বিশ্বজমিন
ভালবাসা, পরকীয়া ও নৃশংসতার কাহিনী
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৯:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:১৭ অপরাহ্ন

স্ত্রীর পরকিয়া প্রেমের বলি হয়েছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মিরাতের এক নৌ কর্মকর্তা। তার নাম সৌরভ রাজপুত। স্ত্রী মুসকান রাস্তোগি ও তার প্রেমিক সাহিল শুক্লা মিলে তাকে হত্যা করেন। হত্যার পর তার মৃতদেহ ১৫ খণ্ডে খণ্ডিত করা হয়। এরপর মৃতদেহটি একটি ড্রামে রেখে সিমেন্ট দিয়ে ড্রামের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। পুলিশের তদন্তে সামনে এসেছে ভালোবাসা, প্রতারণা ও নৃশংসতার ওই গল্প।
২০১৬ সালে ভালোবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সৌরভ ও মুসকান। স্ত্রীর সঙ্গে বেশি করে সময় কাটানোর জন্য সৌরভ তার নৌবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দেন। তবে বিয়ে ও চাকরি ছেড়ে দেয়ার মতো আকস্মিক সিদ্ধান্ত তার পরিবার ভালোভাবে নেয়নি। এ নিয়ে বাড়িতে কলহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলশ্রুতিতে সৌরভ বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে চলে যান। ২০১৯ সালে তার স্ত্রী এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। স্ত্রী-কন্যা নিয়ে বেশ আনন্দেই কাটছিলো তাদের দিন। তবে ওই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। সৌরভ জানতে পারেন মুসকান তারই বন্ধুর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে পৌঁছান তারা। তবে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন সৌরভ। তিনি পুনরায় নৌবাহিনীতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
২০২৩ সালে তিনি কাজের খাতির দেশের বাইরে যান। ২৮শে ফেব্রুয়ারি তাদের মেয়ের বয়স হয় ছয় বছর। মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ২৪শে ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরেন সৌরভ। এতদিনে মুসকান ও সাহিল তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৪ঠা মার্চ মুসকান তার স্বামীর খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। সৌরভ ঘুমিয়ে পড়লে সাহিল ও মুসকান মিলে তাকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহটি কয়েক টুকরো করা হয়। পরে তা ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে মুখ এঁটে দেয়া হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো মৃতদেহটি গুম করা। প্রতিবেশীরা যখন সৌরভের বিষয়ে জানতে চান তখন মুসকান তাদের বলেন, সে পাহাড়ে গেছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ও সন্দেহ এড়াতে সৌরভের ফোন নিয়ে মুসকান ও তার প্রেমিক মানালিতে চলে যান। সেখান গিয়ে সৌরভের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ছবি আপলোড দিতে থাকেন। তবে কয়েকদিন ফোন না ধরায় তার পরিবারের সন্দেহ হয়। তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ মুসকান ও সাহিলকে কাস্টডিতে নেন। জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ভেঙ্গে পড়েন এবং নিজেদের দোষ স্বীকার করেন।