অর্থ-বাণিজ্য
বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে কেন কমছে না ভোজ্য তেলের দাম
আলতাফ হোসাইন
১৯ জুন ২০২২, রবিবার
উৎপাদন বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ কয়েকদিন ধরেই ভোজ্য তেলের দাম কমের দিকে। সামনে পণ্যটির উৎপাদন বৃদ্ধি ও দাম আরও কমবে বলেও মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ফলে তেলের বাজারে চলমান সংকট কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক বাজারদর নিম্নমুখী দেখা গেলেও বাংলাদেশে এর কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। বরং দাম আরও বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষণীয়। সর্বশেষ গত ৯ই জুন প্রস্তাবিত বাজেট পেশের দিনেই আরেক দফা বাড়ানো হয় ভোজ্য তেলের দাম। যদিও এর এক সপ্তাহ আগেও দাম কমার আভাস দিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমেছে টনপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ ডলার
একদিনে কমেছে টনপ্রতি ৮২ ডলার
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোজ্য তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আরও কমবে। একইসঙ্গে এই নিম্নমুখিতা বেশ কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। এরই প্রেক্ষিতে দেশে দেশে ভোজ্য তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল, পামঅয়েল ও সূর্যমুখী তেলের দাম লিটারে ৫ থেকে ১৫ রুপি পর্যন্ত কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ফলে গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম টনপ্রতি প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ডলার পর্যন্ত কমলেও এতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও এর সুফল পাচ্ছেন না দেশের ভোক্তারা। জানা যায়, ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন, ভোজ্য তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি রয়েছে। কমিটির সদস্যরা বৈঠকের মাধ্যমে বিগত কয়েক মাস আগে আমদানি হওয়া ইনবন্ড-আউটবন্ড ভোজ্য তেলের তথ্য পর্যালোচনা করে দাম নির্ধারণ করে। এ জন্য একটি সূত্র মেনে চলা হয়। এ কারণে বর্তমান সময়ে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও এর সুফল পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সর্বশেষ দাম সমন্বয় হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। নতুন দাম ঘোষণা করতে অন্তত আরও এক মাস লাগবে। সর্বশেষ গত শুক্রবার একদিনে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে টনপ্রতি ৮২ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম নেমে আসে ১ হাজার ৬৩০ ডলারে। আগের দিনও তা কেনাবেচা হয়েছে টনপ্রতি ১ হাজার ৭১২ ডলারে। এক সপ্তাহ আগে এর মূল্য ছিল প্রতি টন ১ হাজার ৭৮১ ডলার। সে হিসেবে একদিনে পণ্যটির দাম কমেছে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সপ্তাহে কমেছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে পামঅয়েলের দামেও। এক সপ্তাহ আগেও সিবিওটিতে পণ্যটির মূল্য ছিল প্রতি টন ১ হাজার ৩৬০ ডলার। বৃহস্পতিবার তা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩২৮ ডলারে।
সেখান থেকে শুক্রবার নেমে এসেছে ১ হাজার ৩১৯ ডলারে। ভোজ্য তেলটি এর চেয়েও কম দামে বিক্রি হচ্ছে কুয়ালালামপুরের বুর্সা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে। সেখানে শুক্রবার পণ্যটির মূল্য নেমে এসেছে প্রতি টন ৫ হাজার ৪৫৬ রিঙ্গিতে (১ হাজার ২৪০ ডলারের সমপরিমাণ)। গত এক সপ্তাহে বুর্সা ডেরিভেটিভসে পণ্যটির দাম কমেছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে দরপতনের হার ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাসের পাশাপাশি শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া এখন পামঅয়েলের রপ্তানি বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। একই পথে হাঁটছে মালয়েশিয়াও। বাজারে এখন এরই প্রভাব স্পষ্ট বলে জানিয়েছেন বুর্সা ডেরিভেটিভসের ব্যবসায়ীরা।
পাঠকের মতামত
দুর্নীতিবাজ সরকার হয় ব্যবসায়ীরা তো আগেই দুর্নীতিবাজ
এদেশ এর সব ব্যবসায়ী সুজুগ সন্ধানী, দুই নাম্বার, বদ এর হাড্ডি,ওরা কবরে ধান্ধা করে উপার্জিত টাকা নিয়ে যাবে ভাবছে,বুঝতে পারছে না এই টাকা সাপ হয়ে কামড়াবে!!!!!
