ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

রাজনীতি

‘অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা’ ক্ষমতাসীনরা ঘটাচ্ছে: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার

(৯ মাস আগে) ২১ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ৬:৩৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:১১ অপরাহ্ন

mzamin

সারাদেশে ‘অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা’র ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ জানান। রিজভী বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের অশুভ উদ্দেশ্যে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারী কর্মীরা। তারা গণপরিবহনে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ করছে আর নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জ্বালাও-পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজেই ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে অধিকাংশ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে। এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রতিরোধে কিংবা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে যে, দেশজুড়ে চলমান নাশকতায় ক্ষমতাসীন অপশক্তি জড়িত। প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের আজ্ঞাবাহী পুলিশ সদস্যরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে চালক বা তাদের সহকারীদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, কিভাবে পুলিশ বা ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা তাদের বাসে আগুন দেয়ার জন্য দায়ী।

উদাহরণ হিসেবে গত ৬ই নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমুহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১শে অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে, বাংলা মোটরের মোড়ে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা এবং ৬ই নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকে আগুন দেয়ার ঘটনায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ও ১৪ই নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগের কর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী। প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, দেশের সর্বত্র পুলিশ বা র‌্যাবের শত শত পেট্রোল টিম এবং বিজিবির শত শত প্লাটুন অস্ত্র সজ্জিত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে বিপুল অস্ত্র সহযোগে পুলিশের পূর্ণাঙ্গ সুসংহত টহল। বাংলাদেশ যেন পরিণত হয়েছে এক যুদ্ধ ক্ষেত্রে। এই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও বিরোধী দলের সদস্য কোনো প্রকার সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগের কাজে লিপ্ত হবে এই দাবি সর্বত্রই হাস্যকর। বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল উপস্থিতির উদ্দেশ্য হয়তো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেন তারা নিশ্চিন্তে যানবাহনে আগুন দিতে পারে, জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যের প্রেক্ষাপট তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

 তিনি বলেন, ওদের এসব কর্মকাণ্ড বারবার প্রমাণিত হয়েছে, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এসেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কিভাবে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বাসে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয় আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতিকারী নেতাকর্মীরা। ২০১৪ সালে ছাত্রলীগের ৩ জন সদস্যকে বাসে অগ্নিসংযোগের সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ২ জন ছাত্রলীগ সদস্য ককটেল ও পেট্রোল বোমাসহ আটক হয়েছিল, ২০১৫ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় পেট্রোল বোমাসহ গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা পর বাধ্য হয়ে পুলিশ ২ জন যুবলীগ কর্মীকে ছেড়ে দিয়েছিলো। ২০১৪ সালে বিরোধী দলের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ তার নিজস্ব বিহঙ্গ পরিবহনে পেট্রোল দিয়ে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে গণমাধ্যম মারফত জানা যায়। সেখানে আগুনে ১১ জনের মৃত্যুও হয়েছিল। ২০০৬ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ ট্রেন এবং বাসে আগুন দিয়ে, পরিবহণ শ্রমিকদের উপর হামলা করে মানুষ হত্যা করেছিল। শেরাটনের সামনে গান পাউডার মেরে বাসে আগুন দেওয়াসহ এমন অজস্র দৃষ্টান্ত আছে যেখানে আওয়ামী লীগ তাদের বিদ্বেষপূর্ণ-বিভাজিত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য সহিংসতাকে ব্যবহার করেছ। মানুষ হত্যা করে, জনগণের সহায়-সম্বল ধ্বংস করে, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সেই দায় বিরোধী দলের উপর চাপিয়ে, মিথ্যা মামলায় ভিন্ন দল ও মতের উপর দমন-নিপীড়ন চালাবার যে বীভৎস রাজনীতি আওয়ামী লীগ লালন করে আমরা তাকে ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাই।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশ ৪৭৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং বিভিন্ন মামলায় ১ হাজার ৭২০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করেছে।

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

রাজনীতি সর্বাধিক পঠিত

সমমনা দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক/ ৩১ দফা বাস্তবায়নে তৃণমূলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status