ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

পাকিস্তানকে কীভাবে সিন্ধুর পানি থেকে বঞ্চিত করবে ভারত!

মানবজমিন ডেস্ক

(১১ ঘন্টা আগে) ২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

mzamin

সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও পাকিস্তান পাবে না। এমন ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় পানিশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল। তিনি বলেছেন, ভারত নিশ্চিত করবে সিন্ধু নদীর এক ফোঁটাও পানি পাকিস্তানে যেন না যায়। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২৫ পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধংদেহী মনোভাব বিরাজ করছে। এরই প্রেক্ষিতে সিন্ধু নদের পানি থেকে পাকিস্তানকে বঞ্চিত রাখার হুমকি দিয়েছে ভারত। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে এক বৈঠক হয়। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে এক পোস্টে সিআর পাতিল পাকিস্তানকে পানি থেকে বঞ্চিত করার ওই হুমকি দেন। ওই বৈঠকে শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

বৈঠকের পর এক্সে সিআর পাতিল লিখেছেন, সিন্ধুর পানি চুক্তির বিষযে মোদী সরকারের নেয়া ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে ন্যায্য এবং জাতীয় স্বার্থে। আমরা নিশ্চিত করব যে সিন্ধু নদের এক ফোঁটাও জল পাকিস্তানে যেন না যায়। 

উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন স্থানীয় নিহত হওয়ার পর গৃহীত একাধিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বুধবার ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ভারত। এরপর জলশক্তি মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ আলী মুর্তুজাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে সিদ্ধান্তটি অবহিত করে। চিঠিতে বলা হয়, সৎ বিশ্বাসে চুক্তি পালনের বাধ্যবাধকতা একটি চুক্তির মৌলিক বিষয়। তবে, আমরা যা দেখেছি তা হল পাকিস্তান ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরকে লক্ষ্য করে সীমান্ত অতিক্রম করে সন্ত্রাসবাদ অব্যাহত রেখেছে। 

ওদিকে অমিত শাহের বাসভবনের বৈঠকে উপস্থিত থাকা শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অমিত শাহের বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে চুক্তি স্থগিতাদেশের বাস্তবায়ন অবিলম্বে শুরু হবে। একজন কর্মকর্তা বলেন, বেশ কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা টেবিলে রয়েছে। তবে অগ্রাধিকার হলো এমন একটি পরিকল্পনা যা তাৎক্ষণিক এবং মধ্যমেয়াদী ভবিষ্যতের জন্য একটি নীলনকশা হিসেবে কাজ করতে পারে। 

বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তির অংশ হিসেবে, সিন্ধু প্রণালীর তিনটি পূর্বাঞ্চলীয় নদী - রবি, বিয়াস এবং শতদ্রু-এর উপর ভারতের পূর্ণ অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান তিনটি পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী- সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব থেকে প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএএফ) পানি পায়- যা সবই ভারত থেকে ভাটির দিকে প্রবাহিত হয়। স্বল্পমেয়াদে যেসব বিকল্প বিবেচনা করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে কেন্দ্র সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাবের উপর বিদ্যমান বাঁধগুলি পলিমুক্ত করার এবং জলাধারের ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছে। ফলে পাকিস্তানে প্রবাহিত পানির পরিমাণ হ্রাস পাবে। ভারতের দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। তা হলো- ঝিলাম এবং রাতলে নদীর একটি উপনদীতে কিষেণগঙ্গা। চুক্তি স্থগিত করার ফলে পাকিস্তানের আপত্তি উপেক্ষা করতে পারবে ভারত। দীর্ঘমেয়াদে এই নদীগুলিতে নতুন বাঁধ এবং অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।

আইনি প্রতিক্রিয়া: কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংক বা অন্য কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের চাপের মুখে পড়লে আইনি প্রতিক্রিয়া তৈরির কাজও চলছে। ভারত কেন এই পদক্ষেপ নিয়েছে তা অন্য দেশগুলিকেও জানাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারের উদ্দেশ্য হল এটি নিশ্চিত করা যে ভারতের মানুষের খুব কম অসুবিধার সম্মুখীন হন। পানিশক্তি, স্বরাষ্ট্র এবং বিদেশ মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে এটি নিয়ে কাজ করছে। 
পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে চুক্তি স্থগিতের ফলে তারা বিচলিত।  বৃহস্পতিবার তারা এক বিবৃতিতে বলছে, সিন্ধু পানি চুক্তি অনুসারে পাকিস্তানের পানিপ্রবাহ বন্ধ বা ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার যে কোনও প্রচেষ্টা... যুদ্ধের আইন হিসাবে বিবেচিত হবে। জাতীয় ক্ষমতার সম্পূর্ণ পরিসরে পূর্ণ শক্তি দিয়ে তার জবাব দেওয়া হবে।

 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status