কানাডার বাজারে ভোজ্য তেলের দাম এখনও অপরিবর্তিত। কমে নি । তবে এদেশের মানুষ ব্যবহার সীমিত করেছেন।
দাম বাড়ছে শোনা মাত্র দাম বেড়ে যায়, কমার সময় অনেক দেরি হয়ে যায়, এর নাম বাংলাদেশ।
আরবের এক রুটি বিক্রেতা আটা ময়দার দাম বেড়ে যাওয়াতে কোনভাবেই রুটি বানিযে বিক্রী করে পোষাচ্চিলনা, তাই সিদ্ধান্ত নিল রুটির দাম দুই টাকা বাড়িয়ে ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা করবে। কিন্তু দেখা গেল কোন ক্রেতা বাড়তি দুইটাকা দিতে রাজি নাই। কোন ভাবেই বাড়তি দামে রুটি বিক্রী করা যাচ্ছিলনা, দোকানে কাষ্টমারদের সাথে প্রতিদিন ঝগড়াঝাটি লেগে থাকাতে সিদ্ধান্ত নিল রাজার সাথে দেখা করে তার দুঃখের কথা জানাবে। রাজা নিশ্চয় একটি ব্যবস্থা বের করে দিবেন। রাজার সাথে দেখা করে দুঃখের কথা বলার পর রাজা বল্লেন তোমার কথা খুবই যৌক্তিক। ঠিক আছে তুমি আগামীকাল থেকে রুটি ১০ টাকা করে বিক্রী করবে। রুটি বিক্রেতা তো অবাক, চাইলাম ২ টাকা বাড়াতে এখন মহামান্য রাজাতো ৭ টাকা বাড়িয়ে দিলেন। না মহামান্য রাজা আমার ২ টাকা বাড়ালেই হবে। রাজা বললেন না না ২ টাকা বাড়ালে তোমার খরচ পোষাবেনা। রাজার সিদ্ধান্তে প্রজারা তোমার থেকে ১০ টাকায় রুটি কিনবে। তারপরদিন থেকে দোকান খুলেই রুটির দাম ১০ টাকা। শুরু হলো আন্দোলন। রুটি বলে কথা প্রজারা রাস্তায় নেমে সব কিছু অচল করে দিলো। শেষমেষ আন্দোলনকারীরা রাজার সাথে আলোচনার প্রস্তাব দিল। আন্দোলনকারীরা রাজার সাথে আলোচনায় বসলে রাজা সব কথা শুনলেন, বললেন আন্দোলনকারীদের দাবী খুবই যৌক্তিক। একসাথে ৭ টাকা বাড়ানো কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। রাজা বললেন ঠিক আছে আগামীকাল থেকে রুটি ৪ টাকা বাড়িয়ে ৭ টাকায় বিক্রী হবে। প্রজারা খুশি হয়ে চলে গেল। দুদিন পর রাজা রুটি বিক্রেতাকে ডাকলো, বলে দিল তোমার দাবী মত তুমি রাখবে ৫ টাকা আর দুই টাকা আমার জন্য পাঠিয়ে দিবে।
বাংলাদেশে আমাদের আইন বা নিয়ম আছে যে জিনিসের দাম একবার বাড়বে সেটা আর কখনোই কমবে না আর বাংলাদেশের ব্যাবসায়ীরা হচ্ছে সকল আইন ও নিয়মের উর্ধে ব্যাবসায়ীরা যেটা বলবে সেইটাই আইন সেইটাই নিয়ম।
আইন প্রনেতা, প্রয়োগকারী এবং বাস্তবায়নকারী এক পক্ষ আর আমরা ভোক্তারা এক পক্ষ। সুতারাং, কোথায় কমলো মেটার তা নয়? মেটার হলো লাভ প্রর্যাপ্ত পরিমান হইতেছে কি না?