বিশ্বজমিন
পেরুতে ৩৫০০ বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধান
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ৭ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ২:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর উত্তরের বারাঙ্কা প্রদেশে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ৩৫০০ বছরের প্রাচীন এক নগরীর সন্ধান পেয়েছেন। একসময় উপকূলীয়, পাহাড়ি এবং আমাজনের মানুষের মধ্যে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই নগরী। নতুন আবিষ্কৃত এই নগরীর নাম পেনিকো। এটি সুমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার উচ্চতায় একটি পাহাড়ি এলাকার ওপর অবস্থিত। আশেপাশে প্রায় ৫০০০ বছর আগে গড়ে ওঠা আমেরিকার প্রাচীনতম সভ্যতা কারাল-এর অবস্থান। এই সভ্যতাকে মিশর, ভারত, সুমের ও চীনের প্রাচীন সভ্যতার সমসাময়িক বলে ধরা হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা পেনিকোতে খনন করে পেয়েছেন বৃত্তাকার ধর্মীয় স্থাপনা, বসবাসযোগ্য ঘরবাড়ি, প্রধান চত্বরে মাটির ভাস্কর্য ও দেয়ালে খোদাই করা চিত্র, একটি ‘পুটুতু ’-এর চিত্র। পুটুতু হলো একটি শাঁখজাতীয় বাদ্যযন্ত্র। এটি বহু দূর পর্যন্ত শব্দ ছড়াতে সক্ষম। পাওয়া গেছে মাটির তৈরি মানব ও প্রাণীর মূর্তি, সামুদ্রিক ঝিনুক দিয়ে তৈরি মালা ও অলংকার, কমপক্ষে ১৮টি স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ, যা গত আট বছরে খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এই নগরীর গড়ে ওঠে ১৮০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ প্রাচীন মেসোপটেমিয়া বা সিন্ধু সভ্যতার সময়কার এই নগরী। রুথ শাদি পেনিকো নিয়ে গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, কারাল সভ্যতা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় পতনের মুখে পড়ে, তখনই এই পেনিকো নগরী বিকশিত হয়। এটি ছিল এক কৌশলগত বাণিজ্য কেন্দ্র। আর্কিওলজিস্ট মার্কো মাচাকুয়াই বলেন, পেনিকো হচ্ছে কারাল সভ্যতার উত্তরসূরি- এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ, যা অতীতকে নতুনভাবে বোঝার সুযোগ করে দিচ্ছে।

পেরুতে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সব ঐতিহাসিক নিদর্শন। এর মধ্যে আছে মাচু পিচু- ইনকাদের বিখ্যাত নগরী, নাজকা রেখা- যা মরুভূমিতে আঁকা রহস্যময় বিশাল চিত্র, চান চান- যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাদামাটির নগরী। চান চান ছিল চিমু সাম্রাজ্যের রাজধানী। সেখানে ছিল ১০টি প্রাসাদ এবং প্রায় ৩০,০০০ অধিবাসীর বসবাস। গত মে মাসে পেরুর ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট চান চানে এক যুবক দেয়ালে অশ্লীল গ্রাফিতি এঁকে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছেন। পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানায়, এটি আমাদের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি ভয়াবহ অবমাননা। দোষী সাব্যস্ত হলে ৬ বছরের জেল হতে পারে ওই যুবকের। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং প্রশ্ন উঠে- কেন এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই?