দেশ বিদেশ
ঢাকায় ফিরছে মানুষ উত্তরাঞ্চলের ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়
স্টাফ রিপোর্টার
১২ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার ছুটির পর রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। সরকারি ছুটির আরও তিনদিন বাকি থাকলেও ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষজন। কেউ কেউ ফিরছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউ কেউ একা। ঈদের পর সরকারি দীর্ঘ ছুটির কারণে ধাপে ধাপে ফিরতে পারছেন তারা। ফিরতি ঈদযাত্রায় গরমের বাগড়ার সঙ্গে গতকাল উত্তরাঞ্চলের কিছু ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় বাড়তি ভোগান্তিতে ফেলে দেয় যাত্রীদের। শনিবার ট্রেনে ফিরতি ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে আগত ট্রেন- মধুমতি, সিল্কসিটি ও মধুমতি ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে যান ওই সকল ট্রেনের যাত্রীরা। রাজশাহীর নন্দনগাছি স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে বুধবার সকাল ৬টায় রেললাইন অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এতে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই অবরোধের কারণে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা চারটি ট্রেন আটকা পড়ে। অবরোধ প্রত্যাহারের পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, উত্তরাঞ্চল থেকে আগত তিনটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। এর মধ্যে বনলতা এক্সপ্রেস ৪০ মিনিট, সিল্কসিটি ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিট এবং মধুমতি ট্রেন ২ ঘণ্টা দেরি করেছে। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণ- নন্দনগাছি স্টেশনে স্থানীয় জনগণ যাত্রাবিরতির জন্য আন্দোলন করে। এতে ট্রেনগুলো স্টেশনে আসতে দেরি করে।
এদিকে, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় আর তীব্র গরমে হাঁপিয়ে ওঠেন যাত্রীরাও। ঊষ্মা প্রকাশ করেন তারা। তীব্র গরমে পরিবার নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে তাদের। যাত্রীরা মনে করেছেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিলে এ শিডিউল বিপর্যয় এড়ানো যেতো। রাজশাহী থেকে সিল্কসিটি এক্সপ্রেসে ঢাকায় এসেছেন আহসানুল হক। তিনি বলেন, নন্দনগাছি স্টেশন অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছে দু’দিন আগে। এর মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করলে আজকে যাত্রীদের এ ভোগান্তি পোহাতে হতো না। তা না করে তারা অবরোধ শুরুর এক-দেড় ঘণ্টা পর স্পটে এসেছেন। তিথী নামের আরেকজন যাত্রী বলেন, তীব্র গরমে এমনিই হাঁসফাঁস লাগছে। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা এখন মারাত্মক বিরক্তির কারণ। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক আহম্মদ হোসেন মাসুম বলেন, অবরোধের পর আমরা বিষয়টি জেনেছি। আগে থেকে জানতে পারিনি। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত বিষয়টি সমাধান হয়েছে। আশা করি, আজ থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে। যাত্রীরা ঈদের ফিরতিযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্যে ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন। ওদিকে, ট্রেনের পাশাপাশি বাস টার্মিনালগুলোতেও বাড়ছে রাজধানীফেরত মানুষের ভিড়। তবে, এখনো কেউ কেউ ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন ঈদের ছুটিতে। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে ঢাকাফেরত মানুষের ভিড়ের পাশাপাশি ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার তাড়াও কিছুটা দেখা গেছে। কেউ কেউ ঈদে ছুটি পাননি যা এখন কাটাবেন, আবার কেউ কেউ ঢাকা ছাড়ছেন ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। ঢাকা ছাড়ছেন এমন যাত্রীর সংখ্যা কম। বাসগুলো যাত্রীবোঝাই করে প্রবেশ করছে ঢাকায়। গাবতলী বাস টার্মিনালের হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শফিকুর রহমান বলেন, বাড়িমুখী যাত্রীর পরিমাণ এখন কম। যারা যাওয়ার তারা ইতিমধ্যে চলে গেছেন। আমাদেরও অল্প যাত্রী দিয়েই বাস ছাড়তে হচ্ছে। তবে ঢাকায় যে বাসগুলো ফিরছে, সেগুলোর কোনোটিই খালি ফিরছে না। তা ছাড়া, ছুটি শেষে আকাশপথেও বেড়েছে ব্যস্ততা। ঈদের মধ্যে যাত্রী পরিবহনে সৈয়দপুর, রাজশাহী ও কক্সবাজার রুটে অতিরিক্ত বা বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে বাংলাদেশ বিমান। বর্তমানে বিশেষ ফ্লাইট চালু না থাকলেও স্বাভাবিক ফ্লাইট চালু রয়েছে। রাজশাহী, সৈয়দপুর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সিলেটে স্বাভাবিক ফ্লাইট চালু রয়েছে। যারা ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন তারা ফিরতে শুরু করেছেন বিমানে।