প্রথম পাতা
আসিফের নাটকীয় উত্থান
মোহাম্মদপুরের নবাব
শরিফ রুবেল
২২ মে ২০২৩, সোমবার
আসিফ আহমেদ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। অতীতে কখনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। হঠাৎ রাজকীয়ভাবে তার আবির্ভাব ঘটে। অদৃশ্য খুঁটির জোরে হয়ে যান ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তখন থেকেই উত্থান শুরু। কাউন্সিলরের চেয়ারে বসেই জিম্মি করে ফেলেন পুরো মোহাম্মদপুর এলাকা। তিন বছরে গাড়ি বাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। দখল করেছেন একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট ও জমি। রাজিব যুগের পতনের পরে আসিফই এখন এই এলাকার নয়া সুলতান।
সরজমিন দেখা যায়, শুধু বছিলা থেকে শিয়া মসজিদ নয়, পুরো মোহাম্মদপুরে আসিফ চলেন নিজস্ব বাহিনী নিয়ে। কম বয়সী কিশোরদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন গ্যাং বাহিনী। এই বাহিনী সংগঠিত করেছেন আসিফের ঘনিষ্ঠজন বাদল ওরফে কিলার বাদল, সাব্বির ও ভাঙাড়ি রনি। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি, মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ৩৩নং ওয়ার্ড। শুধু এই এলাকা নয় আসিফের সাম্রাজ্য ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোড থেকে গাবতলী পর্যন্ত বিস্তৃত। শত শত লোক নিয়ে নিয়মিত মোটরসাইকেল শোডাউন দেন। মাঝেমধ্যেই বাহিনী নিয়ে যেখানে সেখানে হামলে পড়েন। আদায় করে নেন নানা সুবিধা। প্রতিবাদ করলেই নেমে আসে অত্যাচার। সাবেক কাউন্সিলর রাজিবের পতনের পরে তিনি এখন মোহাম্মদপুরের ভাইজান বলে পরিচিত। গেল দেড় বছরে অনেকে ভাইজান বাহিনীর ভয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছেন। এত অল্প সময়ে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে কাউন্সিলরের চেয়ারে এত মধু?
২০২০ সালে নির্বাচনের আগে আসিফের নামে গুলশান থানায় অস্ত্র মামলা ছিল। মামলা নং৭৫(৬)০৭। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খাটেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন আছে। তবে নির্বাচনী হলফনামায় তিনি মামলার কথা উল্লেখ করেননি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মপুরে ময়লার ভ্যান সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করেন কাউন্সিলর আসিফ আহমেদের বন্ধু মাহবুবুর রহমান রনি। ওয়ার্ডের প্রায় ৭ হাজার বাসাবাড়ি ও ফ্ল্যাট থেকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে ময়লার বিল তোলেন ভ্যান সার্ভিসের কর্মীরা। এতে মাসে প্রায় ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। তবে ওই টাকা থেকে অর্ধেক নেন কাউন্সিলর আসিফের বন্ধু রনি। সম্প্রতি ভ্যান সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এককালীন ও মাসিক চাঁদা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় ময়লার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে বন্ধু মাহবুবুর রহমান রনিকে দিয়ে সিটি কর্পোরেশনে দরপত্র জমা দিয়েছেন আসিফ।
