দেশ বিদেশ
ফরহাদের আর্তনাদ: কার জন্য বাঁচবো
মানবজমিন ডেস্ক
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবারতুরস্কের আজমারিন শহর। এই শহরে পরিবার নিয়ে থাকতেন ফরহাদ। শহরটি নিমেষেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। চারদিকে কান্নার শব্দ। নিহতদের স্বজনদের বুক চাপড়ে কান্নার শব্দে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। ফরহাদও তাদের ব্যতিক্রম নন। তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমার চোখের সামনেই পিতামাতা, স্ত্রী ও ছেলেকে মরতে দেখলাম। তাদেরকে হারিয়ে এখন আমি আর কোথায় যাবো! কার জন্য বাঁচবো! অনলাইন সিএনএন অসহায় ফরহাদের আর্তনাদ তুলে ধরেছে। ঘটনার দিন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন ভোরবেলা। হঠাৎ কাঁচ ভাঙার শব্দ কানে আসে তার। তার মনে হতে থাকে, বাইরে থেকে কেউ ইটপাথর ছুড়ে মারছে জানালায়। অমনি চট করে বিছানা ছেড়ে উঠে বসেন তিনি। সেই অবস্থায়ই কম্পন অনুভব করেন। মেঝেতে পা রাখতেই টলতে শুরু করেন। বুঝে যান বড় বিপদের মুখোমুখি হয়েছেন। ফরহাদ বলেন, তখনো বয়স্ক পিতামাতা, স্ত্রী, সন্তান গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। পাশের একটি ঘরে শুয়ে ছিল তারা। ফরহাদের ভাষায়Ñ দৌড়ে যাই স্ত্রীর ঘরে। ওকে ডেকে বলি শিগগিরই ছেলেকে নিয়ে বাইরে বের হও। আমি বাবাকে নিয়ে আসছি। তার কথা শুনে ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী সোজা বাড়ির বাইরে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ান। ফরহাদ বাবা-মাকে নিয়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন। প্রায় বেরিয়েও পড়েছিলেন। কিন্তু গ্যারেজের ছাদটা আচমকাই ধসে পড়ে তার পিতামাতার উপর। তার নিচেই চাপা পড়ে যান বয়স্ক এ দু’জন মানুষ। চোখের সামনে বাবা-মাকে মারা যেতে দেখে দিশাহারা হয়ে পড়েন ফরহাদ।
এ অবস্থায় নিজে কোনোমতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান তিনি। চারপাশে শুনতে পান আহাজারি, চিৎকার। তাসের ঘরের মতো একের পর এক বাড়ি ধসে পড়ছিল। তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না কি করতে হবে। এরই মধ্যে আরও একটি কম্পন। আবার নড়ে ওঠে সবকিছু। ফরহাদের সামনে একের পর এক বহুতল ভবন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছিল। এর নিচেই চাপা পড়েন তার স্ত্রী ও ছেলে।