বাংলারজমিন
ডোমারে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, গ্রেপ্তার ৩
ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি
১৬ জুন ২০২৫, সোমবারনীলফামারীর ডোমারে চিকিৎসকের অবহেলায় বেবি আক্তার (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি সুস্থ রয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত বেবি উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বড়গাছা দরগাপাড়া এলাকার মো. নুর আলমের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। ক্লিনিক সিলগালা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। নিহতের স্বামী নুর আলম বলেন, আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। শনিবার বিকালে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠে। এরপর পরিবারের লোকজনসহ তাকে ডোমারের জনতা ক্লিনিকে নিয়ে আসি। সেখানে মহিলা ডাক্তার রিজওয়ানা ইয়াসমিনকে দেখালে তিনি কিছু পরীক্ষা দেন। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখার পর তিনি বলেন, রোগীর থলিতে পানি না থাকায় তাকে সিজার করাতে হবে। তখন আমার স্ত্রীকে সিজারের জন্য জনতা ক্লিনিকে ভর্তি করাই। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সিজারের মাধ্যমে পুত্রসন্তান জন্ম দেন। সিজারের সময় ডাক্তার রিজওয়ানা, ডাক্তার নিহার রঞ্জন ও ওটি বয় বিপুল সরকার উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকেই রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। সিজারের তিনঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলেও ডাক্তার রিজওয়ানা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এমনকি রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হলেও তাকে অক্সিজেন পর্যন্ত দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, এক সময় রোগীর রক্তক্ষরণ আরও বাড়তে থাকে ও প্রেসার অনেক কমে যায়। একপর্যায়ে আমার স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ডাক্তার রিজওয়ানা, ডাক্তার নিহার রঞ্জন সটকে পড়েন। তখন ডাক্তার সাকিব বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো না, তাকে রংপুর নিয়ে যান। তখন স্ত্রীকে নিয়ে রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। রোববার ভোরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আমার স্ত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ডা. নাজমুস সাকিব, সেবিকা মোছা. সুমনা আক্তার ও সাবিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহতের স্বামী নুর আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
স্থানীয়রা বলেন, ডাক্তার নিহার রঞ্জন নিজেই অসুস্থ। তিনি কীভাবে এখনো রোগীকে অবশের ইনজেকশন দেন? এর আগেও রোগীকে অবহেলা করে মেরে ফেলার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শায়লা সাঈদ তন্বী এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী ক্লিনিকটিকে সিলগালা করে দেন। রায়হান বারী বলেন, ক্লিনিকটি এখনো লাইসেন্স পায়নি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি ঘটনা করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তন্বী বলেন, প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত পাওয়ায় জনতা ক্লিনিককে সিলগালা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।