দেশ বিদেশ
মির্জাগঞ্জে খাল খননের নামে হরিলুট
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে খাল খনন না করেই বরাদ্দের টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। খাল খননের নামে হয়েছে কচুরিপানা পরিষ্কার এবং মাছ শিকারের মহোৎসব। এমনই অভিযোগ করেন খাল পাড়ের বাসিন্দারা। দুই এক জায়গায় সামান্য খনন করার জন্য স্থানীয়দের গুনতে হয়েছে টাকা।
জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বেতবুনিয়া ও চাকরখালী খালের প্রায় ১ দশমিক ৩৭৫ কিলোমিটারের খনন (পলি নিষ্কাশন), রেগুলেটর মেরামত ও অফিস মেরামতের জন্য ১৫ লাখ ৯২ হাজার ২২১ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় চৈতা বাজিতা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি। ৫টি এলসিএস কমিটির মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন করা কথা। আর কাজটি পরিচালনা করে মির্জাগঞ্জ এলজিইডি। নিয়ম মতে, খাল খননের বিল উত্তোলন করতে এলসিএস কমিটির সদস্যদের উপস্থিততে বিল দেয়ার কথা। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা না করে এলসিএস কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করে জাহাঙ্গীর গাজী ও বেলাল মৃধা নামে দুই ব্যক্তি বিল উত্তোলন করে নিয়েছে বলে অভিযোগ এলসিএস কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদকদের।
সরজমিন দেখা যায়, কোনোরমক খনন বা নিষ্কাশনের চিহ্ন নেই খালগুলোর। এক হাত পরিমাণ পানি নেই খালে। পাড়ে দাঁড়ালে দেখা যাচ্ছে খালের তলদেশের মাটি। স্থানীয় মো. হাবিবুর রহমান মৃধা বলেন, খাল তো কাটতে দেখি নাই। শুধু মাছ ধরছে আর কচুরিপানা পরিষ্কার করছে। আবু হানিফ জমাদ্দার বলেন, সরকারিভাবে খালের কোনো স্থান কাটা হয়নি। স্থানীয়রা যারা টাকা দিয়েছে তাদের বাড়ি সামনে দিয়ে ঘণ্টা হিসেবে করে কেটেছে। এলসিএস কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল খান বলেন, জাহাঙ্গীর আমাদের কাজের পার্টনার ছিল। এসব কাজের বিল যৌথ একাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলিত হয়। এজন্য আমার এবং এই কমিটির সভাপতি শিউলী বেগমের যৌথ চেক জাহাঙ্গীরের কাছে ছিল। শুনছি কাজের বিল উত্তোলন করে নিয়েছে সে। কিন্তু আমাদের কোনো স্বাক্ষর নেয়নি। পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি মো. বাবুল মাস্টার এবং সম্পাদক ইউসুফ আলী আকন বলেন, খাল খননের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এলসিএস কমিটির মাধ্যমে জাহাঙ্গীর গাজী এবং বেলাল মৃধা এ করিয়েছে। লোকমুখে শুনেছি ঠিকমতো খাল খনন করা হয়নি। বর্তমানে তারা দু’জন এই সমিতির সভাপতি এবং সম্পাদক। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর গাজী ও বেলাল মৃধার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, এ কাজ যে সময় বাস্তবায়ন হয়েছে তখন আমি ছিলাম না। তবুও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত লোক পাঠিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।