অনুসন্ধানে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের শ্যামলাপুর মৌজার বাহেরচর ও লুটেরচর এলাকায় আসিফের বেশকিছু জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। জমিগুলো সিএস ৩৪৩ ও ৩৪৪, আরএস ২৫০২ দাগে ৭৮ শতাংশ। জমিটি বালু দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়েছে। আগে জমিটি সেজান জুসের মালিকানায় ছিল। এ ছাড়া শ্যামলাপুর মৌজায় আরএস ২৬৬৪ দাগে ৯৩ শতাংশ জমি আছে। জমিটি আগে লুটের চর বড় মসজিদ ও বছিলা মসজিদের মালিকানায় ছিল। জমিটি দখল করার অভিযোগ আছে। চরওয়াশপুরে আসিফের নামে ৫২ শতাংশ জমি আছে। এ ছাড়া লিমিটেড ৩ নম্বর রোডে ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরপাশে খান টিম্বার এন্ড স’ মিলের পাশে সিএস ৭৩৫ ও আরএস ৫২৭ দাগে ৫ কাঠা জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। দখলের পরে বিল্ডিং নির্মাণের জন্য জমিটি আজমেরী হাউজিং নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জমিটির মালিক ছিলেন আয়নাল মিয়া।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদপুরের জাকের ডেইরি ফার্মের রাস্তার অপরপাশে মোহাম্মাদিয়া হোমসের ভেতর রামচন্দ্রপুর মৌজায় এসএ ৫৮২ দাগে ১০ শতাংশ জমি দখল করে ৫ শতাংশে বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে রাখা হয়েছে। সরজমিন দেখা যায়, বাকি ৫ শতাংশ জমিতে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে। বিল্ডিংটির ৩ তলা সম্পন্ন হয়েছে। আসিফ ও তার বন্ধু শাহিন এই বিল্ডিং নির্মাণ করছেন। এই দাগের জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এ ছাড়া ওই জমির ওপর হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা জারি রয়েছে। তা অমান্য করেই আসিফের ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। একই মৌজার গ্রিনসিটি মেইন গেটের সঙ্গে সিএস ৩৫৭ দাগে ৫ কাঠা জমি দখল করে সীমানা প্রচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ভেতরে নির্মাণ কাজ চলছে। এর আগে জমিটি তরুণ কুমার কুণ্ডু নামে এক লোকের দখলে ছিল। এদিকে নির্বাচনের পরেই শিয়া মসজিদ কাঁচা বাজারে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের জায়গা দখল করে একটি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। দোকান নং ৫১। এই দোকানটি মাসে ৮ হাজার টাকায় ভাড়া দেয়া আছে। অভিযোগ রয়েছে, শিয়া মসজিদ কাঁচা বাজারের পাশে মোড় সংলগ্ন মোসাদ্দেক ভানু বেগম নামে এক মহিলার একটি দোকান দখল করেছেন আসিফ আহমেদ। দোকান নং গ-১৬। দোকানটি দখল করে হোটেল নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। এই হোটেল থেকে মাসে ১২ হাজার টাকা ভাড়া তোলা হয়। দখল করা দোকান দুটি আসিফের লোক লিটনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
দখল হওয়া ১৬নং দোকানের মালিক মোসাদ্দেক ভানু বেগম মানবজমিনকে বলেন, ১৯৮০ সালে এখানে খাল ছিল। আমি মাটি ভরাট করে বস্তা দিয়ে বেড়া দিয়ে ভাতের ব্যবসা করেছি। প্রায় ৪০ বছর ভাত বিক্রি করেছি। এই দোকানটিই আমার আয়ের একমাত্র সম্বল ছিল। জায়গাটি ৪০ বছর আগলে রেখেছি। কিন্তু গত বছর কাউন্সিলর আসিফ তার লোকজন নিয়ে এসে আমাকে দোকান ছাড়তে বলে। তখন আমি অনেক কান্নাকাটি করেছি। কিন্তু আসিফ শোনেনি। আমাকে বের করে দিয়ে দোকান দখল করে নেয়। আমি অনেক নেতার কাছে গেছি, থানায় গেছি। কেউই আমার কথা শোনেনি। সবাই আসিফকে ভয় পায়। ৬ মাস আগে ছাপড়া ভেঙে পাকা দোকান করেছে। আসিফ আমাকে বলেছে, মাসে দুই হাজার টাকা দিবে। আর দোকানের দাবি ছেড়ে দিতে বলে। আমি বলেছি টাকা লাগবে না। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিছি।
এ ছাড়া আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিংয়ের ৮ নম্বর রোডের মাথায় বিলাসবহুল একটি ৮ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন আসিফ। বাড়ির নাম ‘ডায়মন্ড রিজেন্সি’ বাড়ি নং # ৫৪/১৯ বি, ব্লক # ক # ১২। বাড়িটি নির্মাণে প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া কাউন্সিলর আসিফের ব্যবহার করা ৩টি গাড়ির সন্ধান মিলেছে। এরমধ্যে এক্সিও ব্যান্ডের ঢাকা মেট্রো গ ৩৫-৬১-১৬ ও নোহা ২০১৬ মডেলের ঢাকা মেট্রো গ ২৬-৮০-০০। তবে একটি গাড়ি লুকিয়ে রাখায় নাম্বার প্লেট সংগ্রহ করা যায়নি। এ ছাড়া মোহাম্মাদীয়া হাউজিংয়ের মেইন রোডে তায়ীব ডেন্টালের পাশে হাবিবি মিঠাই নামে আসিফের একটি মিষ্টির দোকান রয়েছে। এ ছাড়া সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের শ্যামলাপুর গ্রামে সাফা হাউজিংয়ে ১ একর জামির উপর আলীবাবা এগ্রো নামে কাউন্সিলর আসিফের একটি গরুর ফার্ম রয়েছে। খামারে ছোট বড় প্রায় ৩০০ গরু বাছুর রয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ফার্মটি চালু করা হয়।
শ্যামলাসী গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, আসলে তারা জমি কিনে না। কাগজ কিনে তারপরে দখল করে। যে জমিতে মালিকানা নিয়ে একটু জটিলতা আছে। সেটাই তারা কাগজ কিনে দখলে নেয়। যেদিন জমি দখলে নিলো সেদিন কাউন্সিলর বিপুলসংখ্যক লোকজন নিয়ে এসেছিলেন। মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসেছিল। বালু ভরাটের দিনও প্রচুর লোক নিয়ে আসে। তাই কেউ ভয়ে কথা বলার সাহস পায়নি।
জানা গেছে, কিশোর গ্যাং লিডার সাব্বির, মাসুদ খান ওরফে কালা মাসুদ ও মিলাল তাদের গ্যাং বাহিনী নিয়ে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ে প্রায়ই তাণ্ডব চালায়। এতে প্রায় সময়ই আসিফ নিজে উপস্থিত থাকেন। অভিযোগ আছে, নবীনগর হাউজিংয়ে কিশোর গ্যাং দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছেন আসিফ আহমেদ। এই হাউজিংয়ে আসিফের হয়ে দখলবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন তাজবীর হোসেন তাজু ও আব্দুর রহমান। তাজু ও রহমান এই দুজনকে নিয়ন্ত্রণ করেন আসিফের ফুফা নুরুল হক। তাজু ও রহমান নবীনগর হাউজিংয়ের অন্তত ৩৭টি প্লট দখল করে রেখেছে। কোন রোডে কোন প্লট দখল করা হয়েছে সেই তালিকা ও সকল তথ্য এই প্রতিবেদকের হাতে আছে। অভিযোগ রয়েছে, কাউন্সিলর আসিফ আহমেদের সহায়তায় দখলের কাজ হয়। তবে তাজু ও রহমানের সঙ্গে সখ্যতার বিষয়টি আসিফও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি নবীনগর হাউজিং বাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি। তাজু ও রহমান ওই কমিটির সদস্য। তাই তাদের সঙ্গে আমার ওঠাবসা রয়েছে। সম্পর্কও রয়েছে। তবে তাদের দখলের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত নই।
হাউজিংয়ে ১০ নম্বর রোডে দখল হওয়া ৪৮ নং প্লটের মালিক কাতার প্রবাসী হুমায়ুন খালি। তার ভাই খালিদ আহমেদ বলেন, জমিটি আমার বড় ভাইয়ের। প্লট কিনে হাউজিং থেকে জায়গা বুঝে পেয়েও কাজ হচ্ছে না। আমাদের অনুপস্থিতিতে তাজু, রহমান দখল করে নিয়েছে। দখল হওয়ার পরে আমি কাউন্সিলরের কাছে গেছিলাম। কিন্তু তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। তখন আমার সন্দেহ হয়েছিল, এই চক্রে তিনি জড়িত থাকতে পারেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম দখলকারী তাজু ও আব্দুর রহমান আসিফের ঘনিষ্ঠ লোক। সবশেষ ২০২১ সালে তারা টিনশেড তৈরি করে ভাড়া দিয়ে দেয়। এরপরে আর আমরা ওখানে যেতে পারিনি। হাউজিংয়ের মালিকরাও ভয়ে কথা বলে না।
