বিশ্বজমিন
টেলিগ্রাফের রিপোর্ট
কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে বীরভূমের বাংলাভাষী পরিবার এখন বাংলাদেশে
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ৭ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:০৮ অপরাহ্ন

দিল্লিতে পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছিলেন বীরভূম জেলার এক শ্রমজীবী দম্পতি ও তাদের পাঁচ বছর বয়সী শিশুপুত্র। কিন্তু তাদেরকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে আটক করে পুলিশ। পরে জোর করে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশে। এই ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কারণ কয়েক মাস ধরে বাংলাভাষী শ্রমিকদের এভাবে অনিয়মিতভাবে ফেরত পাঠানোর ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। এ খবর দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী অনলাইন ডেইলি টেলিগ্রাফ।
এতে আরও বলা হয়, আলোচিত ওই দম্পতি ২৬ বছরের দানিশ শেখ ও তার ২৪ বছর বয়সী স্ত্রী সোনালী খাতুন। তাদের আছে পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সাবির। তাদেরকে ১৮ই জুন দিল্লির রোহিণী এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সোনালীর চাচাতো বোন রোশনি বিবি নিজেও দিল্লিতে থাকেন। তিনি জানান, আমরা দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বীরভূমে তাদের স্থায়ী ঠিকানার পরিচয়পত্রও জমা দিই। পুলিশ আশ্বস্ত করেছিল তারা শীগগিরই মুক্তি পাবে। কিন্তু এক সপ্তাহ পর আবার যোগাযোগ করলে পুলিশ জানায়, তাদের ইতিমধ্যে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের হুমকিও দেয়া হয়, যেন আমরা আর কোনও ব্যবস্থা না নিই। রোশনি জানান, কয়েক দিন আগে সোনালী অপরিচিত একজনের ফোন থেকে কল করে বলেন, আমরা এখন ঢাকার পাশে আছি। এক দয়ালু স্থানীয় বাসিন্দার সাহায্যে কোনওরকমে বেঁচে আছি। রোশনি আরও দাবি করেন, তাদের গ্রামের আরও তিনজনকে একই সময়ে আটক করা হয়েছিল। তাদেরও একইভাবে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এর আগেও উত্তর ২৪ পরগনার বাদগাঁয়ের এক দম্পতিসহ সাতজন শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ আটক করে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হস্তক্ষেপে তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ও রাজ্য অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি সামিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শুধু বাংলায় কথা বলেন বলেই কেউ বাংলাদেশি, এমন ধারণা সাংবিধানিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি বাংলা বলা গরিব মানুষদের এভাবে নির্যাতন করে, তাহলে তা নিঃসন্দেহে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমরা বিষয়টি আদালতে নিয়ে যাচ্ছি। তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, এই অগণতান্ত্রিক ও বিভাজনমূলক নীতি রোধে সকল শিক্ষিত মানুষের একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করা উচিত। এই ঘটনার প্রসঙ্গে গত মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলায় কথা বললেই কাউকে বাংলাদেশি বানিয়ে, পরিবারছাড়া করে দেওয়া হচ্ছে। এটা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর অসভ্য ও দমনমূলক আচরণ। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।