অনলাইন
দক্ষতা যাচাই প্রকল্প উদ্বোধন
বাংলাদেশ থেকে ৫ খাতে বিপুল পরিমাণ দক্ষ কর্মী নেবে সৌদি
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:১৮ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ থেকে পাঁচ খাতে বিপুল পরিমাণ দক্ষ শ্রমিক নিতে আগ্রহী সৌদি আরব। তবে খাতওয়ারি ওই নিয়োগের পূর্বে শ্রমিকদের দক্ষতার সনদ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করেছে রিয়াদ। সৌদি আরবের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার এ সংক্রান্ত একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সৌদি গমনেচ্ছু বাংলাদেশি শ্রমিকদের দক্ষতা যাচাই হবে, উত্তীর্ণদের সনদ দেয়া হবে। গৃহীত প্রকল্প 'স্কিল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম' এর উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে দেশটির ঢাকাস্থ দূতাবাস। বারিধারায় নবনির্মিত সৌদি চ্যান্সরি কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দোহাইলাম নতুন নিয়োগ পদ্ধতির বিস্তারিত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সরকারের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলমসহ সংশিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্লাম্বার, ওয়েল্ডিং, অটোমোবাইল, ইলেক্ট্রিশিয়ান এবং এসি মোকানিক- এই পাঁচটি খাতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নিতে আগ্রহী সৌদি সরকার। শ্রমিকদের দক্ষতা পরীক্ষার জন্য জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং সৌদি সরকারি সংস্থা তাকানলের মধ্যে একটি প্রকল্প পরিচালন সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের দুটি প্রতিষ্ঠান ওই পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ক প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিবে। এজন্য শ্রমিকদের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত বলেন, অদক্ষ শ্রমিকদের বেতন যদি ৮০০ থেকে ১২০০ রিয়াল হয়ে থাকে, তবে দক্ষ শ্রমিকদের বেতন হবে ১৫০০ থেকে ১৮০০ রিয়াল। এর মাধ্যমে তারা বেশি আয় করতে সক্ষম হবেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ইতোমধ্যে এ ধরনের পরীক্ষা ভারত ও পাকিস্তানে চালু হয়েছে। প্রথাগত শ্রমিকদের এ ধরনের কোনও পরীক্ষা দেয়া লাগবে না। কিন্তু ওই পাঁচটি খাতে সৌদি আরবে কাজ করতে হলে সার্টিফিকেট লাগবে।
এই সার্টিফিকেটের সুবিধার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, জনশক্তিতে বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশই বেশি লাভবান হবে। দ্বিতীয়ত, সার্টিফিকেটপ্রাপ্তরা অন্য দেশের শ্রমিকদের থেকে বেশি সক্ষম হবে। তৃতীয়ত, তারা বেশি আয় করার সুযোগ পাবে।
পরীক্ষায় কী কী বিষয় থাকতে পারে এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত বলেন, আরবি ভাষা ও কিছু রীতি-নীতি এবং তারা নতুন যন্ত্রপাতি যেমন-মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা এধরনের যন্ত্র ব্যবহার করতে পারে কিনা, সেটি আমরা দেখবো। তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য একাধিক সৌদি কোম্পানী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
নতুন এই ব্যবস্থার কারণে প্রথাগত শ্রমিকদের সৌদি আরবে যেতে কোনও বাধা নেই জানিয়ে ঈসা বিন ইউসুফ আল দোহাইলাম বলেন, প্রতিদিন আমরা গড়ে প্রায় পাঁচ হাজার ভিসা ইস্যু করি।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলেন, অনেক দক্ষ শ্রমিক সৌদিতে যান, কিন্তু তাদের কোনও স্বীকৃতি নেই। এই যাচাইয়ের মাধ্যমে ওই শ্রমিকদের দক্ষতার সনদ দেয়া হবে এবং সেটি দেবে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তাকানলের মাধ্যমে ওই সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
নতুন ওই প্রোগ্রামের মহাপরিচালক ফাহাদ আলকাসিম বলেন, সৌদি আরবে যাওয়ার আগে আমরা শ্রমিকদের দক্ষতা যাচাই করতে চাইছি।
এদিকে হজে বয়স সীমা ও করোনা পরীক্ষা বাধ্যবাধকতা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনার কারণে গতবার হজে বয়স সীমা ও করোনা পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে এবার বয়সের কোনো সীমা থাকবে না। করোনা পরীক্ষার বিষয়টি সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখছে।