অর্থ-বাণিজ্য
শ্রম খাতের অগ্রগতি দেখতে ঢাকায় ইইউ প্রতিনিধিদল
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১২ নভেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:১১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের শ্রম খাতের উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (এনএপি) বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল রোববার ঢাকায় এসেছে। ইইউর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা প্যাম্পালোনি বাংলাদেশ সফররত প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রোববার তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘আবার বাংলাদেশে আসতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত।’ এর আগে ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সফররত প্রতিনিধিদলকে নিয়ে রাজধানীর বাড্ডায় শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য পরিচালিত একটি স্কুল পরিদর্শনে যান।
প্রতিনিধিদলটি আগামী বুধবার সরকারের সংশ্লিষ্ট তিনজন সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবে। বৈঠকে শ্রম আইন সংশোধনের পরের পরিস্থিতি, শিশুশ্রম বিলোপ ও শ্রমিকবিরোধী সব ধরনের সহিংসতা নিরসনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
ইইউ প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য এমন এক সময়ে সফরে এসেছে, যখন ন্যূনতম মজুরি আরও বৃদ্ধির দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ চলছে। চলমান শ্রমিক বিক্ষোভে সহিংসতায় অন্তত তিনজন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় দুই ডজন মামলায় কয়েক হাজার শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১৩০ পোশাক কারখানা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সফর শুরুর দুই সপ্তাহ আগে শ্রম খাতের উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার (এনএপি) বিষয়ে শ্রম খাতের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে অগ্রগতি না হওয়ায় ইইউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের এনএপি প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণের জন্য প্রচেষ্টা এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানো প্রয়োজন বলে ওই বার্তায় মত দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলটি সোমবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করবে। ১৪ই নভেম্বর ওই প্রতিনিধিদল ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডার শীর্ষ কূটনৈতিক এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, আইএলওর এদেশীয় পরিচালকের সঙ্গে প্রাতরাশ ভোজসভায় বসবেন। পরে ইইউ প্রতিনিধিদল পোশাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন ব্র্যান্ড, শ্রমিক সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে। একই দিন বিকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। দিনের শেষে প্রতিনিধিদল রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
পাওলা প্যাম্পালোনির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলটি ১৫ই নভেম্বর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. এহছানে এলাহীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে শ্রম আইন সংশোধনের পরের পরিস্থিতি, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) শ্রম অধিকার সুরক্ষা, সব ধরনের শিশুশ্রম বিলোপ, শ্রমিকবিরোধী সব ধরনের সহিংসতা, নিপীড়ন, হয়রানি, অন্যায্য শ্রম চর্চার নিরসন এবং শ্রম ইউনিয়নবিরোধী তৎপরতা রোধ, শ্রমিকদের ন্যায়সংগত ট্রেড ইউনিয়ন চর্চায় সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার অপসারণ এবং ন্যূনতম মজুরি ও বাধ্যতামূলক শ্রম বন্ধের মতো বিষয়গুলোতে আইএলও সনদ অনুসমর্থনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শ্রম অধিকার সুরক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনি ও প্রশাসনিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে শ্রম খাতের উন্নয়নে এনএপি গৃহীত হয়। ২০২৬ সালের মধ্যে এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারেরা সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের এনএপি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালে।