অর্থ-বাণিজ্য
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুরু
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১৭ মে ২০২৩, বুধবার, ১:৩৬ পূর্বাহ্ন

দেশের তৈরি পোশাককে বিদেশিদের কাছে আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুরু হয়েছে। ‘ইনোভেটর’ বা উদ্ভাবক প্রতিপাদ্য নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শুরু হয়েছে ১৪তম এ ডেনিম এক্সপো। দুদিনব্যাপী এ এক্সপো মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শুরু হয়েছে, যা চলবে আজ বুধবার পর্যন্ত। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সারা বিশ্ব থেকে সাত হাজারের অধিক দর্শক এক্সপোতে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছেন।
এক্সপোতে বেক্সিমকো টেক্সটাইল লিমিটেডসহ দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ৯০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্রদর্শনীতে ফেব্রিক্স, তৈরি পোশাক, থ্রেডস, যন্ত্রাংশ, প্রক্রিয়াকরণ উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তৈরি ডেনিম পণ্য এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এক্সপোতে পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি উদ্ভাবক প্রতিপাদ্যে চারটি সেমিনার সেশন ও চারটি প্যানেল আলোচনা রাখা হয়েছে। ডেনিমের ভবিষ্যৎ নিয়ে সেমিনারে আলোচনা হবে।
আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের ডেনিম রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে এ শিল্পে উদ্ভাবনের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৪তম আসরের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেয়া বক্তাগণ। তারা বলেন, সামনের দিনগুলোতে ডেনিম রপ্তানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে উদ্ভাবন হবে মূল চাবিকাঠি।
বেক্সিমকো টেক্সটাইল লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (ফেব্রিক মার্কেটিং) আনওয়ারুল ইসলাম রানা বলেন, আজ প্রদর্শনীর প্রথম দিন। দিনের শুরুতে দর্শক কম থাকে। তবে সন্ধায় বেশ জমজমাট হয়েছে। দর্শনার্থীরা আসছেন আমাদের পণ্য সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। ভালো সাড়া পাচ্ছি। এবোরের এক্সপোতে বেশ কিছু নতুন নতুন আইটেম প্রদর্শন করা হচ্ছে। এতে দর্শনার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে বলে জানান তিনি।
মেলায় অংশ নেয়া চায়না কোম্পানি কটন ফিল্ড টেক্সটাইলের মার্কেটিং বিভাগের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশসহ ৪০ থেকে ৪৫টি দেশের কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রদর্শনীতে এসেছেন। মেলায় আমরা ডেনিম, টুইল, কর্ডরয় ফেব্রিক এবং কুটিং ফেব্রিকস পণ্য নিয়ে এসেছি। মানুষজন আসছেন, ভালো লাগছে।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো সারা বিশ্বের ডেনিম স্টেকহোল্ডারদের একই ছাদের নিচে একত্রিত করেছে, যার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ডেনিম শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা ও টেকসই ডেনিম শিল্পে গড়ে তোলায় করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক ডেনিম কমিউনিটির চাহিদা পূরণ, সম্ভাব্য ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ তৈরি ও নতুন পণ্য উদ্ভাবনের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এক্সপোর আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, এক্সপোর মূল উদ্দেশ্য হলো- টেকসই, নিরাপদ ও উদ্ভাবনী পণ্যের প্রচার। এই প্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অ্যাপারেল শিল্পকে তুলে ধরবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের যথার্থ উপস্থাপন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডেনিম এক্সপোতে প্রথম দিনে ‘পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধি সুযোগ ও সম্ভাবনা’ এবং ‘পোশাক শিল্পে উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করা’ শীর্ষক ২টি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বক্তা হিসাবে অংশ গ্রহণ করেন, মনুজ কাঞ্চন, বিভাগীয় পরিচালক, মধ্য এশিয়া, জিনোলজিয়া; ভেনিয়ার আন্দ্রেয়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অফিসিনা+৩৯; আজিজুর রহিম চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জেএম ফেব্রিক্স লিমিটেড; তানজিলা তাজরীন, সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার, বাংলাদেশে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাস; ড. মাইকেল ক্লোড, প্রকল্প সমন্বয়কারী, স্টাইল, জিআইজেড; সৈয়দ এম তানভীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্যাসিফিক জিন্স এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট, চিটাগাং চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি; শফিউর রহমান, সাউথ এশিয়ান অপারেশনস প্রধান, জি-স্টার র; দিশান করুনারত্নে, প্রধান প্রতিনিধি, বেস্টসেলার; মিসেস অ্যালিস টোনেলো, গবেষণা ও উন্নয়ন পরিচালক, টোনেলো; টাকার আসানো, সিনিয়র ডিরেক্টর, ওয়াইকেকে বাংলাদেশ পিটিই লিমিটেড; শাহ রাইদ চৌধুরী, পরিচালক, ইভিন্স গ্রুপ; মঈন চৌধুরী, কান্ট্রি ম্যানেজার প্রোডাকশন (বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফ্রিকা), পুমা; ফজলে শামীম এহসান, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ); অ্যান্ডার্স বি. কার্লসেন, ডেপুটি হেড অব মিশন, বাংলাদেশে অবস্থিত ডেনমার্কের দূতাবাস; এবং ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী, মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক বিষয়ক শাখা।
‘টেকসই পোশাক শিল্পের জন্য সহযোগিতার পুন:সংজ্ঞায়ন’এবং ‘২০৩০ সাল নাগাদ পোশাক রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার জন্য কাঙ্খিত পোশাক সরবরাহের চেইন’ শীর্ষক দুইটি আলোচনা আজ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে আলোচক হিসাবে অংশগ্রহণ করবেন, ডেনিস চিয়ারেলো, এরিয়া ম্যানেজার, টোনেলো; সেরদার ডেমিরসিওগ্ল, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ডিরেক্টর, কায়সার টেক্সটিল; ড. কার্তিক এন ডি, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোফিন্স; আলমগীর কবির, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কাইজার বেকলিডংস জিএমবিএইচ, বাংলাদেশ অফিস; আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টিম গ্রুপ এবং পরিচালক, বিজিএমইএ; মোহাম্মদ শামস ই তাবরিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ, ডিবি শেঙ্কার; গিহান পালিহেনা, পরিচালক এশিয়া প্রোডাক্ট সাপ্লাই সাউথ এশিয়া, কন্টুর ব্র্যান্ডস ইনকর্পোরেটেড; জিয়াউর রহমান, কান্ট্রি ম্যানেজার প্রোডাকশন (বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফ্রিকা), এইচএন্ডএম; আবদুর রহিম খান, অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; এ. এইচ. এম. আহসান, ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি); মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি, বিজিএমইএ; এবং ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার, ডেপুটি হেড অব মিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ।