অর্থ-বাণিজ্য
জার্মানদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অংশীদার হওয়ার আহ্বান
এমএম মাসুদ, জার্মানি থেকে
(১ বছর আগে) ২ নভেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

জার্মানির বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। জার্মানির ফ্রাংকফুর্টে ‘জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেল ফ্রাংকফুর্ট’ হোটেলে বুধবার ‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব: নেটওয়ার্কিং লাঞ্চ’ শীর্ষক সামিটে তিনি এ আহ্বান জানান। বিএসইসি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডার) যৌথভাবে এ রোডশো’র আয়োজন করে। বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের নিকট বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধারাবাহিকভাবে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ এর আয়োজন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জার্মানির ফ্রাংকফুর্টে সামিট আয়োজন করা হয়, যার প্রধান আলোচ্যসূচি ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয়, সহজতর এবং লাভজনক দেশ হিসেবে জার্মানির বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের নিকট তুলে ধরা। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, কভিড-১৯ এর পর উন্নতবিশ্ব তাদের অর্থনীতিকে পুনর্বিন্যস্ত (রিবুটিং) করছে এবং বিনিয়োগের নুতন সুযোগ খুজছে। বিডা ও বিসেকের এ ধরনের সামিট তাদের সামনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও সুযোগ তুলে ধরে তাদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে সফলভাবে উদ্বুদ্ধ করছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও জার্মানির দীর্ঘদিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং পারস্পারিক সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। ইউরোপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। এ সময় বিএসইসির চেয়ারম্যান বাংলাদেশে কর্মরত জার্মান কোম্পনিসমূহ, জার্মান এনজিওসমূহ এবং ইনস্টিটিউটসমূহের প্রশংসনীয় ও সফল কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন। ভূরাজনৈতিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ও সুবিধাজনক অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের তারুণ্যে উজ্জীবিত মানবসম্পদের সুযোগ-সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক সামষ্টিক ও অর্থনৈতিক নানা সূচকে যেমন- জিডিপি প্রবৃদ্ধির উচ্চ হার, দারিদ্র্য হ্রাস, শিশুমৃত্যু হ্রাস, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, বৃহৎ দেশীয় বাজার, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড, দক্ষ জনবল, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রভৃতিতে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নতির চিত্র তুলে ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সম্ভাবনার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। তিনি প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের দৃঢ় ও সম্ভাবনাময় অবস্থানের চিত্র তুলে ধরেন এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস করার জন্য ক্রমাগত উন্নয়নের নিমিত্ত বিএসইসি কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবিধাজনক দিকসমূহ তুলে ধরে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’ এর নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এবং ‘প্ল্যানকুয়াড্রেট জিএমবিএইচ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মার্টিন গেসকেস, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, ফ্রাংকফুর্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. হ্যান্স ক্রিস্টোফ সিবোল্ড এবং ‘বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সদস্য ও অতিরিক্ত সচিব আলী রেজা মজিদ উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু বলেন, আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সাথে সাথে আমরা একটি গতিশীল পুঁজিবাজার পাব। বাংলাদেশের পুঁজিবাজার উদীয়মান। বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য পুঁজিবাজার হলো অন্যতম প্রধান খাত। বাংলাদেশে বর্তমানে উদ্ভাবনী প্রকল্পসমূহে এবং স্মার্ট বাংলাদেশের সাথে সঙ্গতিমূলক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। ডিএসই’র এখন বাজার মূলধন হলো ৮০ বিলিয়ন ডলার।