দেশ বিদেশ
শঙ্কা নিয়েই পথচলা
সুদীপ অধিকারী
১৯ আগস্ট ২০২২, শুক্রবারউত্তরায় ক্রেন দুর্ঘটনার পর রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে এক চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে ঢাকাবাসীর মধ্যে। কাজের তাগিদে বাধ্য হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে অনেকের মধ্যে কাজ করছে- কখন খুঁড়ে রাখা গর্তে পড়তে হয়, কখন আবার উপর থেকে মেগা প্রকল্পের নির্মাণসামগ্রী মাথায় পড়ে। এমন শঙ্কা নিয়েই পথ চলছে মানুষ। এমনই একজন তারক দত্ত। বেসরকারি এই ব্যাংক কর্মকর্তা প্রতিদিন রাজধানীর মিরপুর-১২ থেকে সাইন্সল্যাব এলাকায় যাতায়াত করেন। তারক দত্ত বলেন, মিরপুর থেকে খামার বাড়ি হয়ে মেট্রোরেলের কাজ চলমান। মিরপুর-১০ কাজীপাড়া এলাকায় এখনো কিছু কিছু জায়গায় রাস্তার একপাশ বন্ধ করে নির্মাণ কাজ চলছে। খোদ রাস্তার মাঝেই চলছে স্টেশনে ওঠানামার নির্মাণকাজ। চলছে স্যুয়ারেজ লাইনের কাজও। কিছুদিন আগেও দিনের বেলাতে হেডলাইট জ্বালিয়ে একই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে।
একটু অসতর্ক হলেই গর্তে পড়ে যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো ঘটনা। এজন্য ভয়ে ভয়ে পথ চলতে হচ্ছে। আরেক পথচারী নাইমুর রহমান। গতকাল সন্ধ্যায় ফার্মগেট পুলিশ বক্সের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা নাইমুর বলেন, আমরা অবশ্যই উন্নয়ন চাই। তবে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে। ফার্মগেট থেকে তেজগাঁও কলেজের দিকে যাতায়াতের রাস্তা দেখিয়ে নাইমুর বলেন, এই যে পায়ে হাঁটা রাস্তা বন্ধ করে নির্মাণকাজ চলছে এটা এক-দু’দিনের বিষয় না। দীর্ঘদিন ধরেই এমন চলছে। মানুষ বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত যানবহন পাশ কাটিয়ে মেইন রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচল করছে। এতে যানজট যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনই দুর্ঘটনাও ঘটছে। রাস্তাটিতে চলাচলকারী আমীর হোসেন নামে এক বাসচালক বলেন, সিগন্যালে না আটকায় এজন্য যাত্রীরা চাপ দেয়। আবার সার্জেন্ট স্যারেরা দাঁড়িয়ে থাকে। এর মধ্যে এই মোড়টা ক্রস করতে গেলে প্রায়ই পথচারীরা চলন্ত গাড়ির সামনে এসে পড়ে। ঠিকঠাক ব্রেক করতে না পারলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
এরই উল্টো পাশের রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন ষাটোর্ধ্ব ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতিদিন খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে হয়ে মগবাজার যাতায়াত করি। দীর্ঘদিন ধরে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনের এক পাশের রাস্তা বন্ধ করে নির্মাণকাজ চলছে। কখনো এপাশ দিয়ে গাড়ি চলে, তো কখনো অন্য পাশ দিয়ে গাড়ি চলে। রাস্তার মাঝে মাঝে আবার লোহার পাতের জোড়াতালি, গর্ত। পাতের উপরে গাড়ির চাকা উঠলেই অজানা এক ভয় ঢোকে মনে। ফাঁকা পাতের নিচে এই বুঝি গাড়ি উল্টে গেল। আর উপরের মেট্রোর পানি, নির্মাণ যজ্ঞে ব্যবহৃত ক্রেন, ট্রাক, লরি যাতায়াতের আলাদা ভয় তো আছেই। এরই মধ্যে ইনস্টিটিউটের উল্টো পথে আসা গাড়ি দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।