ওয়ার্ডের ৫ ষ্পট থেকে মাসে কোটি টাকা চাঁদাবাজি:
মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়ে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের প্রাচীর ঘেঁষা সড়ক বিভাগের জায়গা দখল করে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ছোট-বড় প্রায় ২০টি ফুল ও ফলের নার্সারী বসানো হয়েছে। নার্সারীগুলোর মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এককালিন অগ্রিম টাকা দিয়ে জায়গা পেয়েছে। প্রতিটি নার্সারী থেকে ১ লাখ টাকা অগ্রিম নেয়া হয়েছে। আকার ভেদে তাদের প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া দিতে হয়। এতে মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকা ভাড়া তোলা হয়। পুরো নার্সারী নিয়ন্ত্রণ করেন আসিফের বন্ধু রাইসুল ইসলাম রোমেন।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের আল্লাহ করিম মসজিদ থেকে বছিলা তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত ফুটপাথের ধারে প্রায় ৩০০টি ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে। এসব দোকান নিয়ন্ত্রণ করেন বাদল ওরফে কিলার বাদল। প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৩৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। এর মধ্যে ছাপড়া দিয়ে তৈরি করা ৫টি সবজির দোকান রয়েছে। তাদের থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। এতে এই একটি স্পট থেকেই প্রতিদিন ১ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। মাসে এই চাঁদার পরিমাণ ৩৫ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। বাদল এই টাকা তোলার দায়িত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ইউনিট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সালামকে। সালাম প্রতিদিন টাকা তুলে রাতে বাদলকে বুঝিয়ে দেন। পরে বাদলের মাধ্যমে টাকার একটি অংশ চলে যায় আসিফের কাছে। এ ছাড়া ঢাকা উদ্যান বড় মসজিদ থেকে চন্দ্রিমা হাউজিং পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার ফুটপাথ জুড়ে ২৫০’র অধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান আছে। এসব দোকান থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা ভাড়া তোলা হয়। এতে প্রতিদিন প্রায় ৬২ হাজার টাকা আদায় হয়। এখানেও চাঁদার পরিমাণ মাসে ১৮ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এসব টাকা তোলেন ছোট মোশারফ। পরে তিনি রোমেনকে টাকা বুঝিয়ে দেন। পরে রোমেনের মাধ্যমে টাকার একটি অংশ চলে যায় কাউন্সিলরের কাছে।
সবচেয়ে বেশি অঙ্কের চাঁদাবাজি হয় তিন রাস্তার মোড়ের আশপাশের ফাঁকা জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা পিকআপ স্ট্যান্ড, লেগুনা স্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড, ইজিবাইক স্ট্যাান্ড ও মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড থেকে। এখান থেকে মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা চাঁদা তোলা হয়। কয়েকদিন আগেই এই স্ট্যান্ডগুলো নিয়ন্ত্রণ করতো লাল্লু মিয়া, ঘাট বাবু, গ্যারেজ সোহেল, বাত রাসেল ও মাহি। তবে সর্বশেষ মাহি ও বাত রাসেল গ্রুপের দ্বন্দ্বে খুন হয় লেগুনার লাইনম্যান নবী হোসেন। এরপর থেকেই এই গ্রুপ গা ঢাকা দিয়েছেন। সেই সুযোগে সবগুলো স্ট্যান্ডের একক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ওহিদ। ওহিদ টাকা তুলে আসিফের বন্ধু রোমেনকে দেন। পরে রোমেন থেকে টাকা চলে যায় কাউন্সিলরের পকেটে। আসিফ কাউন্সিল হওয়ার পরে এসব স্ট্যান্ড প্রশস্ত করে আরও বড় করা হয়েছে। ওহিদের চাঁদা তোলার একটি ভিডিও এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে।
