ঢাকা, ২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাবান ১৪৪৪ হিঃ

রাজনীতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন

সাত্তারকে বিজয়ী করতে সরে দাঁড়ালেন আওয়ামী লীগের ৩ প্রার্থী

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

(২ মাস আগে) ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১:২৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৩:৫১ অপরাহ্ন

mzamin

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ৩ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। শনিবার দুপুরে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শাহগীর আলমের কাছে এ মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রত্যাহার করেছেন। তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা আবদুস সাত্তারকে বিজয়ী করতেই আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র। এদিকে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করায়  ‘কপাল খুলছে’ সেই সাত্তারের।   
এর আগে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় নির্দেশে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রার্থীদের এক বৈঠকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হওয়া সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারসহ দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জানানো হয়, উপ-নির্বাচনের এক বছর পরই সেখানে হওয়া পরবর্তী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে হলে যেন প্রার্থীরা সিদ্ধান্ত মেনে নেন।  এ অবস্থায় আসনটি কপাল খুলতে যাচ্ছে পদত্যাগ-পরবর্তী বহিষ্কার হওয়া বিএনপি’র সাবেক নেতা আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার! সংসদ থেকে বিএনপি’র পদত্যাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সাত্তারকে সরকার নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার দলের সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা করার বিষয়টি স্বীকার করেন। এবং তিনি বলেন, ‘এখানে যেহেতু দল কোনো প্রার্থী দেয়নি সেক্ষেত্রে দলের কথা বলে কেউ প্রার্থী হতে পারেন না।’ বিষয়টি  তাদেরকে বলার কারণে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। 
৩ জনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় এখন এই আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৫ জন প্রার্থী। তারা হলেন, পদত্যাগ-পরবর্তী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মঈন উদ্দিন মঈন, ও অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।

বিজ্ঞাপন
এবং তাদের  প্রত্যাহারপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল  রোববার ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন প্রার্থীরা।

আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালের পর ওই সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি। সারা দেশে যখন আওয়ামী লীগের জোয়ার তখনো (২০১৮) জোটের মারপ্যাঁচে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় সেখানে নিজেদের প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ভরাডুবি হয়। নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া জয়লাভ করেন, যিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য। ব্যক্তিগত ও এলাকায় দলীয় অবস্থান বিবেচনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে সামান্য ভোটে হেরে যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. মঈন উদ্দিন মঈন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ায় আওয়ামী লীগের ওই নেতা হেরে যান বলে মনে করা হয়।

ভোটের আগে বেশ আলোচনায় আসেন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা পাঁচবারের সংসদ সদস্য ৮৪ বছর বয়সী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করে ক্ষোভে দল থেকে পদত্যাগ করেন। তার নামে কেনা হয় মনোনয়নপত্র। এর পরপরই তাকে দল থেকে বহিষ্কারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। সর্বশেষ সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।

সরাইল উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে মোট ভোটার দুই লাখ ৩৭ হাজার ১৫৩ জন। আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ভোট সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ৯৭০টি। বিগত সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির তৎকালীন সংসদ সদস্য ও সরাইল বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার ভূইয়ার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আওয়ামী লীগ নেতা ও আশুগঞ্জের বাসিন্দা স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিন মঈন। ওই সময়ে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে মঈন উদ্দিন সহজেই পার হতে পারতেন বলে মনে করা হয়। 

পাঠকের মতামত

সাত্তার লোভী লোক, দলের সাথে বেঈমানি করে আওয়ামীলীগের সাথে সমঝোতা করলো। এগুলো জাতীয় বেঈমান।

ekram
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৯:২২ অপরাহ্ন

সাত্তার যে কোন দলের লোক সেটা এখন প্রমাণ হয়ে গেল! বিএনপি থেকে ক্ষমতা লোলুপ শয়তানদেরকে আরো আগেই বের করে দেওয়ার দরকার ছিল।

মহিন
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৯:০২ অপরাহ্ন

এই সব আওয়ামীলীগের প্রোপাগান্ডা।

Khan
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৪:০০ অপরাহ্ন

সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশ সরকারকে।

Syed abdul Awal
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

যে কারো বলার, করার, প্রার্থী হবার অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি দেশ থেকে বিসর্জিত না হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভয়-ভীতি বা প্রলোভন কিংবা এমনিতেই প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য বলা কোন ধরনের নীতিনৈতিকতা জানিনা। তবে দলের লোকগুলো তাদের মনোকষ্টকে সময়মতো দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে এটা নিশ্চিত।

ATM
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

ওই আসনের জনগনের কর্তব্য উকিল সাত্তারকে পরাজিত করা ।

Quamrul
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

ঐতিহ্যবাহি একটা দল আওয়ামীলীগ!!

এম আর তাহরীম
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৪:১৮ পূর্বাহ্ন

আজব দেশ! বিচিত্র তার কাহিনী!!

ফারুক হোসেন
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১:৩৮ পূর্বাহ্ন

এতদিন গোপন থাকলেও এখন সাত্তার আওয়ামী লীগের প্রার্থিতে পরিণত হলো। তাতে আওয়ামী লীগের কি লাভ হলো তা বুঝলাম না।

জামশেদ পাটোয়ারী
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১:১৮ পূর্বাহ্ন

একজন বিএনপির নেতাকে জোর করে এমপি বানিয়ে আওয়ামলীগের লাভ কী ??

Foyez Chowdhury
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১:১৫ পূর্বাহ্ন

ফ্যাব্রিকেইটেড! এই ধরনের লিয়াজো জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ছাড়া কিছুই নয়।

এদেশের নাগরিক
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১:০৩ পূর্বাহ্ন

সাত্তার বিএনপির প্রার্থী নয়। সাত্তারের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পাশাপাশি তার সন্তানেরও ইমেজ শেষ। বদরুদ্দোজা চৌধুরীরা তুচ্ছ ব্যাক্তি।

আজাদ আবদুল্লাহ শহিদ
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১২:৫১ পূর্বাহ্ন

নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার প্রবাদটি বেশ পুরোনো হলেও ঘুরে ফিরে বারবার তার দেখা মেলে। যারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলে তাঁদের রয়েছে বিরাট অবদান। আজ তাঁরা স্বার্থ বিসর্জন দিতে হলো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য। দল তাঁদের প্রতি কতোটা সুবিচার করেছে, তাঁদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছে কতোটা সেই প্রশ্ন আসতেই পারে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আব্দুস সাত্তারকে নিয়ে এই তামাশা মানুষ কি ভালো ভাবে নেবে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরাও বা কতোটা মেনে নেবে। তবে আব্দুস সাত্তারকে উপনির্বাচনে জেতালেও আগামী নির্বাচনেও কি তাঁকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করবে? তখনইবা দলের নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে। আব্দুস সাত্তারওবা তখন কি করবেন? বিএনপি থেকে আগামী নির্বাচনে রুমিন ফারহানার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে আব্দুস সাত্তারকে কিক্ দিলে তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের এখানেই ইতি ঘটতে পারে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও রুমিন ফারহানার ধারেকাছেও আসতে পারবেননা। কারণ রুমিন ফারহানার ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক ভাবনা দলের জন্য অবদান আব্দুস সাত্তার তার কাছেধারেও নেই। সুতরাং, বলা যায় উকিল আব্দুস সাত্তারের রাজনৈতিক যবনিকাপাত ঘটতে যাচ্ছে। আর আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে মান অভিমান ও ক্ষোভের সৃষ্টি হবে।

আবুল কাসেম
১৪ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

রাজনীতি সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status