ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

রাষ্ট্র এখন নির্যাতন-নিপীড়নের কারাগার: ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার

রাষ্ট্র এখন যন্ত্রণা, অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের কারখানা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র এখন আর রাষ্ট্র নেই। রাষ্ট্র এখন পুরোপুরিভাবে যন্ত্রণা, অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের কারখানা হয়ে গেছে। রাষ্ট্র তখনই একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সফল হতে পারে যখন তিন স্তম্ভ কাজ করে। এখানে একটি স্তম্ভ পুরোপুরিভাবে দখল করে নিয়েছে এবং ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের আত্মাটা তারা (সরকার) ধ্বংস করে দিয়েছে। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় আছেন। গুরুতর অবস্থা। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্বাসিত থেকেও তিনি সংগ্রাম করে চলেছেন এবং সংগঠিত করছেন। অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা আজকে আমাদের সঙ্গে শরিক হয়েছেন। সবাই কিন্তু আজকে এগিয়ে এসেছেন। সুতরাং ঘরে বসে থাকার সময় নেই। আসুন, আমরা সবাই রাজপথে নেমে সমস্ত শক্তিকে এবং জনগণকে সংগঠিত করে এই ভয়াবহ দানব আমাদের বুকের উপর চেপে বসে আছে, তাকে ফেলে দিয়ে এবং পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলি। সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাই।  
তিনি বলেন, অত্যাচার ও নির্যাতন এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এখান থেকে বেরিয়ে আসতে সবাই মিলে একজোট হয়ে যদি লড়াই ও সংগ্রাম না করি তাহলে এখান থেকে কীভাবে বের হবো- তা আমি নিজেও বুঝতে পারি না। তাই এখন জাতীয় ঐক্য দরকার। সমগ্র মানুষদের এক হতে হবে। আজকে কোন দলের কি হলো না হলো- এটা বিষয় না। আজকে জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আজকে জাতির অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে গণমাধ্যমের দুই ভাগ হয়ে গেছে। একটিতে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী। আরেকটি হচ্ছে, যারা এর বিরুদ্ধে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন। যারা সংগ্রাম করছেন তাদের বেশির ভাগেরই চাকরি চলে যায়। তারা বেকার হয়ে গেছেন। তাদের পত্রিকাগুলো বন্ধ হয়েছে। টিভিগুলো বন্ধ হয়েছে। একটার পর একটা মামলা দিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করে রাখা হয়েছে। ৩৪ জন (সাংবাদিক) ইতিমধ্যে নিহত হয়েছে। সাগর-রুনির মামলা তদন্ত প্রতিবেদন এ পর্যন্ত ১০০ বার পিছিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা রাস্তার কর্মী, মাঠের কর্মী, মাঠের মধ্যে লড়াই করি, জেলে যাই, অনেকের ফাঁসিও হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে আমাদের ঈশ্বরদীর প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী ৩০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরের কি ঢিল-টিল মেরেছিলো। ত্রিশ বছর পরে বিচারকরা শাস্তি দিয়েছেন। ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আমাদের হাবিবুল ইসলাম হাবিব- তাকে ৭০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে, এটা ইতিহাস। আমাদের নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করে দিয়েছে। এ রকম ৬৪৮ জনকে গুম করেছে। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করেছে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং করেছে, আমাদের সম্পাদক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। দেশে আছেন এমন অনেক সম্পাদক সাংবাদিকদের নিগৃত হতে হয়েছে, কারাগারে যেতে হয়েছে। এই একটু আগে একজন আমার সঙ্গে দেখা করলেন যে, মাস খানেক আগে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল, এক মাস জেলে থেকে বেরিয়েছেন। কতো বলবো, কার কথা বলবো? অত্যাচার-নির্যাতন এমন একটা পর্যায় চলে গেছে এখান থেকে মুক্তি পেলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে।
ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএফইউজের (একাংশ) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কবি আবদুল হাই শিকদার, কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, ডিইউজের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিকালে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে গত ১৫ বছর ধরে সকল মানুষের ওপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও অবিচার চলছে। এই অবস্থায় আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সংগ্রাম ও যুদ্ধ শুরু করেছি। শুধু বিএনপি নয়, আজকে আমরা সকল রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর অন্যায়কে দূর করার জন্য এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার করার জন্য এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি। ইনশাআল্লাহ, জয় আমাদের সুনিশ্চিত।  

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

মৌলভীবাজারে জাতীয় পার্টির সম্মেলন সম্পন্ন / ‘আমরা আওয়ামী লীগে নেই, বিএনপিতেও নেই

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status