জানা যায়, গাবতলী থেকে বেড়িবাঁধ রোডে ১৫০টি লেগুনা চলে। প্রতিদিন লেগুনা প্রতি ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এতে মাসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় হয়। তিন রাস্তা মোড়ে বাইক স্ট্যান্ডেও হয় চাঁদাবাজি। বাইক থামালেই দিতে হয় ১০ টাকা। যা আদায় করে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ। এ ছাড়া তিন রাস্তার মোড় ও আশপাশে প্রায় ১৩০০ সিএনজি রয়েছে। সিএনজি নিয়ন্ত্রণ করে শ্রমিক লীগ নেতা ও ওহিদ। প্রতিদিন সিএনজি প্রতি ৪০ টাকার টোকেন দেয়া হয়। এতে দৈনিক প্রায় ৫২ হাজার চাঁদা তোলা হয়। এই টাকা ওহিদ থেকে রোমেন। পরে রোমেন আসিফের কাছে যায়। এ ছাড়া মাসে সিএনজি প্রতি ১ হাজার টাকা রুট খরচ আদায় করা হয়। তিন রাস্তার মোড়ে পুলিশ বক্সের পাশেই ইজিবাইক ও পিকআপ স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা তোল হয়। এটা নিয়ন্ত্রণ করেন ভোলা রিপন। প্রতি টিপে অটো প্রতি ২০ টাকা নেয়া হয় এবং পিকআপ রাখলে ১৫০ টাকা চাঁদা নেয়া হয়। এখানে থেকে দিনে প্রায় ৫ হাজার টাকা তোলা হয়। পরে রোমেনের মাধ্যমে এই টাকার অর্ধেক যায় কাউন্সিলরের পটেকে। মোড় থেকে ঢাকা উদ্যান পর্যন্ত ৩টি ইজিবাইক ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড আছে। এই স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করেন শ্রমিক লীগ নেতা মো. তাজেল। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। তাজেল এই টাকা রোমেনকে বুঝিয়ে দেন। তুরাগ পাড়ের ট্রলার নিয়ন্ত্রণ করেন ছাত্রলীগ নেতা অনিক। ট্রলার প্রতি ১০০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। সেই টাকা কিশোর গ্যাং নেতারা ভাগ করে নেন। এ ছাড়া তুরাগ হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং, নবীনগর হাউজিংয়ে অন্তত ৪০০ বাসাবাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি বাসা থেকে সংযোগ বাবদ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা নেয়া হয়। এই টাকা তোলেন গালকাটা মোশারফ। রোমেনের কাছে টাকা পৌঁছে দেয়া হয়। পরে রোমেন থেকে টাকা আসিফের কাছে চলে যায়।
মোহাম্মদপুর কালভার্টের পাশে ভোলা সমিতির দোতলা বিল্ডিং দখল করে ওয়ার্ড যুবলীগের অফিস করা হয়েছে। রাজিবের পতনের পরে স্থানীয় মান্নান নামের এক লোক এটার দখলে ছিলেন। পরে মান্নানকে হটিয়ে ওই বিল্ডিংয়ের দখল নেয় আসিফ। এ ছাড়া বিল্ডিংয়ের নিচতলায় দুইপাশে ৬টি দোকান থেকে দোকান প্রতি মাসে ভাড়া তোলেন ৬ হাজার টাকা। এই ভাড়া তোলেন আসিফের বন্ধু রাইসুল ইসলাম রোমেন। দখল করা এ বিল্ডিংয়ে নিয়মিতই বসেন কাউন্সিলর আসিফ। এ ছাড়া তিন রাস্তার মোড়ের পাশে বালুর মাঠ এলাকায় কবরস্থানের সামনের সড়ক বিভাগের জায়গা দখল করে ইউনিট যুবলীগ ও ৩৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের অফিস করা হয়েছে। জানুয়ারিতে ওই অফিস উদ্বোধন করেন আসিফ।
