দেশ বিদেশ
‘বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না’
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবারবাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী আসিফ আকবরের একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক জুড়ে। গত ১লা সেপ্টেম্বর দেয়া পোস্টটি ছিল- হলফ করে বলতে পারি বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না। বন্দরনায়েকে এয়ারপোর্ট থেকে দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশন শেষ করে লাগেজ নিয়ে কোনো জ্যাম ছাড়াই হোটেলে পৌঁছে গেছি। সৌন্দর্যমণ্ডিত মসৃণ রাস্তায় পাইনি কোনো খোঁড়াখুঁড়ির আলামত। নেই কোনো অবৈধ অটো’র অত্যাচার, তেলচালিত বেবি ট্যাক্সিই একমাত্র ছোট বাহন, নেই মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য। চোখে পড়েনি কোনো রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণার নমুনা। বিদ্যুতের সাময়িক সংকট পুরোপুরি কেটে গেছে।
কলম্বো থেকে চারঘণ্টার দূরত্বে ক্যান্ডি যাওয়ার পথও ছিল মসৃণ। গাড়ির হর্ন শোনারও সৌভাগ্য হয়নি। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সৃষ্ট সাময়িক উষ্মাও গায়েব, দেখেছি উৎসবমুখর পরিবেশ। একটা ডাবের দাম বাংলাদেশি ষোল টাকা, পানিটা একটু বেশিই সুস্বাদু লাগলো। রাস্তার পাশে নেই কোনো অপরিকল্পিত টং দোকান, পথের ধারে দেখিনি ময়লা আবর্জনা খালি বোতল পলিথিন। গ্যালারি থেকে বের হওয়ার সময় সবাই যার যার শেষ হয়ে যাওয়া খাবারের প্যাকেট, খালি পানির বোতল হাতে করে নিয়ে ময়লা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলছে।
এখানে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জাতি জিম্মি নয়। ৬০% বৌদ্ধ, ২০% হিন্দু, ১০% মুসলিম, ১০% খ্রিস্টানের দেশে নেই খুন ধর্ষণ গুম হত্যা মামলাবাজি, অথচ ৯২% মুসলমানের বাংলাদেশে এসবের সঙ্গে রয়েছে খাদ্য ভেজালকারী, সুদখোর-ঘুষখোর আর ভূমিদস্যুর রাহুগ্রাস। দেশ ফোকলা করে দেয়া ঐতিহাসিক ব্যাংক লুটেরা আর চাটার দল নেই। মাঝখানে যে ক’দিন পরিবারকেন্দ্রিক রাজনৈতিক জমিদারি ছিল, তারা জনরোষে পাত্তাড়ি গুটাতে বাধ্য হয়েছে। জাপানের টাকায় নির্মিতব্য এক্সপ্রেস হাইওয়ের সামান্য কাজ টাকার অভাবে বন্ধ আছে, তারা ঋণ করে ঘি খাওয়া জাতি না, টাকা জমলে বাকি কাজ শেষ করবে। রাত গভীরে ক্যান্ডি থেকে আসার পথে কয়েকবার গাড়ি থেমেছে, ফাঁকা রাস্তায় বেকুবের মতো রেড সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না, কারণ এখানে রাশিয়া- ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুতেই শেষ হয়ে গেছে। বিশ বছরের গৃহযুদ্ধ তাদের নিঃশেষ করতে পারেনি। তারা কথিত রাবনের অনুসারী হিসেবে রাক্ষসের জাত, আর আমরা মানুষরূপে রাক্ষসের বাপ খোক্কসে পরিণত হয়েছি। আর এই একটা কারণেই বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না।