রকমারি
বিশ্বের বৃহত্তম উদ্ভিদের সন্ধান মিলল অস্ট্রেলিয়ায়
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ বছর আগে) ২ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৩০ অপরাহ্ন
অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা পৃথিবীর বৃহত্তম উদ্ভিদ আবিষ্কার করেছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের অগভীর পানিতে বিশ্বের বৃহত্তম এই উদ্ভিদ (সিগ্রাস) সনাক্ত করা হয়েছে। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও মহাসাগর ইনস্টিটিউট-এর একজন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এলিজাবেথ সিনক্লেয়ার জানাচ্ছেন এই সিগ্রাস, পসিডোনিয়া অস্ট্রালিস নামে পরিচিত একটি সামুদ্রিক উদ্ভিদ। শার্ক বে-তে ১১২ মাইল (১৮০কিলোমিটার) এরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে এই এলাকাকে সুরক্ষিত প্রান্তর বলে ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্ভিদটি এত বড় হয় কারণ এটি নিজেই ক্লোন তৈরি করতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি প্রজননের একটি পদ্ধতি যা প্রাণীজগতে বিরল। যদিও এটি কিছু পরিবেশগত পরিস্থিতিতে ঘটে এবং কিছু গাছপালা, ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে প্রায়শই এই রকমের প্রজনন দেখা যায়।
রয়্যাল সোসাইটি বি জার্নালে প্রকাশিত সিগ্রাসের উপর গবেষণাকারী লেখক সিনক্লেয়ার জানিয়েছেন, "আমাদের প্রায়ই জিজ্ঞাসা করা হয় যে সমুদ্রের তলদেশে কতধরনের সিগ্রাস আছে। আমরা এটির উত্তর খোঁজার জন্য জেনেটিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেছিলাম। যে উত্তর সামনে এসেছে তা আমাদের বিস্মিত করেছে।
বিজ্ঞানীরা সিগ্রাসের নমুনা থেকে ডিএনএ সিকোয়েন্স করতে সক্ষম হন, যা প্রমান করে যে এটি একটি একক উদ্ভিদ। বৃদ্ধির জন্যে এরা রাইজোমগুলিকে (রুটস্টালক্স) বাইরের দিকে প্রসারিত করে। একমাত্র পার্থক্য হল সিগ্রাস-এর রাইজোমগুলি একটি বালুকাময় সমুদ্রতলের নীচে থাকে তাই তাদের দেখতে পাওয়া যায় না, কেবল পানির মধ্যে অঙ্কুরগুলি দেখা যায়। সিনক্লেয়ার বলছেন, আরও মজার বিষয় হলো যে অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় এদের ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ। সিগ্রাসগুলি বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক উপকূলরেখা বরাবর বিস্তৃত। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, ক্লোনিং এই ধরণের উদ্ভিদকে তার বাসস্থান বিশেষ করে লবণাক্ত পানি, উচ্চ মাত্রার আলো এবং ব্যাপক তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে।
সিগ্রাস এর এই তৃণভূমিটি প্রায় ২০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে যা নাকি ব্রুকলিনের চেয়েও বড়। ইউএসডিএ ফরেস্ট সার্ভিস অনুসারে সিগ্রাস এর ক্লোনটি ১০৬ একর জুড়ে বিস্তৃত, যার মধ্যে ৪০,০০০ টিরও বেশি পৃথক গাছ রয়েছে। গবেষকরা বলছেন ,শার্ক বে উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত সিগ্রাস খুব বেশি প্রাচীন নয় , এর বয়স প্রায় ৪,৫০০ বছর। তবে পশ্চিম ভূমধ্যসাগরে আবিষ্কৃত পসিডোনিয়া ওশেনিকা উদ্ভিদ বা সিগ্রাস যা ৯.৩ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত এটি ১ লক্ষ বছরেরও বেশি পুরানো হতে পারে। সিনক্লেয়ার বলেন, "সিগ্রাস ক্লোনগুলি অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকে থাকতে পারে ,কারণ তারা উদ্ভিজ্জ প্রজননের পরিবর্তে রাইজোম সম্প্রসারণের উপর নির্ভর করে"।
সূত্র: edition.cnn.com