বিবিধ
কানাডায় কেন চরমপন্থি খালিস্তান আন্দোলন ছড়ালো
অনলাইন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ১২:১৮ অপরাহ্ন

পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশ কানাডা। পপ সংস্কৃতি, আলো ঝলমলে আর চটকদার ভিজুয়্যাল। এই দেশেই এক সময়ের চরমপন্থি খালিস্তান আন্দোলন আবার পালে হাওয়া পেয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে ভারতে আকর্ষণ হারানো এই আন্দোলন অসাবধানবশত কানাডায় আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। ভারতের এক সময়ের এই প্রান্তিক এবং বিচ্ছিন্ন খালিস্তান আদর্শ কিভাবে অন্য দেশের মূলধারার অংশ হয়ে উঠল?
বহু প্রজন্ম ধরে কানাডা পাঞ্জাবি অভিবাসীদের আবাসস্থল। বিশেষ করে ১৯৮৪ সালে ভারতে শিখ দাঙ্গার পর তারা ব্যাপকভাবে কানাডা পাড়ি জমানো শুরু করে। তখন থেকে পপ সঙ্গীত এই আন্দোলন প্রকাশের মাধ্যম হয়ে ওঠে । 'পুট সর্দার দে' এবং 'এসওয়াইএল'-এর মতো গানগুলি শুধুমাত্র চরমপন্থী এবং মৌলবাদীই নয়, অসাবধানতাবশত শিখ ধর্মকে গ্যাংস্টারিজমের সাথে যুক্ত করেছে এই কালচার।
নীলেশ বোস যেমন পরামর্শ দিয়েছেন, এই আন্দোলনের পেছনের অনুভূতি শুধুমাত্র একটি পৃথক স্বদেশের আকাঙ্ক্ষা নয় বরং শিখদের প্রতি অবিচার থেকে উদ্ভূত। কিন্তু অতীতে অন্যায় কি বিদেশে চরমপন্থী মতাদর্শ লালন করার যৌক্তিকতা হওয়া উচিত?
এখানে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মের শিখ কানাডিয়ান রয়েছে যারা কানাডার বহুসাংস্কৃতিক পরিচয়ের সাথে লড়াই করছে। কানাডায় শিখদের সাথে বর্ণবাদী আচরণ একটি দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা। তাই তাদের গৌরবময় অতীত এবং মহারাজা রঞ্জিত সিং-এর রাজত্বের গল্প খালিস্তান নামের একটি রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে। একটি পৃথক শিখ রাষ্ট্রের ধারণা তখনই আসে যখন তারা কানাডায় বৈষম্যের সম্মুখীন হয়।
তাছাড়া এর সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতি জড়িত। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে শুধু কাশ্মীরে নয়, শিখ প্রবাসীদের মধ্যেও বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব পোষণ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ করা হচ্ছে।
কানাডায় খালিস্তানি ভাবাবেগের কেন্দ্রবিন্দু হল নির্দিষ্ট কিছু গুরুদুয়ার। এগুলো তাদের শক্ত ঘাঁটি। শিখ সম্প্রদায়ের জন্য গুরুদুয়ার কেবল একটি উপাসনার স্থান নয় এটা তাদের যৌথ জীবনের হৃদস্পন্দন। খালিস্তান অনুসারীরা এখান থেকেই মতাদর্শ এবং আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে।
খালিস্তানের ধারণা ভারতে তার উত্সাহ হারিয়ে ফেলেছে। তবে এর অবশিষ্টাংশ কানাডায় একটি আকর্ষণ খুঁজে পেয়েছে। ঐতিহাসিক মিশ্রণ, পরিচয়ের সন্ধান, ভূরাজনীতি এবং পপ সংস্কৃতির শক্তি নিশ্চিত করে যে এই অনুভূতিটি বেঁচে থাকবে। যাইহোক, উভয় জাতি এবং তাদের প্রবাসীদের জন্য এটা উপলব্ধি করা অপরিহার্য যে চরমপন্থী মতাদর্শকে টিকিয়ে রাখা, যে কোনো সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
সূত্র: খালসাভোক্স