩০ নভেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১২:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৫০ অপরাহ্ন

ডমিনিক প্রজাতন্ত্রের জিনোভা ডি সান হুয়ান। সেখানকার এক গ্রামে একই পরিবারে ১২ ভাইবোনের মধ্যে ৫ জনই রহস্যময় এক রোগে আক্রান্ত। এর ফলে তাদের মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে গেছে। শৈশব থেকেই তাদের চোখ বিস্তৃত, চিবুকের হাড় অতিরিক্ত বড়, নাকের গোড়ার দিকে ফুলে যাওয়া এবং দাঁতের অবস্থা বিদঘুটে। তাদেরকে নিয়ে লোকজন নানা রকম কৌতুক করে। কেউ বলেন, তারা মানুষ না। তারা বহির্জাগতিক কোন প্রাণী বা ইটি। শৈশব থেকে এসব শুনতে শুনতে এখন এটাই মেনে নিয়েছেন। শুধু তারাই নন, পরিবারের অন্যরাও এখন মেনে নিয়েছেন তারা বহির্জাগতিক প্রাণী বা এলিয়েন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
১২ ভাইবোনের মধ্যে ৫ জনের এমন অবস্থা হলেও বাকি সাত ভাইবোন বিস্ময়করভাবে বেশ সুস্থ, স্বাভাবিক। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মাথার চুল টানেন। বিস্মিত হন। বলতে পারেন না কি কারণে আসাইয়াস, গ্রেসিয়সা, প্রিসিওসা, অ্যান্টানিও এবং মিগুয়েলিনা বাউতিস্তার এ অবস্থা হয়েছে। বিকৃত মুখমণ্ডলের কারণে তাদেরকে নিয়ে হাসি তামাশা করেন অনেকে। এলিয়েন বলে ঠাট্টা করার ফলে আসাইয়াস বলেন, এক পর্যায়ে আমরা সেটাই বিশ্বাস করা শুরু করেছি। লোকজন বলে, আমরা এলিয়েনের মতো দেখতে। এরপর অন্য মানুষদের সংস্পর্শে যাই। তারা আমাদের বলেন, আমরা এলিয়েন না। আমরা মানুষ। উল্লেখ্য, শুধু যে বিকৃত মুখমণ্ডল তাই নয়, একই সঙ্গে এই ভাইবোনগুলো মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, মাথাঘোরা এবং শরীর ব্যথার মতো উপসর্গে ভুগছেন। একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম তাদের। কোনো একটা কাজ খুব দরকার। কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘোরেন। কিন্তু তাদেরকে দেখতে বিকৃত, এ জন্য কেউ তাদেরকে কাজে নিতে চায় না।
শরীরে কি হয়েছে বা কি রোগে আক্রান্ত তারা তা জানার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। কোনো কোনো চিকিৎসক মনে করেন তারা লিয়নটিয়াসিস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু এটা সুনির্দিষ্ট উত্তর নয়। লিয়নটিয়াসিস রোগের লক্ষণ হলো মুখমণ্ডল সিংহের মতো দেখাবে। তবে স্নায়ুবিজ্ঞানী ডা. ফ্যানলি ভাসকুয়েজ বলেছেন, এটা খুবই বিরল একটি রোগ। বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত এমন ৪০টিরও কম রোগের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, আক্রান্ত রোগীদের দেহে ক্যালসিয়ামের কারণে মুখের হাড় বিকৃত হয়ে থাকতে পারে। বাউতিস্তার ভাইবোনদের মুখের হাড় বৃদ্ধির ঘটনায় স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে সংকুচিত করতে পারে। এর ফলে তারা অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। কানে কম শুনতে পারেন। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অক্ষম হয়ে যেতে পারেন। দেখা দিতে পারে অন্যান্য প্রতিকূলতা। ডা. ভাসকুয়েজ মনে করেন, এই ভাইবোন যে এখনও বেঁচে আছেন তা অবিশ্বাস্য। দুর্ভাগ্য হলো, এই রোগের এখনও কোনো চিকিৎসা নেই। যে চিকিৎসা আছে তা হলো লক্ষণগুলো থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার।