বিনোদন
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করমর্দন, ভারত-পাক উত্তেজনার মধ্যে আমির খানের ছবি ঘিরে বিতর্ক
মানবজমিন ডিজিটাল
(১২ ঘন্টা আগে) ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৫:৩৩ অপরাহ্ন

"আপ কি আদালত" অনুষ্ঠান নামক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এসে বলিউড অভিনেতা আমির খান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান এবং ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোগানের সাথে তার সাক্ষাতের বিষয়ে জনসাধারণের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন। পেহেলগাম কাণ্ডের পরে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল তুরস্ক। আর সেই সময়েই ছড়িয়ে পড়ে এই ছবি। সমাজমাধ্যমে রোষানলে পড়েন বলি তারকা। এমনকি, তাঁর আসন্ন ছবি ‘সিতারে জমিন পর’-কে নিষিদ্ধ করার দাবিও ওঠে। অবশেষে এই বিতর্কে নিয়ে মুখ খুললেন আমির।"আপ কি আদালত" অনুষ্ঠানে উপস্থাপক রজত শর্মার সাথে খোলামেলাভাবে কথা বলতে গিয়ে, খান সেই বৈঠকের পিছনের উদ্দেশ্যগুলোকে সমর্থন করেন এবং তুরস্কের সাম্প্রতিক ভারত-বিরোধী কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। সেইসঙ্গে 'বয়কট তুরস্ক' প্রচারণাকে সমর্থন করেন।২০১৭ এবং ২০২০ সালে আমির খানের তুরস্ক সফর থেকে এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়, যেখানে তিনি তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী সহ দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে দেখা করেছিলেন।সম্প্রতি এই বৈঠকগুলো উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সহ ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে তুরস্ক পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করার পর।যুদ্ধ ড্রোন ব্যবহার করে পাকিস্তানকে তুরস্কের কথিত সহায়তা সম্পর্কে শর্মার প্রশ্নের জবাবে খান রাজনৈতিক গতিশীলতার পরিবর্তন স্বীকার করেন এবং দু দেশের সম্পর্কের বিষয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন।তিনি বলেন-' তুরস্ক ভুল কাজ করেছে এবং এর জন্য প্রতিটি ভারতীয় আহত। ২০২৩ সালে তুরস্কে ভূমিকম্পের সময়, ভারত সরকারই প্রথম মানবিক সাহায্য পাঠায়। সেই সময়, আমি বা আমাদের সরকার কেউই জানতাম না যে তুরস্ক পরবর্তীতে কী করবে।'খান স্পষ্ট করে বলেন যে তুর্কি নেতাদের সাথে তার আলাপচারিতার কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না এবং এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হয়েছিল। খান ব্যাখ্যা করেন -' যখন আমি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাথে দেখা করি, তখন আমি জানতাম না যে তার দেশ সাত বছর পরে ভারতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপকে সমর্থন করবে। 'তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, একজন জনসাধারণের প্রতিনিধি হিসেবে, কূটনৈতিক আমন্ত্রণকে প্রায়শই সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে দেখা হয়।আমিরের কথায় -'যখন কেউ আমাকে বলে যে তুমি চা খেতে আসবে, তখন তাকে না বলাটা আমার ঠিক বলে মনে হয় না। ' তুরস্কে গিয়ে তিনি কেবল ভারতের জন্য একজন অনানুষ্ঠানিক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানিয়েছেন আমির। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই ধর্মীয় বিভাজনের বাইরে গিয়ে চিন্তা করার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান অভিনেতা। সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে বলেন,' "আপনারা সাধারণ নাগরিকদের উপর গুলি চালাচ্ছেন, পরিবারের লোকজনদের উপর গুলি চালাচ্ছেন। আমি সেখানে থাকতে পারতাম, আপনিও সেখানে থাকতে পারতেন। আপনি তাদের ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের উপর গুলি চালাচ্ছেন। এর অর্থ কী?"ভারতীয় ভোক্তাদের মধ্যে তুর্কি পণ্য এবং পর্যটনের ব্যাপক বয়কটের কথা উল্লেখ করে খান এই অনুভূতির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করে বলেন, এটি বিশ্বাসঘাতকতার একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। আমিরের কথায় , 'আমাদের এমন কোনও দেশকে সমর্থন করা উচিত নয় যারা আমাদের আক্রমণকারীদের পক্ষ নেয়। আমরা তাদের প্রয়োজনের সময় বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং বিনিময়ে তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে । এটা ঠিক নয়।'
সূত্র : ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস