দেশ বিদেশ
ভোগান্তিতে নগরবাসী
দুপুর গড়ালেও সরানো হয় না রংপুর সিটি বাজারের রাতের বর্জ্য
জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে
১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবাররংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানির মোড় থেকে ডিসির মোড় পর্যন্ত সবসময় যানজট লেগে থাকে। এর মধ্যে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় সিটি বাজারের সামনে। সেখানে যানজটের ভোগান্তি তো বটেই নগরবাসী ও যাতায়াতকারীদের আরও সহ্য করতে হয় সিটি বাজারের পচা-আবর্জনার অসহনীয় দুর্গন্ধ। রমজানে রোজা রেখে এমন দুর্গন্ধ সইতে না পেরে অনেকেই বমি করে ফেলছেন। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে নগরবাসীর মাঝে। সিটি বাজারের সবজির আড়ত, মাছের দোকান, ফলমূলের দোকানসহ ভাসমান খাবারের দোকানগুলোর পচে যাওয়া পণ্য ও সারাদিনের বিভিন্ন আবর্জনা রাতে বাজারের প্রবেশদ্বার অর্থাৎ মূল সড়কেই ফেলেন ব্যবসায়ীরা। যা মধ্যরাত থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে। এই দুর্গন্ধযুক্ত আবর্জনাগুলো সড়কের উপরে পড়ে থাকে দুপুর পর্যন্ত। এরপরে সিটি করপোরেশন থেকে গাড়ি এসে নিয়ে যায় বর্জ্য। এতে করে দুপুর পর্যন্ত ময়লা আবর্জনার উপর দিয়ে চলাচল করতে হয় নগরবাসীকে। আবার যাতায়াতকারীদেরও পড়তে হয় বিটকেল এ দুর্গন্ধের কবলে। একদিকে এ ময়লা আবর্জনা যেমন পরিবেশ দূষণ করছে, অন্যদিকে নগরীর সৌন্দর্যতা নষ্ট হচ্ছে এসবের কারণে।
সিটি বাজারে নিত্যপণ্য ক্রয় করতে আসা নগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার নাঈম হুসাইন বলেন, এ দুর্গন্ধের কারণে এদিকে আসতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু বাধ্য হয়ে আসতে হয়। বাজারের এ বর্জ্যগুলো রাতে সরিয়ে নিলে এরকম দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় না। মিজান মিয়া বলেন, শুধু সিটি করপোরেশনের দোষ দিলে হবে না। সিটি বাজারের দোকানদারদের উচিত, এভাবে যত্রতত্রভাবে ময়লা না ফেলে ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলা, যাতে করে দুর্গন্ধ না ছড়ায়। মোটরসাইকেল আরোহী জনি মিয়া বলেন, প্রতিদিন অফিসে যেতে এখানে জ্যামে পড়তে হয়। আর এই দুর্গন্ধ সহ্য করতে হয়। রোজা রেখে এই দুর্গন্ধ সহ্য করার মতো নয়। সেদিন একজন মহিলা চলতি রিকশায় বমি করতে দেখেছি। এরকম দৃশ্য প্রায় প্রতিদিনের, কিন্তু কর্তৃপক্ষ দেখেও যেন না দেখার ভান ধরে আছেন। এর শেষ কোথায়।
শিক্ষার্থী মুবতাসিম ফুয়াদ মুগ্ধ বলেন, দুপুর হয়ে যায় তবুও এই আবর্জনাগুলো এখানে রয়ে যায় আর দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে। যারা বাইরে থেকে রংপুরে আসেন, তারা নগরীর এ হাল দেখে ইতিবাচক ধারণা নিয়ে অন্তত ফিরবেন না। বাজারের বর্জ্য রাতেই সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা জামান বলেন, সিটি করপোরেশনের বর্জ্য পরিবহন গাড়ির সুবিধার্থে রাতেই আমরা রাস্তার পাশে বর্জ্যগুলো রেখে দেই। কিন্তু সিটি করপোরেশন নানান অজুহাত দিয়ে টালবাহানা করে। রাতেই আবর্জনাগুলো সরিয়ে নিতে তাদেরকে আমরা বার বার বলেছি। কিন্তু তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আবর্জনা সরাতে প্রায় প্রতিদিন আমাদের ফোন দিতে হয়, তখন গিয়ে দুপুরে তারা গাড়ি পাঠিয়ে আবর্জনা নিয়ে যায়। রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান মিজুর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।