অর্থ-বাণিজ্য
জুলাই মাসে ঋণের অর্থ ছাড় বেড়েছে ৪৮ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবারচলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিশ্রুতির বিপরীতে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর অর্থ ছাড়ের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে জুলাই মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ঋণ পরিশোধের হার কমেছে ৩.২৯ শতাংশ। মাসটিতে ঋণ এবং সুদ হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ঋণ ও সুদের বিপরীতে প্রায় ১৯ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সরকার গত ১২ বছরে সুদসহ প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ইআরডি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম মাসে বাংলাদেশের জন্য ৪৮ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঋণ-সহায়তা ছাড় করেছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশগুলো। এর মধ্যে অনুদান হিসেবে এসেছে ৯১ লাখ ২০ হাজার ডলার। আর ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ ডলার ছাড় করা হয়েছে ঋণ হিসেবে। জুলাইয়ে ছাড় হওয়া এই বৈদেশিক ঋণ গত অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় ১৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার বা ৪৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ছাড় হয়েছিল ৩২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের বারো মাসে রেকর্ড ১ হাজার কোটি ডলার বা ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড় হয়েছিল। অবশ্য ওই অঙ্কের মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারি থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য হওয়া বাজেট সহায়তার অর্থও ছিল। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ঋণ ও অনুদান মিলে মোট ৯৩ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রতি মাসে ৮৩ কোটি ডলার করে ছাড় হতে হবে। সে হিসাবে জুলাই মাসে অর্থছাড়ে বেশ পিছিয়ে আছে।
ইআরডি’র এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বৈদেশিক ঋণ ছাড় হয় বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুত প্রকল্পের বাস্তবায়নের বিপরীতে। প্রথম মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের গতি শ্লথ ছিল। তাই বৈদেশিক ঋণও ছাড় হয়েছে কিছুটা কম। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বৃদ্ধি পেলে বৈদেশিক ঋণের ছাড়ও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইআরডি’র প্রতিবেদন অুনযায়ী, গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের জন্য এককভাবে সর্বোচ্চ ২০ কোটি ডলার ছাড় করেছে জাপান। চীন ছাড় করেছে ১০ কোটি ২২ লাখ ডলার। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৬ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, ভারত ৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলার এবং বিশ্ব ব্যাংক ২ কোটি ২২ লাখ ডলার ছাড় করেছে।
এদিকে জুলাই মাসে দাতাদের পুঞ্জিভূত পাওনা থেকে পরিশোধ করা হয়েছে ১৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এক মাসে পরিশোধ করা এই অর্থ গত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় প্রায় ৬০ লাখ ডলার কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ১৮ কোটি ৫১ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল। এ বছর জুলাই মাসে অর্থ ছাড় বেশি হলেও নতুন প্রতিশ্রুতি এসেছে কম। মাত্র ১৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঋণের একটি চুক্তি হয়েছে অর্থবছরের প্রথম মাসে। গত বছরের জুলাই মাসে ৯৫ লাখ ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল।