বাংলারজমিন
সোনা মসজিদ স্থলবন্দরে কর্মহীন ১৫০০ শ্রমিক
চাঁপাই নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
৪ অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবার চাঁপাই নবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থল বন্দরের ভেতরে-বাইরে বছরখানেক আগেও নিয়মিত কাজ করতেন প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক। কিন্তু বর্তমানে পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডে প্রায় ১ হাজার ২০০ শ্রমিকের কাজ থাকলেও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বন্দরের বাইরে কাজ করা প্রায় ১ হাজার ৫০০ শ্রমিক। এর মূল কারণ হচ্ছেÑঅত্যাধুনিক প্রযুক্তির এক্সেভেটর মেশিনের (খননযন্ত্রের) ব্যবহার। বন্দরে প্রায় অর্ধশত এক্সেভেটর পাথরসহ অন্য মালামাল ওঠানো-নামানোয় কাজ করছে। ফলে বর্তমানে শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের শ্রমিক ঠিকাদার সেনাউল ইসলাম।
কর্মহীন শ্রমিক কামালপুর এলাকার শরিফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর বন্দরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। কিন্তু ছয় মাস ধরে কোনো কাজ পাচ্ছেন না। বন্দরে শ্রমিকের কাজ করে অভ্যস্ত হওয়ায় অন্য কাজ করতে পারছেন না। বড়গাছী এলাকার আব্দুর রশিদ বলেন, ৯ বছর ধরে বন্দর এলাকায় বিভিন্ন পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ করতেন তিনি। গত মৌসুমে ধান কাটার জন্য নওগাঁয় যান।
ফেনী থেকে এক্সেভেটর নিয়ে এসেছেন সাকিল হোসেন ও সুমন নামের দুই ব্যক্তি। সাকিল বলেন, প্রতিদিন তার মেশিনের মাধ্যমে ২৬-২৮টি ট্রাকে পাথর গাড়িতে তোলার কাজ করা হয়। প্রতিটি গাড়ি থেকে ৭০০-৮০০ টাকা আয় হয়। সব মিলিয়ে তাদের জমজমাট ব্যবসা চলছে। পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের শ্রমিক ঠিকাদার সেনাউল ইসলাম জানান, এক্সেভটরের কারণে শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছেন। যে সময় ও খরচে একটি ট্রাক পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ করতেন শ্রমিকেরা, ঠিক একই সময় এবং সমপরিমাণ মজুরি হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। তারপরেও শ্রমিকদের কাজ দেয়া হচ্ছে না। শ্রমিক বাঁচাতে তিনি আমদানি রপ্তানিকারকদের মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান।
সোনা মসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান রাজু বলেন, ধান কাটা এবং আমের মৌসুমে শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে পণ্য ওঠাতে এক্সেভেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে সময় ও টাকা দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে। পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম বলেন, কাজের সন্ধানে বন্দরে প্রতিদিন শ্রমিকেরা ভিড় করছেন। কিন্তু পানামার মধ্যে ১ হাজার ২০০ শ্রমিকের কাজের সুযোগ রয়েছে।