বাংলারজমিন
মুন্সীগঞ্জে ৪ দিন পর নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
৩ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবারমুন্সীগঞ্জ সদরের মিরকাদিম পৌর এলাকায় নিখোঁজ হওয়া দুই মাসের শিশু আজানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে গোপালনগরের ওই বসত ঘরের ২০ মিটার দূরের একটি ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করে স্বজনরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে ঘর থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়। শিশু আজান নারায়ণগঞ্জের পাগলা এলাকার মো. শরীফ হোসেনের ছেলে।
নিহত আজানের নানি ময়না বেগম বলেন, আজান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আমাদের ঘরের শোক চলছে। আমার দু’টি মেয়ে, কোনো ছেলে ছিল না। মেয়ের ঘরে ছেলে হওয়াতে আমরা খুব খুশি ছিলাম। নিখোঁজের পর থেকে আমরা আজানকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছিলাম। সকালে বাড়ির পাশের ডোবার দিকে কুকুর ডাকাডাকি করছিল। তখন আমি আমার মেয়েকে ও বোনকে বাড়ির পাশের ডোবাগুলোতে খুঁজতে বলি। তারা সেখানে খুঁজতে যায়। একপর্যায়ে আধা ডুবন্ত অবস্থায় আজানের লাশটি দেখতে পেয়ে আমরা পুলিশে খবর দেই। সেদিনের ঘটনার বিষয়ে শ্রাবণী বলেন, আমার বাবা বাচ্চার পাশে ঘুমিয়ে ছিল। সকাল পৌনে সাতটার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যাই। সে সময় পাশের বাড়ির চাচি রমিজা বেগম ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁকে বাচ্চার দিকে খেয়াল রাখতে বলে শৌচাগারে গিয়েছিলাম। এসে দেখি, ওই চাচিও নেই, বাচ্চাও নেই। পরে খোঁজ নিয়ে দেখি, চাচি তাদের ঘরে, বাচ্চা কোথাও নেই। তিনি আহাজারি করে বলেন, ‘কত বললাম চাচি বাচ্চাটারে কোথাও লুকাইয়া রাখলে কও। কে জানতো বাচ্চাটারে ডোবার মধ্যে ডুবাইয়া রাখছিল। রমিজা বেগমের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা ছিল না তার পরেও কত নিষ্ঠুরভাবে আমার দুধের বাচ্চাটারে মাইরা ফেললো গো...’। বলতে বলতে আবারো জ্ঞান হারান শ্রাবণী।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রমিজা বেগমকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে পুলিশ ও স্বজনদের নজরদারিতে ছিলেন তিনি। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খাইরুল হাসান বলেন, শুরু থেকেই বাচ্চার স্বজন ও রমিজা বেগম নামে ওই প্রতিবেশীর প্রতি আমাদের সন্দেহ ছিল। রমিজা বেগমকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় রোববার রাতে অজ্ঞাত আসামি করে একটি চুরির মামলা করা হয়েছিল। সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।