দেশ বিদেশ
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল
ঘুষের টাকা না পেয়ে রোগী ও স্বজনদের মারধর
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
১৫ জুন ২০২৫, রবিবার
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ঘুষের টাকা না পেয়ে রোগী ও তার স্বজনদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়ের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কারও কাছে অভিযোগ করলে রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন ওই ওয়ার্ডবয়। মারধরের শিকার ভুক্তভোগী রোগী মো. মোস্তফা (৪০) জানান, শুক্রবার রাত ৯ টায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পাংখার বাজার এলাকা থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের ৮নং মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হলে তাকে বেড খালি না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ফ্লোরে থাকতে দেয়া হয়। ফ্লোরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়তে পারে ভেবে ওর্য়াডবয় নূর হোসেনের কাছে একটি বেড চাইলে তিনি ৩০০ টাকা ঘুষ চান। আমি তাতে অপারগতা জানাই। রাত ১১টার দিকে আমার বৃদ্ধ বাবা আব্দুর রশিদ (৭০) পাশ্বর্বর্তী একটি সিটে বসে থাকলে ওয়ার্ডবয় নূর হোসেন গালিগালাজ করে তেড়ে এসে মারধর করে বেড থেকে ওঠে যেতে বলে। বাবাকে অপদস্ত হতে দেখে আমি এর প্রতিবাদ জানালে ওয়ার্ডবয় নূর হোসেন আমার গলা চিপে ধরে ধাক্কা চড় মারে। রোগীর স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, মারধরের পর ওয়ার্ডবয় আমাদের হুমকি দিয়ে বলে, এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাদের চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দিবে। এ বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডবয় নূর হোসেনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্ট করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
রোগী ও তার স্বজনদের মারধরের বিষয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আব্দুল মুক্তাদির হোসাইন তুহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুক্রবার রাতে মেডিসিন ৮নং ওয়ার্ডে নুর হোসেন নামে এক ওয়ার্ডবয় ডিউটি করেছিল। রোগী ও তার স্বজনদের মারধরের বিষয়টি শোনার পর থেকে আমরা মুঠোফোনে নুর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের একাধিকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার নাম্বারটি বন্ধ থাকায় এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। সে ডিউটিতে আসলে এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলা হবে এবং রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালে কর্মরত একাধিক ওয়ার্ডবয় জানায়, নূর হোসেনের বাড়ি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিকটবর্তী এলাকায় হওয়ায় সে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রায়ই রোগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তাকে টাকা না দিলে মেডিসিন ওয়ার্ডে কোনো রোগী বেড পায় না। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী মানবজমিনকে জানান, রোগী এবং তার স্বজনরা অভিযোগ আপনার কাছে করেছে, আমার কাছে তো করেনি। আমরা এ ধরনের কোনো বিষয় জানি না, কেউ আমাদের জানায়নি। তখন ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হাসপাতালে ছিল। তার কাছে অভিযোগ করেছে কিনা জিজ্ঞেস করেন। তিনি আমাদের বিষয়টি জানাননি। জানালে ব্যবস্থা নিতাম।
পাঠকের মতামত
ঘটনা সত্যতা সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে দোষীদের এখনই বিচারের ব্যবস্থা করা উচিত। বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায় এ ধরনের ঘটনায় উভয় পক্ষেরই সমস্যা থাকে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী মানবজমিনকে জানান, রোগী এবং তার স্বজনরা অভিযোগ আপনার কাছে করেছে, আমার কাছে তো করেনি। আমরা এ ধরনের কোনো বিষয় জানি না, কেউ আমাদের জানায়নি। তখন ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হাসপাতালে ছিল। তার কাছে অভিযোগ করেছে কিনা জিজ্ঞেস করেন। তিনি আমাদের বিষয়টি জানাননি। জানালে ব্যবস্থা নিতাম। এখন তো জানছেন। এখন কি ব্যবস্থা নেবেন?