বিশ্বজমিন
ইয়েমেনের ৩ বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা
মানবজমিন ডেস্ক
৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবারএবার ইয়েমেনে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। রোববার ভোরে চালানো এই হামলায় হুদায়দা, রাস ইসা এবং সাইফ বন্দরের পাশাপাশি একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ নিশ্চিত করেছেন যে, হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ছিল বাণিজ্যিক জাহাজ গ্যালাক্সি লিডার। এটি ২০২৩ সালে হুতি বিদ্রোহীরা হাইজ্যাক করে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, হুতিরা ওই জাহাজ ব্যবহার করছিল আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌপর্যবেক্ষণের কাজে এবং সেখানে থেকে সন্ত্রাসী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে অস্ত্র পরিবহন করা হচ্ছিল। এ হামলাকে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফ্ল্যাগ’ নাম দেয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেন, যারা ইসরাইলকে আঘাত করতে চায়, তাদের হাত কেটে ফেলা হবে। ইয়েমেনের পরিণতি হবে তেহরানের মতো। হুতি-চালিত ইয়েমেনি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হুদায়দায় ইসরাইলি হামলা হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের সুনির্দিষ্ট তথ্য জানায়নি।
ইসরাইলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলার পরে ইয়েমেন থেকে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সেগুলোর প্রতিরোধে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে ইসরাইল। এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাইরেন বাজানো হয় ইসরাইলের বেশ কিছু এলাকায়। তবে ক্ষয়ক্ষতির ফলাফল পর্যালোচনাধীন বলে জানানো হয়েছে।
ইসরাইলের বোমাবর্ষণের অন্যতম লক্ষ্য ছিল রাস কানাতিব বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা ইব্ব এবং তাইজ শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এর ফলে নাগরিকদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে হুদায়দা বন্দরটি দেশটির প্রধান মানবিক প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেখান দিয়ে খাদ্য, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ করে। ওই অঞ্চলে ইসরাইল আগেও হামলা চালিয়েছে ২০২৫ সালের মে ও জুন মাসে। হুতি বিদ্রোহীরা হামলার প্রতিক্রিয়ায় তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইসরাইলি বিমান প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তারা জানিয়েছে, এই হামলা ছিল একটি আগ্রাসন এবং এর পরিণতির জন্য ইসরাইলকে দায় নিতে হবে।
গাজায় চলমান যুদ্ধের পর থেকেই ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা নিয়মিতভাবে ইসরাইলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং রেড সিতে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে। ইসরাইল বলছে, হুতিদের এই তৎপরতা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি এবং তারা এই হুমকির উপযুক্ত জবাব দেবে। এই সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে এবং মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল। বিশেষ করে ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে নতুন করে বিদেশি হামলা দেশটির সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।