স্থানীয়রা জানান, কোথাও ভবন নির্মাণ করতে গেলেই আসিফ তার বাহিনী দিয়ে বাধা সৃষ্টি ও চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেন। ওয়ার্ডের ছোট-বড় বাজারগুলো দখল করে নিজের পছন্দের লোককে সভাপতি সম্পাদক করা হয়েছে। সম্প্রতি কাটাসুর বাজার ও জনতা বাজারের কমিটি ভেঙে দিয়ে নিজের লোক বসিয়েছে। বাদ যায়নি মসজিদ কমিটিও। ওয়ার্ডের প্রায় প্রতিটি মসজিদে নিজের লোককে সভাপতি করা হয়েছে। যেখানে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেন সেখানেই দুইটি কমিটি তৈরি করে বিবাদ সৃষ্টি করেন। অভিযোগ আছে- কথা না শুনলেই মসজিদে ঢুকে ঈমাম ও মুসল্লিদের মারধর করেন আসিফ আহমেদ। গত ৫ই মে মোহাম্মদপুর হাউজিং লিমিটেডের কুবা মসজিদে জুমার নামাজে খুতবায় মাইক ব্যবহারকে কেন্দ্র করে ঈমামকে গালাগাল করেন কাউন্সিলর। এ ছাড়া সাতমসজিদ হাউজিংয়ের ভাঙা মসজিদে নামাজ চলা অবস্থায় জুতা পরে ঢুকে ঈমামকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করেন আসিফ। এই দুটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ আছে এই প্রতিবেদকের হাতে।
শিয়া মসজিদ, কাটাসুর, ঢাকা উদ্যান, বছিলা, মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডের আশপাশে প্রায় ১৩টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে এমন অভিযোগ পুরোনো। হোটেলগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন আসিফের বন্ধু রোমেন। আবাসিক হোটেলগুলো থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতিটি থেকে ২ হাজার করে টাকা নেয়া হয়। টাকা না দিলেই হোটেলে তালা দেয়া হয়।
মোহাম্মদপুরের বছিলায় লাউতলা খালের জায়গা দখল করে দুটি ১০ তলা ভবন নির্মাণ হয়েছে এমন অভিযোগে সিটি করপোরেশন ভবন দুটি ভাঙতে লাল চিহ্ন একে দিয়ে যায়। তবে এর কয়েক দিন পরেই ওই ভবন দুটি পাশ কাটিয়ে খালের কিছু অংশ খনন করে কাজ শেষ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে সিটি করপোরেশন ভবন দুটি এড়িয়ে খনন কাজ শেষ করে। অভিযোগ আছে, এ কাজের জন্য কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ দুই ভবন মালিকের কাছে থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা সালামি নিয়েছেন।
সাতমসজিদ হাউজিংয়ের ভাঙা মসজিদের পাশে নিসর্গ বাস স্ট্যান্ডে মাদকের স্পট। এই স্থান থেকে পুরো মোহাম্মদপুরে মাদকের সাপ্লাই হয়। মাদক কারবারীদের কাছে থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। এখান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা আসে। চাঁদা আদায়ের কাজটি করেন কাউসার। পরে কাউসার টাকা বুঝিয়ে দেন আসিফের বন্ধু রোমেনের কাছে। রাতে রোমেন সেই টাকা কাউন্সিলরের হাতে পৌঁছে দেন।
আসিফের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, অসুস্থ হলেই তিনি দেশের বাহিরে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসার জন্য তিনি একাধিকবার মালয়েশিয়া গিয়েছেন। এ বিষয়টি আসিফ আহমেদও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আমার পরিবারের সেকেন্ড হোম মালয়েশিয়া। এটা ১৪ বছর আগে থেকেই। অভিযোগ রয়েছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আসিফের হোটেল ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়া পূর্ব মালয়েশিয়ার সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা সাবাহ প্রদেশে কাউন্সিলর আসিফের বিশাল এক পাম বাগান রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশি প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে আসিফ বলেন, মালেশিয়ায় আমার কোনো ব্যবসা নেই। কোনো পাম বাগানও নেই।
