ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

ডলারের দর কমানো হলেও প্রভাব নেই বাজারে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১ বছর আগে) ২৫ নভেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১০:১৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০০ পূর্বাহ্ন

mzamin

আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সসহ সব ক্ষেত্রে ডলারের দর ৫০ পয়সা করে কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। উল্টো কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগের দিনের চেয়ে ডলারের দর বেড়েছে। এখনো রেমিট্যান্সে প্রতি ডলার ১২২ টাকা পর্যন্ত কিনেছে বেশ কয়েকটি ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি এবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদনকারী ডিলারদের সংগঠন বাফেদা ৫০ পয়সা কমিয়ে রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ দর নির্ধারণ করে ১১০ টাকা। এর বাইরে সরকার ও ব্যাংকের আড়াই শতাংশ করে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনাসহ দাম দাঁড়ায় ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দর কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

ডলার সংকটের প্রভাব কাটাতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, এলসিতে শতভাগ পর্যন্ত মার্জিন, দর যাচাইসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। ২০২১ সালের আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমে গত বুধবার ১৯.৫২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আগের বুধবার শেষে যা ১৯.৬০ বিলিয়ন ডলার ছিল। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় গত বছরের ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর ঘোষণা করে আসছে বাফেদা এবং এবিবি। প্রথমে রেমিট্যান্সে ১০৮ টাকা এবং রপ্তানিতে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে বাড়িয়ে উভয় ক্ষেত্রে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। আর আমদানিতে নির্ধারণ করা হয় ১১১ টাকা। তবে গত বুধবার প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা করে কমানোর ঘোষণা দেয় বাফেদা-এবিবি। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাফেদার ডলারের দর কমানোর ঘোষণা ঠিকই আছে। কেন না, বৈদেশিক মুদ্রার দর নির্ধারিত হয় ডলারের চাহিদা ও জোগানের ওপর। ইতিমধ্যে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। নির্ধারিত দরে ডলার না পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি দিয়ে ডলার কেনায় ইতিমধ্যে কয়েক দফায় বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরবরাহ বাড়ার কারণে রিজার্ভ আর ডলার বিক্রি করা হবে কিনা জানতে চাইলে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানি, সারসহ বিভিন্ন সরকারি আমদানির বিপরীতে ডলার বিক্রি করে। যে কারণে এখনো বিক্রি না করার পর্যায়ে আসেনি।

রেমিট্যান্সে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমদানি দায় মেটাতে ডলারের বেশি দাম নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে আমদানি খরচ বাড়ছে, যার প্রভাব গিয়ে পড়ছে পণ্যমূল্যে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী আয়ে সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাংকও সমপরিমাণ প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ডলারের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ডলার-সংকটের এই সময়ে এভাবে প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি।

বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের রেমিট্যান্স বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্যের কারণে ডলারের দর কমছে না। এক্সচেঞ্জ হাউজ ভেদে ১২০ থেকে ১২২ টাকা ২৫ পয়সা পর্যন্ত দরে রেমিট্যান্স কিনতে হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম বড় এক্সচেঞ্জ হাউজ আল-আনসার থেকে ১২২ টাকা ২৫ পয়সায় কিনতে হয়েছে। বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশের এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার পাওয়া গেছে। আগের দিনও এ রকমই ছিল।

এদিকে দেশের কয়েকজন আমদানিকারক জানান, ব্যাংকগুলো আমদানি দায় মেটাতে এখনো ডলারের দাম নিচ্ছে ১২২-১২৩ টাকা পর্যন্ত। তবে নথিপত্রে কোনো কোনো ব্যাংক ডলারের দাম ১১৬ টাকা পর্যন্ত দেখাচ্ছে, বাকি টাকা ব্যাংকগুলো অন্যভাবে আদায় করছে। ১৭ই নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের মাধ্যমে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছে ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। গত বুধবার পর্যন্ত যা বেড়ে হয়েছে ১৪২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ফলে গত সপ্তাহে আয় আসা কিছুটা কমেছে।

 

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status