অর্থ-বাণিজ্য
রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপ জরুরি: ডিসিসিআই
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৯:২০ অপরাহ্ন
বিদ্যমান সংকটময় ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে সরকারের এ বিশাল আকৃতির বাজেট প্রণয়ন করেছে। তবে দেশীয় অর্থনীতিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সুযোগ তৈরি, রাজস্ব ঘাটতি মেটানো ও অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ স্থিতিশলতা আনায়নে আমরা বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছি তা মোকাবিলায় বাজেটে সরকার ব্যবসা ও অর্থনীতির সমন্বয় করা হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। ডিসিসিআই আয়োজিত এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত ব্যক্তিগত আয়ের সীমা ৩,৫০,০০০ টাকা করেছে, তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে সেটাকে ৫,০০,০০০ টাকা করা প্রয়োজন বলে মনে করে ডিসিসিআই, এছাড়াও করযোগ্য নয় এমন টিনধারীদের উপর নূন্যতম ২০০০ টাকা আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর উপর করের বোঝা তৈরি করবে, তাই এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। কর আদায়ের জন্য এজেন্ট নিয়োগের বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে এজেন্টদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষনের আওতায় রাখলে করজাল বৃদ্ধি পাবে বলে, আমরা বিশ্বাস করি। ভ্যাট টার্নওভারের সীমা বৃদ্ধি সহ ভ্যাট রিটার্ন ও অডিট প্রক্রিয়া অটোমেশনের করা প্রয়োজন। এছাড়া রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যকার পার্টনারশিপ বাড়নোর প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার।
করপোরেট কোম্পানির উইথহোল্ডিং কর রিটার্নের সংখ্যা ২৯টির পরিবর্তে ১২টিতে নামানোর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে, ডিসিসিআই মনে করে করপোরেট করের হার না কমানোর ফলে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশে পিছিয়ে পড়বে। করপোরেট করের হার এবং ক্যাশ লেনদেনের সীমা ৩৬ লক্ষ টাকার পরিবর্তে বার্ষিক খরচের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা প্রয়োজন, তাই বিষয়টি পুণঃবিবেচনার জন্য আহ্বান জানাচিছ। এছাড়া নন-লিস্টেড কোম্পানির কর হার ২.৫% হ্রাস করা প্রয়োজন।
স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনের উৎপাদনের উপর ভ্যাট আরোপের কারণে এর উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে, ফলে আমাদের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাই এটা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া সফটওয়্যার, ইলেটকট্রনিক্স, সোলার এনার্জি, লিফট ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি খাতের পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ১০% হতে ১৫% বৃদ্ধির কারণে এখাতসমূহে স্থানীয় শিল্পের সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হবে।
জ্বালানি খাতে মূল্য সহনীয় রাখতে বাজেটে ১৩ ধরনের পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু ও ভ্যাট প্রত্যাহরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে ডিসিসিআই এবং ডিজেল আমদানিতে ৫% ডিউটি কমানোর পাশাপাশি উৎসে কর সমন্বয় করার বিধানের কারণে তেলের মূল্য কমবে, যেটি মূল্যস্ফীতি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সারের দাম কম রাখতে গ্যাসের মূল্য কমানোর পাশাপাশি এ খাতে ব্যবহৃত ডিজেলে দাম কমানো প্রয়োজন এবং কৃষিখাতের আধুনিকায়নে যন্ত্রপাতি আমদানিতে কর অব্যাহত অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
বাজেটে ব্যাংকিং খাত হতে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৪.৭০শতাংশ বেশি। সরকারের এ ব্যাংক নির্ভরতা বৃদ্ধির কারণে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাবে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো এবং বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে ব্যাগেজ রুল সংশোধন ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।