ঢাকা, ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

অর্থনীতিতে ৩ চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশকে সতর্ক করলো আইএমএফ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১০ মাস আগে) ৭ মে ২০২৩, রবিবার, ৪:৪১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৩০ পূর্বাহ্ন

mzamin

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে পারলেও বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ দেখতে পাচ্ছে বলে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ঢাকা সফর শেষে আইএমএফ’র মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ রোববার এক লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর অর্থনীতির ধীর গতি বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এবং টাকার মানের ওপর প্রভাব ফেলবে। অর্থনীতিতে এই ৩ চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ঋণের অর্থ ব্যবহারের অগ্রগতি এবং অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের হালনাগাদ তথ্য জানতে রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে আইএমএফ প্রতিনিধি দল গত ২৫শে এপ্রিল বাংলাদেশে আসেন। আইএমএফের স্টাফ পর্যায়ের দলটি ৭ই মে ঢাকা সফর শেষ করেছে। সেই সফরের পরিসমাপ্তিতে রাহুল আনন্দ এসব কথা বলেন। এই সফরে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আইএমএফ প্রতিনিধিরা, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং আইএমএফের ঋণে নেয়া প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে তারা আলোচনা করেন।

আইএমএফ বলেছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যারা দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে সামনে বাংলাদেশের জন্য তিনটি চ্যালেঞ্জ দেখতে পাচ্ছে আইএমএফ।

লিখিত বক্তব্যে সংস্থাটি জানায়, সফরের সময় আমরা সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিকখাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা তহবিল-সমর্থিত প্রোগ্রামের অধীনে মূল প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করেছি। এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) বা রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) ব্যবস্থার প্রথম পর্যালোচনায় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে, যা এ বছরের শেষের দিকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আইএমএফ’র প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে। আন্তরিক আলোচনা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই।

বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ এবং এর জনগণের সমর্থনে আমাদের সম্পৃক্ততা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪শে জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। এতে পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ই অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণসহায়তার কথা উল্লেখ করেন। এরপর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তি ইতিমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইএমএফের কর্মসূচি চালু থাকার কথা রয়েছে। এর আগে ও পরে বাংলাদেশ পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোসহ আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে। প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর থেকেই পরামর্শ অনুযায়ী আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারের বেশ কিছু শর্ত বাস্তবায়নও করেছে বাংলাদেশ। এখন অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ সফর করে গেল আইএমএফ মিশন।

এদিকে রোববার আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সফর পরবর্তী বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আগামী অক্টোবরে আরও এক দফা ঢাকা সফরে আসবে প্রতিনিধি দল। এরপরই আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে সংস্থাটি। তিনি জানান, আসছে মুদ্রানীতিতে সংস্কারের প্রথম ধাপ হিসাবে রিজার্ভ হিসাবায়নে পরিবর্তন, বৈদেশিক মুদ্রা-ডলারের একক দাম, ঋণের বাজার ভিত্তিক সুদ হার নির্ধারণের ঘোষণা আসবে।
 

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status