ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

মাদকের জেরে বন্ধুকে হত্যা, ১১ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জিকু গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার
১১ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার

রাজধানীর কোতোয়ালি থানার নবাবপুরে চাঞ্চল্যকর রজব আলী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. জিকুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার  মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর এলাকা থেকে ১১ বছর পলাতক থাকা জিকুকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল দুপুরে কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নিহত রজব আলীর বন্ধু ছিলেন জিকু। তারা দু’জনই মাদকাসক্ত। মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে রজব আলীর সঙ্গে জিকুর শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এর জেরে ২০১১ সালে জিকু তার সহযোগীদের নিয়ে রজবকে হত্যা করে। রজবকে হত্যার পর দীর্ঘ ১১ বছর বিভিন্ন জায়গায় নাম-পরিচয় বদলে আত্মগোপনে ছিলেন জিকু।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভিকটিম রজব আলী জিকুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তারা পরস্পর বন্ধু হলেও এলাকাভিত্তিক উঠতি বয়সী যুবকদের মধ্যে গ্রুপ ছিল। জিকু ও রজব পাড়ায় একসঙ্গে দল বেঁধে মাদকসেবন করতেন।

বিজ্ঞাপন
একদিন মাদকসেবনের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তখন রজব আলী সজীব নামে একজনের মোবাইল জামানত রেখে মাদকের টাকা সংগ্রহ করেন। পরে সবাই মিলে মাদকসেবন করেন। পরে মাদকের টাকা পরিশোধ না করে জামানতের মোবাইল ফেরত চাওয়ায় জিকু ও রজবের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এই শত্রুতাকে কেন্দ্র করে জিকুর নেতৃত্বে রহিম ওরফে আরিফ, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, মো. মিলন ওরফে চোপা মিলন, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজীব আহমেদ খান, শহীন চাঁন খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু ভিকটিম রজব আলীকে শায়েস্তা করার জন্য পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১১ সালে ২৪শে জুলাই রাতে নবাবপুরে মোবাইলের দোকানে রজব আলী টাকা রিচার্জ করতে গেলে জিকুসহ আরও চার-পাঁচজন তার ওপর এলোপাতাড়ি আক্রমণ করে। বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় রজবের ভাই জুম্মন বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০১২ সালে ৫ই ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। বিচারকাজ শেষে আদালত ২০১৯ সালে ১লা আগস্ট জিকু, রহিম ওরফে আরিফ ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় সব আসামিরা পলাতক ছিলেন। এ ছাড়াও একই রায়ে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিনজনকে খালাস দেয়া হয়।
র‌্যাব-৩ এর এই অধিনায়ক বলেন, রজবকে হত্যার পর মাতুয়াইল এলাকায় মনু মিয়ার বাড়িতে আত্মগোপনে চলে যান জিকু। দীর্ঘ আট মাস পলাতক থাকার পর তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ছয় মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। পরে তিনি বরিশালে তার শ্বশুরবাড়ি চলে যান। এবং কোর্টে হাজিরা দেয়া থেকে বিরত থেকে পলাতক জীবনযাপন শুরু করেন। সেখানে নিজেকে মোটর মেকানিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। এক সময় নাম পরিবর্তন করে নিজেকে নাসির উদ্দিন নামে পরিচয় দেন জিকু। মোটর মেকানিকের কাজ জানায় তিনি অতি সহজেই কর্মস্থল পরিবর্তন করতে পারতেন। এভাবে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর তিনি আবার ঢাকায় ফিরে আসেন। লম্বা চুল ও দাড়ি রেখে বেশ বদল করে নাসির উদ্দিন পরিচয়ে ধোলাইখাল এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে শুরু করেন জিকু। এরইমধ্যে তার মাদকসেবনের পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে। ওয়ার্কশপের এক সহকর্মীর পরামর্শে জিকু মুন্সীগঞ্জের একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি হন। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জিকুর চুল ও দাড়ি কেটে দেয়। এভাবেই তার আসল চেহারা প্রকাশ পায় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status