অর্থ-বাণিজ্য
সরকারের ঋণগ্রহণের হার কমানো প্রয়োজন: ডিসিসিআই
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৩ মাস আগে) ১৮ জুন ২০২৩, রবিবার, ৮:২৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৩৩ অপরাহ্ন
দেশের আর্থিক খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ঘোষিত মুদ্রানীতিকে সংকোচনমূলক নীতি হিসেবে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক চাহিদা, আমদানি কার্যক্রমে নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং স্থিতিশীল বাণিজ্য পরিবেশ নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয়গুলোর ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। রেপো ও রিভার্স রেপোর হার যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপো ও রিভার্স রিপো রেটের কার্যকারিতা নিয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। কারণ, ইতোপূর্বেও এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, যা থেকে কাঙ্ক্ষিত সফলতা পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ঋণের সুদের হারের সীমা ৯ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ব্যবস্থার ফলে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সুদের হার ডাবল ডিজিটে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেটি বর্তমান বৈশ্বিক অস্থির অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনায় বেশ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। পাশাপাশি এ ধরনের উদ্যোগ বিশেষ করে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি করবে।’
ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে সরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে ৪৩ শতাংশ, যেটি আগের অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ৪০ শতাংশ। অপরদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে ১০.৯ শতাংশ, যেটি বিগত অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ১১ শতাংশ। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিতিশীল অথনৈতিক পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস পেয়েছে।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মনে করেন, সরকারি খাতে অধিক মাত্রায় ঋণ গ্রহণ, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহকে সংকুচিত করবে। সরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ হ্রাসের জন্য সরকারি ব্যয় কৃচ্ছ্রতা সাধন, সুশাসন, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনা এবং অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনতে কর আহরণের মাত্রা বাড়ানো ওপর আরও বেশি হারে জোরারোপ করা উচিত, এতে করে ব্যাংক খাতের ওপর সরকারের নির্ভরতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।’
বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়হারে স্থিতিশীলতা আনতে ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার মনে করেন, সমন্বিত মুদ্রা বিনিময়হার দেশের মুদ্রাবাজারকে স্থিতিশীল করবে।
খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোরারোপ করেন ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার। আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ হ্রাস করা সম্ভব। খেলাপি ঋণ হ্রাসের জন্য সরকার-গৃহীত ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১’ এর মূল্যায়নে কমিটি প্রণয়নের জন্য ঢাকা চেম্বার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। খেলাপি ঋণ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহকে সংকুচিত করছে। এমতাবস্থায় ডিসিসিআই সভাপতি খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোরারোপ করছে।
পাঠকের মতামত
রাতারাতি বড়লোক হওয়ার চিন্তা বাদ দিতে হবে। আমরা সিঙ্গাপুর , লস অ্যাঞ্জেলেস হয়ে গেছি জাতীয় বালখিল্য কথাবার্তা বাদ দিয়ে প্রকৃত জিডিপি হিসেবে নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। এখন যে জিডিপির কথা শোনানো হয় তাতে বড় আকারের শুভংকরের ফাঁকি আছে। বাস্তব জিডিপি হিসেবে নিয়ে জিডিপি কর জিডিপি ঋণ ইত্যাদি অনুপাত স্থির করতে হবে। খেয়াল খুশির ঋণ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সামষ্ঠিক অর্থনীতিকে দুর্বল করে ফেলেছে। মাইক্রো অর্থনীতি ধ্বংসপ্রাপ্ত ও বৈষম্যের ভারে নুয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন
অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন
অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত
বেশি মূল্যে ডলার কেনাবেচা/ ১৩ ব্যাংকের ব্যাখ্যা চাইলো বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকে দুই অর্থনীতিবিদ/ ব্যাংক ও রাজস্ব খাত এভাবে চলতে পারে না

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]