খেলা
হোয়াইটওয়াশের মুখে লিটনরা শেষ নেই অজুহাতেরও
স্পোর্টস রিপোর্টার
১ জুন ২০২৫, রবিবার
একটা করে ম্যাচ হার, অধিনায়ক বা দলের অন্য যে কেউ এসে দিচ্ছেন অজুহাত! এরপর শিখছেন বলে সামনের ম্যাচে ভালো করার আশা ব্যক্ত। এ যেন ‘রেডি স্ক্রিপ্ট’। ব্যাটারদের ব্যর্থতা জারি রয়েছে বাংলাদেশ দলে। পাকিস্তানের বিপক্ষে শুক্রবার সিরিজ হেরে এবার মানসিকভাবে শক্ত হয়ে ফিরে আসার কথা বলেছেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। আজ হোয়াইটওয়াশ এড়াতে রাত ৯টায় লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও ফিরে আসার সুযোগ দেখছেন লিটন। এ নিয়ে টানা ৪ ম্যাচ হেরেছে লিটনের দল। সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে শুরুতেই পেসার শরিফুল ইসলামকে হারায় বাংলাদেশ। নিজের প্রথম ওভারেই কুঁচকির চোটে মাঠ ছাড়েন তিনি। পাকিস্তান যে তার খুব বেশি সুযোগ নিতে পেরেছে তা নয়! বরং বাংলাদেশের বোলাররা শেষদিকে ভালো বোলিং করেছে। তাতে ১২ ওভারেই ১৩০ রান করা পাকিস্তান থামে ২০১ রানে। প্রথম ম্যাচে মতো একই লক্ষ্য পেয়ে একই পারফর্মেন্স করেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে আরও একটা জিনিস খুবই নিয়মিত হয়। ওপেনাররা ভালো করলে মিডল অর্ডার ধ্বসে পড়ে। মিডল অর্ডার ভালো খেললেন আগেই ওপেনাররা ফিরে যান। আর লোয়ার অর্ডার সেদিনই জেগে ওঠে যেদিন টপ আর মিডল ড্রেসিংরুমে ফিরে যান আগেভাগে! তাতে অবশ্য ম্যাচের ফলে পরিবর্তন হয় না, শুধু হারের ব্যবধানটাই কমে।
শুক্রবার লাহোরেও সেটাই হয়েছে। তানজীদ হাসান তামিম আর পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ ওভারে ৪৪ রানের জুটি ভাঙতেই ধ্বসে পড়ে মিডল অর্ডার। ১৮ বলের মধ্যে ১২ রানে ৫ আর ৩৬ বলের মধ্যে ৩৩ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক লিটন, তাওহীদ হৃদয় আর জাকের আলী সবাই এসেছেন আর ফিরে গেছেন। হৃদয় আর জাকের যেভাবে আউট হয়েছেন তাতে স্পিন খেলার দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা যায়! ১০০ রানের আগেই যখন গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তখনই জেগে ওঠে লোয়ার অর্ডার। তানজিম হাসান সাকিব করে বসেন ফিফটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৯ বা এরচেয়ে নিচে নেমে প্রথম ফিফটি করেন তিনি। এদিন সাকিবের পাঁচ ছক্কাও যৌথভাবে সর্বোচ্চ রেকর্ড। ম্যাচ শেষে সাকিব ব্যাটারদের দায় দিয়েছেন, যে কেউই সেটা করবে। তিনি বলেন, ‘২০০ চেজ করতে গেলে ব্যাটারদের আরও দায়িত্ব নিতে হবে। ওপর থেকে আরও দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলে আমি মনে করি ২০০ চেজ করা সম্ভব।’ ২০২ রান তাড়ায় প্রথম ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ ৩৭ রানে আর পরের ম্যাচে হার ৫৭ রানে। প্রতি ম্যাচেই অবনতি হচ্ছে। অধিনায়ক লিটনের মতে ব্যাসিক জিনিসটাই করতে পারছে না তার দল। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে আপনার বেসিক জিনিসগুলো করতে হবে। এটা (রান নেওয়া) তো বেসিক। এ মুহূর্তে আমরা মৌলিক কাজগুলো অনুসরণ করছি না। আপনি যদি ব্যাক টু ব্যাক দুটি উইকেট দেখেন, আমরা ২টি রান নিইনি। আমি এটিকে দোষ দিচ্ছি না। তবে আমাদের এদিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
সিরিজের দুই ম্যাচ হেরে গেলেও আশা হারাচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘আমাদের আরও একটি সুযোগ আছে। এ মুহূর্তে আমাদের একসঙ্গে বসে আলাপ করতে হবে কীভাবে আমরা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি। কারণ, এটি পুরোপুরি মানসিকতার ব্যাপার।’
ঘুরে দাড়াতে গেলে তো লিটনকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। ব্যাটার হিসেবে রান তো করতেই হবে বাকি ব্যাটারদেরও জাগিয়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ দলে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন কাজ।