কাউন্সিলর আসিফের বক্তব্য-
যারা আপনাদের কাছে অভিযোগ করেছে তারা কীভাবে জানলো? আমি বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছি। আমি কি জমি কিনেছি? কেউ এমন কথা শুনেছে? বাহেরচরে আমি ৯৩ শতাংশ জমি কিনেছি। আপনি ভূমি অফিসে গিয়ে জেনে নিবেন। তবে ওটা নির্বাচনের আগে কেনা। ওখানে ৭৮ শতাংশ কোনো জমি আমার নেই। আমি কোনো জমি দখল করিনি। কেউ এমন কথা বলতে পারবে না। জাকের ডেইরির পাশে আমার ৫ কাঠা কোনো জামি নেই। ওখানে আমার পৌনে দুই শতাংশ জায়গা আছে। তাও নির্বাচনের আগে কেনা। আজিজ আহমেদের কাছ থেকে কিনেছি। দাগ নম্বর জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, দাগ নম্বর কতো তা আমি বলতে পারবো না। আপনি কেনো ফোন করেছেন এবং যে অভিযোগগুলো করেছে অথেন্টিক তথ্য নিয়ে আসবেন। আমি কাউন্সিলর হওয়ার পরে কোনো জমি কিনি নাই। আর আমার বাপের যে পরিমাণ জমি আছে ওগুলো যদি বিল্ডিংও বানাই দশ বছর সময় লাগবে। আমি ফকিন্নির ছেলে না। একটু জেনে নিবেন। গরুর খামারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার যদি এগ্রো ফার্ম থাকে দুদকে খবর দেন পুরো ফার্মটা ভেঙে দিক। আমার গরুর খামার আছে মাত্র আপনার কাছ থেকে শুনলাম। আমি নবীনগর বাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি। যদি তাজুর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে আইনত ব্যবস্থা নিতে পারেন। আমি সকল সহযোগিতা করবো। আমি যেহেতু সমিতির সভাপতি আর রহমান, তাজু ওখানের সদস্য সেজন্যই তাদের সঙ্গে আমার ওঠাবসা। ফুটপাথে যে চাঁদাবাজি হয়, ওটা আমিও বহুবার নির্মূলের চেষ্টা করেছি। যেখানে চাঁদাবাজি হয় খবর পেলেই পুলিশ নিয়ে গিয়ে হাতেনাতে ধরছি।
পাঠকের মতামত
The reporter deserves thanks from most people of this country . This is just a tiny part of overall picture which reflects what has been taking place throughout the country at the highest political circle as the country owned by some zaminders .
Chorer Mayer Baro Ghala.
Manab Zamin Editor, I live in this area. Thanks for letting us know the crime of a criminal, Asif Ahmed.
একমাত্র সমাধান। ক্রস ফায়ার। কিন্তু আমাদের দেশের এক শ্রেনির মানবাধিকার রক্ষার লোকজন আছে না! কোথাকার কোন কাউল্লা গেদু,গলাকাটা জুম্মন,তেড়া আজিজ যেই না ক্রস ফায়ার এ পরল,শুরু হয়ে গেল এদের মাথা ব্যাথা।
I've full respect for RAB. I'm sure that RAB isn't sitting idle.
দেশটা এখন মাস্তানের হাত থেকে সরে গিয়ে মাফিয়াদের হাতে পড়ছে। মাস্তান এদেশে সব সময় ছিল কিন্তু গত কয়েকবছর মাফিয়া রাজত্ব শুরু হয়েছে এসব তার নমুনা মাত্র।
অভিযোগের পাহাড়।প্রশাসন নীরব,নির্বিকার।তাহলে মানুষ কোথায় খুঁজবে তার সমস্যার সমাধান?
ভালো করে দেখলে দেখা যাবে ঢাকা শহরের সকল কাউন্সিল এই মধু নিয়া নিয়মিত খেলে,কেউ সাহস দেখাইয়া প্রকাশ করে কেউ করে না
প্রশাসন কি জানতনা?
এমন সত্য রিপোর্টের জন্য প্রতিবেদক কে ধন্যবাদ। এ বিষয়ে সরকারের নজরধারী ও কঠিন ব্যবস্থা গ্রহন জরুরী।
রিপোর্টার দীর্ঘজীবী হোক। সত্য , সাহসী মএবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য প্রতিবেদককে ভালবাসার সহিত ধন্যবাদ।
তাহলে কি এই পিয়াঁজ বেচা সুলতানের বাচ্চা ফেক সুলতান বরিশালকেও হার মানিয়েছে ?
