খেলা
‘মিরাজের আত্মবিশ্বাস এখন উঁচুতে’
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। দেশের অন্যতম সেরা এই ওপেনারের শূন্যস্থান পূরণ কে করবে তা নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা-কল্পনা। পরীক্ষিত ব্যাটার লিটন কুমার দাসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে কে আসবেন তা নিয়েও টিম ম্যানেজমেন্ট ছিল দারুণ ভাবনায়। নেমে পড়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার পর আরব আমিরাত সফরে তাই ওপেনিংয়ে কে আসেন তার দিকেই তাকিয়ে ছিল টাইগার ক্রিকেটের ভক্তকুল। আমিরাত ক্রিকেট দলের বিপক্ষে দলের পক্ষে শুরুর দায়িত্বে মিরাজ নিজেকে প্রমাণ করেছেন। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়টিতে করেছেন ৩৭ বলে ৪৬ রান। হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। কিন্তু তার সঙ্গী সাব্বির রহমান ছন্দ খুঁজে পাননি। দলকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি তার প্রতি রাখা আস্থার প্রতিদান। অলরাউন্ডার মিরাজকে সাধারণত লেজের দিকেই ব্যাট করতে হতো। কিন্তু হঠাৎ করেই তাকে ওপেনার বানানোর যে পরিকল্পনা তাতে আশার আলোই ছড়িয়েছে তার ব্যাট। এই জন্য দলের সবার অনুপ্রেরণাই বড় অবদান বলে মনে করেন তিনি। মিরাজ বলেন, ‘ভালো লাগছে (এমন ইনিংস খেলে), সবচেয়ে বড় কথা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে। যে কারণে আমি নিজেও নিজের ওপর আস্থা রাখতে বাধ্য হয়েছি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল সবার আস্থা থেকে আমারও মধ্যে আস্থা চলে আসছে।’ তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে হঠাৎ বনে যাওয়া ওপেনার দলের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে তো! বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি কোনোভাবেই ছন্দ খুঁজে পাচ্ছে না টি-টোয়েন্টিতে। যে কারণে সবশেষ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে মিরাজ ও সাব্বিরকে পরীক্ষা করে টিম ম্যানেজমেন্ট। এশিয়া কাপে উদ্বোধনী জুটিতে মিরাজ-সাব্বির যোগ করেন ১৯ রান। সাব্বির ৫ রান করে ফিরলেও মিরাজ খেলেন ২৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম দুজনের জুটি মাত্র ১১ রানের। সাব্বির খালি হাতে ফিরেছেন, মিরাজ থামেন ১২ রান করেই। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেও তাদের ওপর আস্থা রাখে টিম ম্যানেজমেন্ট। আরেক দফা সুযোগ পেয়ে মঙ্গলবার দুজনে যোগ করেন ২৭ রান। সাব্বির ৯ বলে ১২ রান করে আউট হন, তবে ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন মিরাজ। মিরাজ ওপেন করতে নেমে কীভাবে এতো ধারবাহিক? আত্মবিশ্বাসটা পাচ্ছেন কোথায়? এ নিয়ে দলের ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স বলেন, ‘হ্যাঁ (আমি খুশি)। বিশেষ করে মিরাজের ওপর। সাব্বির এখনও ছন্দ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে। আজকে সে একটি শটের মাধ্যমে দেখিয়েছে ব্যাট হাতে কী করতে পারে। আমরা এটি আরও বেশি দেখতে চাই। তবে মিরাজ বেশ ভালোভাবে এগিয়ে এসেছে। ওর আত্মবিশ্বাস এখন উঁচুতে। আমি ওকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে দেখেছি ভালো ব্যাট করতে। সে এখন যা করছে তা পারবে আমি জানতাম। এখন শুধু ওকে বাড়তি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে টপঅর্ডারে নেমে শট খেলার। সে দারুণ করছে।’ দুই ম্যাচের সিরিজটি খেলার আগে বাংলাদেশ দল দিন কয়েক অনুশীলন করেছে দুবাই স্টেডিয়ামে। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই ছোট ক্যাম্প ও ম্যাচ অনুশীলনকে ইতিবাচকভাবে নিচ্ছেন মিরাজ। তার বিশ্বাস দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার উপকৃত হয়েছেন, আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় বিশ্বকাপ সামনে রেখে ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। আমরা যেখানে অনুশীলন করেছি এটা অনেক ভালো ছিল। আর যে ম্যাচ দুটো খেলেছি তা বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে প্রত্যেকটা প্লেয়ারের জন্য। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই ৭টা দিন আমাদের প্লেয়াররা খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে।’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ রানের কষ্টার্জিত জয়ে বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। নির্বিষ ব্যাটিং-বোলিং মন ভরাতে পারেনি ভক্ত সমর্থকদের। সঙ্গে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির দিক থেকে কতটা আত্মবিশ্বাস নিতে পেরেছে এমন প্রশ্নতো উঠেছেই।
দ্বিতীয় ম্যাচেও টাইগাররা দাপুটে জয় পায়নি। স্বাগতিকদের ৩২ রানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করলেও ম্যাচে শুরুর দাপট শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে ব্যর্থ হন বোলাররা। দলীয় ২৯ রানে চতুর্থ উইকেট খোয়ায় স্বাগতিকরা। ১৩৭/৫ স্কোর নিয়ে ইনিংস শেষ করে আরব আমিরাত। পঞ্চম উইকেটে তারা গড়ে ৯০ রানের জুটি।