বিশ্বজমিন
উত্তরাখণ্ডে ১৫ জুনের মধ্যে মুসলিমদের দোকান খালি করার হুমকি দিয়ে পোস্টার
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:২৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
ভারতের উত্তরাখণ্ডে মুসলিমদের দোকান খালি করার নির্দেশ দিয়ে পোস্টার টানানো হয়েছে। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে সেখানে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে বিষয়টি। পোস্টারে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সকল মুসলিম দোকানদারকে দোকান খালি করে দিতে হবে। রাজ্যটির উত্তরকাশীর একাধিক দোকানে সেই পোস্টার সাঁটা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
খবরে বলা হয়, ওই পোস্টারের বিষয়টিকে সমর্থন দিয়েছে স্থানীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। পরিষদের নেতা বীরেন্দ্র রানা বলেন, স্থানীয়রাই এই পোস্টার লাগিয়েছে। কারণ, তারা একটি বিশেষ ধর্মের লোকজনকে আর এখানে দেখতে চান না। স্থানীয়রা শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্যই মুসলিম দোকানদারদের চলে যেতে বলছেন। ওই নেতার অভিযোগ, মুসলিমরা প্রথমে এই এলাকায় ব্যবসা করতে আসে এবং এরপর তারা হিন্দু মেয়েদের টার্গেট করে।
ওই পোস্টারে লেখা হয়েছে দেবভূমি রক্ষার অভিযান চলছে। সেখানে হিন্দিতে লেখা হয়েছে, লাভ জিহাদিদের বলা হচ্ছে মহা পঞ্চায়েতের নির্দেশ মোতাবেক ১৫ জুনের মধ্যে দোকান খালি করে দিতে হবে। যদি এটা না হয় তবে সেটা এবার সময়ের উপর ছেড়ে দিতে হবে।
এদিকে এই বিতর্কিত পোস্টারগুলিকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সালিম নামে এক মুসলিম ব্যবসায়ী দেরাদুনে তার ভাইয়ের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে। তিনি তার সম্পদ হারানোর জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
এদিকে একাধিক মুসলিম পরিবার পুরোলার এসডিএমের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাদের দাবি, ২৯শে মে থেকেই তাদের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এর ফলে তাদের মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। তারা তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষার নিশ্চয়তা চাইছেন। পাশাপাশি তারা দোকান খুলতে চান বলেও জানান ওই স্মারকলিপিতে। বিষয়টি নিয়ে উত্তরকাশীর পুলিশ সুপার অর্পণ যদুবংশী জানিয়েছেন, আমরা ওই পোস্টারগুলি সরিয়ে ফেলেছি। যে সমস্ত সমাজবিরোধী এই পোস্টার দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মূলত গত ২৬শে মে থেকে উত্তরকাশিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এক মুসলিম যুবক এক হিন্দু মেয়েকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এরপর থেকেই অশান্তির আশঙ্কা বিরাজ করছে সেখানে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ঘটনার জেরেই মুসলিম দোকানদারদের চলে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলো নিয়মিত মিছিল-সমাবেশও করছে সেখানে।