অনলাইন
প্রাইভেট কার দিয়ে ছিনতাই, নারীর আর্তচিৎকারে কেঁপে উঠলো সিদ্ধেশ্বরী
স্টাফ রিপোর্টার
(১৪ ঘন্টা আগে) ২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৭:৪৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০২ পূর্বাহ্ন

শনিবার সকাল সিদ্ধেশ্বরীর গ্রিনল্যান্ড টাওয়ারের সামনে তখন স্বাভাবিক ভিড়। ব্যস্ত মানুষের আনাগোনা। ঠিক এমন সময় রাস্তার পাশে লাল শাড়ী পরিহিত এক নারী দাঁড়িয়ে ছিলেন, হাতে ভ্যানিটি ব্যাগ, পাশে একটি ট্রলি ব্যাগ। চোখে-মুখে ক্লান্তি আর গন্তব্যে পৌঁছানোর তাড়া। হঠাৎ সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কার এসে থামে তাঁর সামনে। মুহূর্তেই ঘটে যায় এক বিভীষিকাময় দৃশ্য যা ধরা পড়ে পাশের এক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে।
গাড়ির জানালা খুলে এক ব্যক্তি ঝাঁপিয়ে পড়ে নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ব্যাগ ছাড়তে এক সেকেন্ডও সময় পায়নি ভুক্তভোগী নারী। মুহূর্তেই রাস্তায় পড়ে যান ঐ নারী ব্যাগের সঙ্গে তাকেও টেনে নিয়ে যেতে থাকে ছিনতাইকারীরা। রাস্তায় পড়ে গিয়ে, শরীরজুড়ে আঘাত নিয়ে, এক অসহ্য যন্ত্রণার মাঝে তখনও তাঁর কণ্ঠে ছিল জীবন বাঁচানোর আকুতি। কয়েক সেকেন্ডের এই দৃশ্য মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, কাঁপিয়ে দেয় হাজারো হৃদয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, ছিনতাইয়ের মুহূর্তেই রাস্তায় পড়ে যান ওই নারী। টেনেহিঁচড়ে তাঁকে নিয়ে চলে ছিনতাইকারীদের প্রাইভেটকারটি। পাশে থাকা ট্রলি ব্যাগটি ছিটকে পড়ে যায় রাস্তায়। চিৎকার শুনে আশপাশের তিনজন দৌড়ে ছুটে আসেন। একজন ট্রলি ব্যাগের সামনে দাঁড়িয়ে যান, আর বাকি দুজন এগিয়ে যান আহত নারীর দিকে। ৫০ সেকেন্ডের মাথায় আবারও ক্যামেরায় দেখা যায়, ওই নারী ফিরে এসে দাঁড়িয়ে আছেন, ব্যথায় কুঁকড়ে যাওয়া মুখে সহায়তার আশায় কথা বলছেন উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে। নিজের কনুইয়ের আঘাতের চিহ্ন দেখাচ্ছেন, যেনো প্রমাণ করছেন এই পাশবিকতার নির্মমতা।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই নারীকে গুরুতর শারীরিক আঘাত পেতে হয়েছে। তবে, প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন তিনি। তার অবস্থা সঙ্কটমুক্ত হলেও, মানসিকভাবে চরম আঘাত পেয়েছেন। এরই মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে, তবে এখনও পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, তারা খুব দ্রুতই ছিনতাইকারীদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পুলিশের নজরে এসেছে এবং তাঁরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছেন। ইতোমধ্যে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মামলা দায়ের হয়নি, কারণ ভুক্তভোগী নারী এখনও পুলিশ স্টেশনে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করেননি। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাগরিকরা। বিশেষত, নারীদের জন্য নিরাপত্তার বিষয়টি এখন বড় এক প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি শুধু ঘটনার তীব্রতা বাড়ায়নি, বরং সাধারণ মানুষের মনে ভয়ও সৃষ্টি করেছে। অনেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর একা পথে চলাচলকারী নারীরা।
পাঠকের মতামত
সন্ধ্যার পর মহিলারা একা বের হওয়াই ভালো।
শাড়ির রং নিয়ে তো কনফিউজড হয়ে গেলাম। ছবিতে এক রং আর বর্ণনায় আরেক!!
দেশের মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি অথচ ধান কেটে মানুষকে সমাজ সেবার কাজ দেখানো হচ্ছে ? কি লজ্জার !
মহিলা কাতরাচ্ছে আর আপনারা মজা করে প্রচার করছেন।
হাসানাত আবদুল্লাহ, আপনাকে নিম্নলিখিতগুলি করতে হবে: ১. অনুগ্রহ করে মাত্র ২ মাসের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৫ লক্ষ পুলিশ নিয়োগ করুন। ২. অনুগ্রহ করে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। অন্যথায়, আপনি সবকিছু হারাবেন। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এই সংকেত খুবই খারাপ।