বিশ্বজমিন
ইরানে বিক্ষোভের পেছনে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল: খামেনি
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ৪ অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবার, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
ইরানে বর্তমানে যে বিক্ষোভ চলছে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে দায়ী করলেন দেশটির সুপ্রিম লিডার আলী খামেনি। এটিই এই বিক্ষোভ নিয়ে প্রকাশ্যে তার কোনো বক্তব্য। তিনি বলেন, এই ‘দাঙ্গা’ ইরানের চিরশত্রু এবং তাদের মিত্রদের দ্বারা প্ররোচিত। সোমবার পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাডেটদের একটি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে এ অভিযোগ তোলেন তিনি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে এখন সবথেকে দীর্ঘ সময় ধরে দেশের প্রধান খামেনি। তার শাসনের সময়কালে যে কটি বড় বিক্ষোভ তিনি দেখেছেন তার একটি এখন চলছে। বিবিসি বলছে, এরকম বিক্ষোভ গত এক দশকের মধ্যে তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবারের ভাষণে খামেনি বলেন, মাহশা আমিনির মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। কিন্তু যেটা স্বাভাবিক নয় তা হল কিছু লোক কোনরকম প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়াই রাস্তাঘাটকে বিপজ্জনক করে তুলেছে, কুরআন পুড়িয়েছেন, পর্দানশীন নারীদের হিজাব খুলে দিয়েছেন এবং মসজিদ ও যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। ইরানের ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে ওঠা সহ্য করতে না পেরে বিদেশী শক্তিগুলি এই দাঙ্গার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলছি যে এই দাঙ্গা এবং নিরাপত্তাহীনতার নীলনকশা এঁকেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল।
উল্লেখ্য, হিজাব পুলিশের নির্যাতনে এক তরুণীর মৃত্যুর পর থেকেই উত্তাল ইরান। তিন সপ্তাহ ধরে টানা বিক্ষোভ চলছে ইরানের শহরগুলোতে। কোনোভাবেই বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছে না। ফলে ক্রমশ কঠোর হয়ে উঠছে ইরানের পুলিশ। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩৩ জন নিহত হয়েছে। জাতিগত বেলুচ অ্যাক্টিভিস্টরা জানিয়েছেন যে, তাদের মধ্যে ৪১ জন বিক্ষোভকারী শুক্রবার জাহেদানে এক সংঘর্ষে মারা গেছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও জানিয়েছে যে, নিরাপত্তা কর্মীসহ সেখানে ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
তেহরান, মাশহাদ, ইসফাহান, শিরাজ, তাবরিজ এবং কেরমানশাহ সহ দেশের অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। কারাজ এবং শিরাজে তোলা এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে স্কুলছাত্রীরা তাদের মাথার স্কার্ফ বাতাসে নেড়ে ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ বলে স্লোগান দিচ্ছে। মাহশা আমিনির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ এই হচ্ছে তাদের স্লোগান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে এই বিক্ষোভের প্রতি সহিংস প্রতিক্রিয়ায় তারা ‘শঙ্কিত’। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর তীব্র সহিংস দমনপীড়নের খবরে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, এই বিক্ষোভকারীরা ন্যায়বিচারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানি নারীদের পাশে রয়েছে। তাদের সাহসিকতা দিয়ে বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জো বাইডেন বলেছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকারীদের উপর যুক্তরাষ্ট্র এই সপ্তাহে আরও অবরোধ আরোপ করবে।