দেশ বিদেশ
২০শে আগস্ট দেশজুড়ে একদিন ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন
৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনার টিকার কার্যক্রম উদ্বোধন
স্টাফ রিপোর্টার
১২ আগস্ট ২০২২, শুক্রবার
দেশে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। ২০শে আগস্ট একদিনব্যাপী ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর জন্য ১ম, ২য় ও বুস্টার (৩য়) ডোজ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন আয়োজন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেশের শিশুদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ সময় সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মোট ১ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৩৯ ডোজ ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। ৭ই আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোট সংগৃহীত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংখ্যা ৩১ কোটি ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮০০ ডোজ। মোট প্রদানকৃত ১ম ডোজ ১২ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৬২ (৭৬.১৯%)। মোট প্রদানকৃত ২য় ডোজ ১২ কোটি ৭ লাখ ৩ হাজার ১২০ (৭০.৮৭%)। মোট প্রদানকৃত বুস্টার (৩য়) ডোজ ৪ কোটি ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭৮ (২৩.৮৭%)। বর্তমানে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারও দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে গত ১১ই আগস্ট থেকে দেশের সকল ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সরকার কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের নিজস্ব জনগোষ্ঠীর উপযোগী প্রায় ৪ কোটি ডোজ শিশুদের জন্য ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। যার মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০ লাখ ডোজ দেশে এসে পৌঁছেছে। অবশিষ্ট ডোজসমূহও দেশে এসে পৌঁছাবে শিগগিরই। ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে একই স্থানে একটি আলোচনা সভা করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রস্টার, ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন: ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকরী ভ্যাকসিন হিসেবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন লাভ করেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ভ্যাকসিনটি প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন প্রদান করেছে।
টিকার ধরন: শিশুদের উপযোগী ফাইজার ভ্যাকসিন।
প্রদেয় ডোজ: ৮ সপ্তাহ বা ৫৬ দিনের ব্যবধানে ২ ডোজ। কোথায় টিকা দেয়া হবে: সারা দেশের সকল সিটি করপোরেশনে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের বিদ্যালয়কেন্দ্রিক ভ্যাকসিনেশনের পরবর্তী কার্যক্রম আগামী ২৫শে আগস্ট শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে কমিউনিটি পর্যায়ে প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যেই সুরক্ষা ওয়েবপোর্টাল/ অ্যাপের মাধ্যমে উক্ত বয়সসীমার শিশুদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করতে হবে। সিটি করপোরেশনসমূহের প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচিত বিদ্যালয়ে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। পর্যায়ক্রমে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভাসমূহে বিদ্যালয় ও কমিউনিটি পর্যায়ে এই ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
টিকাদান লক্ষ্যমাত্রা: সারা দেশের প্রায় ২ দশমিক ২ কোটি শিশুকে ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেন: ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী সকল শিশু।
কীভাবে ভ্যাকসিন পাবেন: কোভিড-১৯ টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে নিকটস্থ বিদ্যালয় ভ্যাকসিনেশন সেন্টার (স্কুলপড়ুয়া শিশু) ও পরবর্তীতে কমিউনিটি পর্যায়ে (স্কুলবহির্ভূত শিশু) নিকটস্থ কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা যাবে।
পরবর্তী পরিকল্পনা: অদ্যাবধি উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩৩ লাখ ১ম ডোজ এবং ৯৪ লাখ ২য় ডোজ গ্রহণ করতে পারেনি। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আগামী ২০শে আগস্ট একদিনব্যাপী ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর জন্য ১ম, ২য় ও বুস্টার (৩য়) ডোজ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হবে।