রাজনীতি
অবৈধ ক্ষমতাকে সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিপীড়ন যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে: রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৮:৫৯ অপরাহ্ন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কতৃর্ত্ববাদী শাসনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরাই সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছে। নিপীড়ন-নির্যাতন চরম মাত্রায় নামিয়ে আনা হয়েছে গণতন্ত্রকামী নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের ওপর। রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিপীড়ণ যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে অবৈধ ক্ষমতাকে সুরক্ষার জন্য। বুধবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষ মরণ কামড় দেয়ার জন্য লেলিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। মঙ্গলবার আদালত প্রাঙ্গণে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট আয়োজিত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ফরমায়েশী সাজার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী আইনজীবীদের শান্তিপূর্ণ লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে পুলিশ কান্ডজ্ঞানহীন নারকীয় হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জনের মতো পুরুষ ও মহিলা আইনজীবী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশকে এক উপসংহারহীন পরিস্থিতির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে দেশ থেকে আদালতের ন্যায়বিচারের ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে গেছে। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিদেরসহ লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছেন বিচারিক অসদাচরণের। আওয়ামী চেতনায় রঞ্জিত বিচারকরা অন্যায্য আচরণ করছেন। জেলখানাগুলোতে নেতাকর্মীদের দিয়ে পূর্ণ করার পরও প্রধানমন্ত্রীর আশা মেটেনি। আদালতের বারান্দাগুলোয় হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীদের ভিড়ে দম বন্ধ করার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হাজিরার নামে আদালতকে এখন হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করা হয়েছে। সরকার ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধী নেতাকর্মীদের টুটি টিপে ধরার জন্য আদালতকে ব্যবহার করছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গণতন্ত্রের আওয়াজ পেলেই তার পুলিশ বাহিনীর বুটের আঘাতে সেটি পদপিষ্ট করতে চান। গতকাল ঢাকা জেলা আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের বর্বরোচিত হামলা পূর্বপরিকল্পিত, শেখ হাসিনার অনুমোদনক্রমেই হাইকোর্ট ও জজকোর্টের পুরুষ ও নারী আইনজীবীদের রক্ত ঝরিয়েছে দলদাস পুলিশ। পুরুষ পুলিশের নারী আইনজীবীদের ওপর আক্রমণ সভ্যতার ভয়ঙ্কর কলঙ্ক।
তিনি বলেন, জনগণ এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো গণতন্ত্র, অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পক্ষে। তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সমতা, ন্যায়বিচার ও জনগণের ইচ্ছার পক্ষে। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরলেও আর কোন লাভ হবে না। নির্যাতন ও বৈষম্য রোধ এবং অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কোন বিকল্প নেই। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, গত ২৮শে জুলাই গতকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলায় সারাদেশে মোট আহত হয়েছেন ১৪৩০ জন, মোট মামলা ৩৩৩, গ্রেপ্তার ১৮২০ এবং আসামি ১৪,১৫০ জন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা জহুরুল হক শাহজাদা মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জমান সেলিম, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।