দুঃখের সাথে লিখছি, পুলিশ/র্যাব হয়ত এই লোককে ধরল। কিন্তু সাথে সাথে একদল আইনজীবী এই লোকের পক্ষে দাঁড়িয়ে যাবে।
চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় এই রকম চাঁদাবাজি হয়, আপনাদের রিপোটের কে আছে এই এলাকায় এই রকম একটি প্রতিবেদন দেখতে চাই।
কাউন্সিলরের চেয়ারে এত মধু/MONEY?
Very Good
No body can see this!
২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ সালের বাস্তব চিত্র এটি। প প্রতি বছর ২৫ ফ্রেব্রুয়ারীতে পিলখানাতে অনেকে আছে যারা শ্রদ্ধা জানায় ঢাক ঢোল পিটিয়ে নাটকীয় ফুলের তোড়া দেয়। বিধাতা তাদের চেনেন, যারা এদের খুন করেছে; কেমন যেন হাস্যকর সবকিছু!! আজ অবধি স্বজনরা হতাশ। যে আকাশ ভেঙ্গে মাথার উপর পড়েছে, তার কোন সুরাহা নেই। বরং সেদিন থেকে দেশ ক্রমাগত মৃত্যুকুপের দিকে ধাবিত, ওটি ছিল ধারাবাহিক মরণের শুরু, মানুষ মরছে। বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদছে, স্বজনরা অন্ধকারে। জাতির কাছে ওপেন সিক্রিট, সরকার লুকালেও প্রকৃত সত্য লুকানো নেই। ভুল ও জোড়াতালি মার্কা বাংলা বানানে একুশে পদক বিতরণ হয়েছে। ২০২০ সালের ২০০৯এর পিলখানার আগের দিন অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারী কীর্তিমান সরকারী দলের দুই ভাই এনু ও রুপমের বাসাতে টাকার খণি আবিষ্কার, প্রতিটি নোট ১,০০০ টাকার। ৫ সিন্দুকে কয় ঘন্টা দুই মেশিনে চলে গণনা ২৭ কোটি ও বিভিন্ন দেশী বিদেশী টাকা ডলার সব। দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক, আওয়ামীদের ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে টাকার খণি। বেগ ভর্তি সর্ণালংকার, ৫ কোটি টাকার বন্ড, সাথে আরো এটা ওটা। মাত্র সেদিন সমরাটদের ক্যাসিনো কান্ডে ময়দান গরম হয়ে মাঝে বন্ধ ছিল। সুনসান নিরবতা! সরকারপন্থী পত্রিকা বলে দৈবাৎ পাপিয়া ছিল এক দুর্ঘটনা, ফের সুনসান নিরবতা! বড় কথা সব সব লুটেরাই সরকারী সহযোগী লম্বাহাত উন্নয়নের মহাসড়ক তারা। এসব তাদের উন্নয়নের প্রামাণ্য দলিল। যখন ধরা পড়ে তখনই বলা হয়, এরা বহিষ্কৃত নয়তো এর আগ পর্যন্ত চলে এদের সাথে গলাগলি ঢলাঢলি ফটোসেশন ভিডিওফ্যাশন। ধৈয্য ধরা জাতি আর কত নির্ভাক থাকবে, কত মৃত্যুর প্রহর কাটাবে? দৃষ্টি কাতর কলম জড়িয়ে যায় এসব বলে শেষ করার নয়। বিবেক পথ খুঁজে পায় না কি করবে? সময় এগিয়ে গেছে, কিন্তু মানুষের ভাগ্য বদলায়নি। একই তালে রঙ্গমেলাসব চলছে চলবে যদি এই সরকার গদিনশীন থাকে। এখানে কোন মানবতা কাজ করে না, সব পাশবিকতা!
Reporter কে স্যলুট। এরকম সত্য এবং অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য।